গরমের সময় এলেই পোষ্যদের অস্থিরতা বাড়ে। বিশেষ করে যাদের গায়ে লোমের আধিক্য রয়েছে, তাঁদের গরমে কষ্ট বেশি হয়। নানা শারীরিক সমস্যাও দেখা দেয়। মানুষের মতো পোষা কুকুরেরও কিন্তু হিট স্ট্রোক হতে পারে। তাই কেবল শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে রাখলেই হবে না, এই সময়ে ওদের যত্নও ঠিকমতো নিতে হবে। গরমে পোষ্যের কী কী সমস্যা হতে পারে, তা জানা নেই অনেকেরই। পশুরোগ চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, হিট স্ট্রোক থেকে চর্মরোগ— নানা শারীরিক সমস্যায় ভোগে পোষা কুকুরেরা। তাই সঠিক সময়ে তাদের চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়াও জরুরি। কোন কোন লক্ষণ চিনে সতর্ক হতে হবে, তা জেনে রাখুন পোষ্যের অভিভাবকেরা।
হিট স্ট্রেস
গরমের দিনে শরীরে ‘অক্সিডেটিভ স্ট্রেস’ বাড়ে পোষা কুকুরদের। যদি জল কম খায়, বেশি ক্ষণ রোদে থাকে, তা হলে শরীরের ভিতরে প্রদাহ শুরু হয়। শ্বাসকষ্টও হতে পারে। পোষ্য ঝিমিয়ে পড়বে, খেতে চাইবে না। এমন লক্ষণ দেখলে বুঝতে হবে, হিট স্ট্রেস হচ্ছে পোষ্যের। সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে ভাল।
হিট স্ট্রোক
বাইরের তাপমাত্রা যদি ৪০ ডিগ্রির কাছাকাছি থাকে, তা হলে পোষ্যকে ঠান্ডা ঘরে রাখাই দরকার। অথবা এমন জায়গায় রাখতে হবে যেখানে রোদ কম আসে। বারে বারে জল খাওয়াতে হবে, না হলেই হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়বে। হিট স্ট্রোক হলে পোষ্যের বমি শুরু হবে, ডায়েরিয়া হতে পারে, প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট শুরু হতে পারে। পোষ্যের মাড়ি ফুলে লাল হয়ে যাবে, হৃৎস্পন্দনের হার বেড়ে যাবে, খিঁচুনিও হতে পারে।
আরও পড়ুন:
চর্মরোগ
সূর্যের অতিবেগনি রশ্মি প্রভাবে ত্বকে অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে পোষ্য কুকুরের। র্যাশ, চুলকানি, ফোস্কা পড়তে পারে ত্বকে। এমন সমস্যা হলে নিজেরা কোনও ওষুধ না খাইয়ে বরং চিকিৎসকের কাছে যাওয়া জরুরি।
কী ভাবে যত্ন নেবেন পোষ্যের?
পোষ্যকে ভাল করে স্নান করাতে হবে নিয়মিত। প্রয়োজনে দিনে একাধিক বার স্নান করানো যেতে পারে।
গরমে পোষ্যের খাওয়াদাওয়ার উপর বাড়তি নজর দিতে হবে। যে সব ফলে জল বেশি, তা বেশি করে খেতে দিন। তরমুজ, আপেলের মতো ফল খাওয়ান। পোষ্যের প্রজাতি ও ওজন দেখেই তার খাওয়াদাওয়া ঠিক করতে হয়। কোন প্রজাতির কুকুরের ডায়েট কেমন, তা না জেনেই খাওয়াতে থাকেন অভিভাবকেরা।
কোনও রকম প্রক্রিয়াজাত খাবার বা প্যাকেটের খাবার না দেওয়াই ভাল। চকোলেট, মিষ্টি জাতীয় কিছু দেওয়া চলবে না। আপনি নিজে যা খান, তা পোষ্যকে খাওয়াবেন না। মাছ বা চিকেন সেদ্ধ করে দিতে হবে। কোনও রকম তেলেভাজা খাবার পোষ্যকে দেবেন না।
দিনের বেলা বাইরে প্রচণ্ড রোদ। তাই বাড়ির বাইরে কম ঘোরাতে নিয়ে যান। চেষ্টা করুন বাড়িতেই অল্প খেলাধুলো করাতে। সন্ধ্যার দিকে হাঁটতে নিয়ে যাওয়া ভাল।
প্রতি ২ থেকে ৩ সপ্তাহ অন্তর পোষ্যের নিয়মমাফিক কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো জরুরি।