Advertisement
E-Paper

আশা-ওয়াহিদা-হেলেন শ্রীনগরে ছুটির মেজাজে, দীর্ঘ দিনের বন্ধুদের সঙ্গে ছুটি কাটানো কেন স্বাস্থ্যকর?

দীর্ঘ দিনের বন্ধুদের সঙ্গে লম্বা ছুটি কাটালে কি অনেকটাই কমে মনের চাপ? লঘু হয় জীবনের সমস্যার গুরুভার?

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪ ১৯:৩৯
শ্রীনগরে ছুটির মেজাজে আশা-ওয়াহিদা-হেলেন

শ্রীনগরে ছুটির মেজাজে আশা-ওয়াহিদা-হেলেন ছবি: ইনস্টাগ্রাম

সম্প্রতি, ছুটির মেজাজে শ্রীনগরে দেখা গিয়েছে তিন প্রবীণ তারকা আশা পারেখ, ওয়াহিদা রেহমান আর হেলেনকে। দীর্ঘ দিনের কর্মজীবনের যোগাযোগের সূত্রে তাঁদের সম্পর্ক যে পেরিয়েছে বহু কাল, সে তো বলাই বাহুল্য। দীর্ঘ দিনের বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটালে কি কমে মনের চাপ?

এই দশটা–পাঁচটার জীবনে ছুটির ফুরসত পাওয়া যায় কতটুকু? ছুটির নাম নিলেই বসের রক্তচক্ষু, হাজার দরখাস্ত, ছেলের টিউশন, মেয়ের পরীক্ষা— সব সামলে যেই অনেক কষ্টে একটু ছুটি পাওয়া গেল, আপনি সুযোগ বুঝে একটা ভ্রমণ-পরিকল্পনা করে ফেললেন। সঙ্গী জুটল কখনও অফিস কলিগ বা মেয়ের ‘বেস্ট ফ্রেন্ড’-এর পরিবার। কিন্তু ঘুরতে গিয়ে দেখা গেল, যে অফিস কলিগের সঙ্গে রোজ দিব্য চা-সিগারেট খান, দুপুরের খাবার খান, আড্ডা মারেন, একসঙ্গে ঘুরতে গিয়ে তার সঙ্গে ঠিক যুত হল না। মেয়ের স্কুলের বন্ধুর মায়ের সঙ্গে কিটি পার্টি ঠিকই আছে, কিন্তু দিনরাত একসঙ্গে ওঠা–বসা–খাওয়া–ঘোরা ঠিক জমল না। এত কষ্ট করে পাওয়া ছুটিটাও মাটি হল আর সেই সঙ্গে এত খরচ করে ঘুরতে যাওয়ারও কোন মানে হল না। তখনই সেই কলেজবেলার বন্ধু বা সেই পাড়ার বন্ধুর জন্য মন কাঁদে আপনার।

শহরের এক বেসরকারি সংস্থার কর্মী কুণালের মতে, “পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার থেকে ভাল কিছু হতেই পারে না। জীবনে অনেক বন্ধু হয়, হয়েছে, কিন্তু যারা তোমাকে সবটা জানে, যাদের কাছে কোন আড়াল নেই, তাদের সঙ্গে বেড়াতে যাওয়ার স্বাদই আলাদা।”

দীর্ঘ দিনের বন্ধুদের সাথে ঘুরতে গেলে কমে মানসিক চাপ।

দীর্ঘ দিনের বন্ধুদের সাথে ঘুরতে গেলে কমে মানসিক চাপ। ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ দিনের বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে যাওয়ার আছে নানা দিক।

১) তাঁরা আপনার দীর্ঘ দিনের বন্ধু, অর্থাৎ তাঁরা আপনার প্রতি সেই সম্মান–ভালবাসা দেখিয়ে এসেছেন, পাশে থেকেছে আপনার কঠিন মুহূর্তে, নানা ওঠা–পড়ায়, তাই আপনার জীবনে যা-ই চলুক, সেই সমস্যা ভুলতে আপনি বেরিয়ে পড়তে পারেন এই বন্ধুদের হাত ধরে। তাঁরা আপনাকে তো বুঝবেনই, সঙ্গে সমাধান পেতে পারেন জীবনের নানা সমস্যার।

২) তাঁরা যে হেতু আপনার বন্ধু, তাই মনে করা যেতে পারে, তাঁরা আপনার সমবয়সি বা কাছাকাছি বয়সের মানুষ। তাই, আপনি জীবনে যে সব সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন, তাঁরাও হয় সে সব সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন বা সে সব সমস্যা পেরিয়ে এসেছেন। তাই, যুতসই পরামর্শ পেতে কাছের বন্ধুদের কোনও তুলনা নেই। আর দূরে গিয়ে অনেকটা সময় একসঙ্গে কাটালে পাওয়া যায় সে সব সমস্যা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার সুযোগও।

৩) যে হেতু আপনার বহু পুরনো বন্ধু, তাই এমন মনে করা যেতেই পারে, তাঁদের সঙ্গে রয়েছে আপনার বহু সুখস্মৃতি। বন্ধুরা একসঙ্গে ঘুরতে চলে গেলে, কথায়–কথায় সে সব স্মৃতি উঠে আসবেই। একসঙ্গে পুরনো গল্প করতে করতে ফিরে যাবেন সেই পুরনো সময়ে। মনের চাপ এমনিই কম বোধ হবে।

৪) এঁরা যে হেতু আপনার বহু পুরনো বন্ধু, তাই কোনও রকম ভান বা অভিনয়ের আশ্রয় নেওয়ার প্রয়োজনই হবে না, থাকবে না সামাজিক বিধির সতর্কতা, খোলামেলা ভাবে আনন্দে কাটবে আপনার ফুরফুরে ছুটির ক’টি দিন।

বেঙ্গালুরুতে কর্মরত সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষক-গবেষক ঝুমুর দে-র মতে, “বিভিন্ন সামাজিক পরীক্ষানিরীক্ষায় রীতিমতো দেখা গিয়েছে যে, একই মানসিক চাপের মধ্যে মানুষ যদি কাছের বন্ধুদের সঙ্গে থাকেন, তা হলে তিনি মানসিক চাপ কম অনুভব করেন, এবং সমস্যার সম্মুখীন হয়ে তার সঙ্গে লড়াই করার জোর তার বেশি হয়।”

আপনারও কি মনটা হু-হু করে উঠল সেই কাছের বন্ধুর কথা ভেবে? তা হলে আর দেরি কিসের? বসের কাছে একটা ছুটির দরখাস্ত করেই ফেলুন। তার পর জমিয়ে পরিকল্পনা হোক বন্ধুদের গ্রুপে। দু’দিনের ছোট্ট ছুটি হোক বা এক সপ্তাহের লম্বা ভ্রমণ — ফেরার পর মনের বয়স এক কুড়ি কম হলেও হতে পারে।

Relationship Tips friendship Trip travel
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy