বাইরে বেরোলেই খুদে খেলনা কেনার বায়না ধরে? কী ভাবে ছোট থেকে সঞ্চয়ী হতে শেখাবেন তাকে

ছোটদের টাকাপয়সা নিয়ে ভাবতে শেখানোর চল বাঙালি বাড়িতে বিশেষ নেই। টাকা দিলেও খুব বেশি পরিমাণে কখনওই দেওয়া হয় না তাদের হাতে। অনেক শিশুই বাজারে গেলে এটা চাই-ওটা চাই বলে বায়না ধরে। আর সঙ্গে সঙ্গে তাকে তার পছন্দের জিনিসটি কিনে না দিলেই মুখ একেবারে ফুলে যায়। টাকাপয়সা জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিবেচনা করে ব্যবহার না করলে মাসের শেষে আফসোস করা ছাড়া উপায় থাকে না। বাবামায়েরা খুদেকে যদি আয়-ব্যয়ের বিষয়ে কম বয়স থেকেই একটু করে সচেতন করেন, তবে তাদের পরবর্তী জীবনে চলার পথটা অনেক সহজ হবে।

আগেকার দিনে যৌথ পরিবারে বড়রাই সংসারের ঝক্কি সামলাতেন, ছোটদের সেই বিষয়ে খুব বেশি মাথা ঘামানোর প্রয়োজন পড়ত না। তবে এখন বাবা-মা-সন্তানের ছোট সংসার। কখনও বা আরও ছোট। হয় বাবা, নয় মায়ের সঙ্গেই থাকে শিশুরা। সে ক্ষেত্রে বাড়ির অনেক দায়িত্বই ছোটবেলা থেকে নিতে হয়। তবে দায়িত্ব দেওয়ার আগে দিতে হবে প্রশিক্ষণ। টাকাপয়সা সামলানোর ক্ষেত্রেও এগোতে হবে ধাপে ধাপে। শুধু খরচ করাই নয়, সঞ্চয় করাও শেখাতে হবে তাদের। কী ভাবে ছোট থেকে সন্তানকে সঞ্চয় করতে শেখাবেন?

১) সামান্য অর্থ সামলে রাখতেও দায়িত্ববোধ প্রয়োজন। ফলে ছোট থেকেই অল্প করে টাকার দায়িত্ব দিন সন্তানকে। খুদেকে প্রথমে বাড়িতেই বাজার করতে শেখান খেলার ছলে। তার পর তাকে অল্প টাকা দিয়ে কাছের দোকান থেকে টুকিটাকি জিনিস কিনে আনতে বলতে পারেন।

২) খুদেরা অনেক সময়ই খেলনা কেনার আবদার করে বাড়ির বড়দের কাছে। সঙ্গে সঙ্গে ওর আবদার পূরণ না করে, ওর হাতে অল্প অল্প করে টাকা দিয়ে জমা করে রাখতে বলুন। খেলনা কেনার জন্য নির্দিষ্ট অর্থ জমা হয়ে গেলে সেই টাকা দিয়ে ওকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েই জিনিসটি কিনে আনুন। এ ভাবে খুদে সঞ্চয়ের অর্থ বুঝতে শিখবে।

৩) ছ’-সাত বছর বয়স থেকেই অল্প করে হাতখরচ দিন শিশুকে। তাতে বুদ্ধি খরচ করে অর্থ ব্যয় করতে শিখবে সে। টাকা জমানোর কৌটো কিনে দিন তাকে। তাতে কিছু টাকা রাখতে ইচ্ছা করবেই। শিশুর নামে ছোট থেকেই একটি সেভিংস অ্যাকউন্ট খুলে দিন। সে বিষয়ে সন্তানকেও জানিয়ে রাখুন। বাড়িতে কোনও অতিথি এলে কিংবা কোনও উৎসব-অনুষ্ঠানে বড়দের কাছ থেকে তারা যে টাকা পায়, সেটা ব্যাঙ্কেই জমা করে রাখুন। ব্যাঙ্কে যাওয়ার সময় ওদেরও সঙ্গে নিয়ে যান, তা হলে ছোট থেকেই ওদের মধ্যে সঞ্চয়ের প্রবণতা তৈরি হবে।