সন্তান এক সময়ে কৌতূহল ও উদ্যমে ভরপুর ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই তার মধ্যে কাজের ক্ষেত্রে অনীহা দেখা দিতে পারে। বাড়িতে পড়াশোনা থেকে শুরু করে ঘরের কাজে সাহায্য করা বা কোনও শখ পূরণ— কিশোরেরা মাঝে মাঝে জীবনের এমন এক পর্যায়ের মধ্য দিয়ে যায় যখন তাদের প্রেরণা কমে যায়। নেপথ্যে থাকে আলস্য।
আরও পড়ুন:
এ রকম সময়ে তাদের বকা বা জোর করে কিছু করানোর বদলে, ধীরে ধীরে তাদের আগ্রহ আবার জাগিয়ে তোলা উচিত। শিশুদের আলস্য সাধারণত ইচ্ছাশক্তির অভাব নয়, বরং একঘেয়েমি, ক্লান্তি বা মানসিক চাপের ইঙ্গিত। ধৈর্য, সহানুভূতি এবং সঠিক উপায় অবলম্বন করলে বাবা-মায়েরা আবার সন্তানকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে পারবেন। কয়েকটি কৌশলের দিকে চোখ রাখা যাক।
১) সন্তানের মধ্যে নানা কারণে আলস্য তৈরি হতে পারে। আগে তার কারণ অনুসন্ধান করা উচিত। তাই দিনের মধ্যে সময় বের করে আগে তাদের সঙ্গে খোলা মনে কথা বলা উচিত। অনেক সময়ে মুখোমুখি কথা বললে সমস্যার গভীরে প্রবেশ করা সম্ভব। তার ফলে সমাধানও নিজে থেকেই বেরিয়ে আসে।
২) দীর্ঘ বা সময়সাপেক্ষ কাজ ছোটদের মধ্যে সহজেই আলস্য তৈরি করে। তাই এই ধরনের কাজগুলিকে ছোট ছোট পর্যায়ে ভেঙে নিতে পারলে সন্তান তার প্রতি আগ্রহ হারাবে না। যেমন তাদের গোটা ঘর পরিষ্কার করতে না বলে শুধু মাত্র পড়ার টেবিলটি গুছিয়ে রাখার কথা বলা যেতে পারে। পরের দিন তাদের ঘরের অন্য একটি কাজের জন্য বলা যেতে পারে।
৩) কোনও কাজের মধ্যে কৌতূহল বা মজা থাকলে ছোটরা তার প্রতি বেশি আকৃষ্ট হয়। তাই কোনও কাজের ক্ষেত্রে যদি মজার ছলে নম্বর দেওয়া বা সময় বেঁধে দেওয়া যায়, তা হলে সেই কাজের প্রতি ছোটরা আরও আকৃষ্ট হবে। পাশাপাশি, বাড়িতে বিভিন্ন ধাঁধাঁ এবং বুদ্ধির খেলার অভ্যাস তৈরি করলেও ছোটদের মন ভাল থাকে।
৪) ছোটদের মত বড়রাও অলস হতে পারে। কিন্তু দিন তো থেমে থাকে না। তাই বাবা-মায়েদের নিজেদের গল্প অনেক সময়ে ছোটদের অনুপ্রাণিত করতে পারে। বড়রা সারা দিন কী ভাবে যাবতীয় কাজ সামলান, তার সম্যক ধারণা অভিভাবকেরা তাদের শোনাতে পারেন। তার ফলে যে কোনও কাজের প্রতি ছোটরা আরও দায়িত্বশীল হয়ে উঠবে।
৫) ছোটরা প্রশংসিত হতে পছন্দ করে। তাই নির্দেশ মতো পড়াশোনা, খেলাধুলো বা কোনও কাজ সম্পূর্ণ করলে অভিভাবকদের উচিত তাদের প্রাণ খুলে প্রশংসা করা। তার ফলে পরবর্তী সময়ে তারা একই কাজ করার ক্ষেত্রে আগ্রহী হবে এবং তাদের মধ্যে আগ্রহের কমতি থাকবে না। পাশাপাশি আলিঙ্গন, কখনও তাদের টিভিতে তাদের পছন্দের অনুষ্ঠান দেখার অনুমতি— নানা ধরনের ‘পুরস্কার’ও ছোটদের অলস মনোভাব দূর করতে সাহায্য করে।