বাড়ির নতুন সদস্য হয়েছে মার্জার। এমনিতে তার দস্যিপনার শেষ নেই। দিনরাত পায়ে পায়ে ঘুরঘুর করা, ডাকাডাকি, মাঝেমধ্যে ঘুম, এ সব নিয়ে ভালই চলছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই আচরণে বদল। ঠিকমতো খায় না, একলা ঝিমিয়ে থাকে।
এই সব যেমন শরীর খারাপের জন্য হতে পারে, তেমনই তা কিন্তু অবসাদেরও লক্ষণ হতে পারে। মানুষের মতো অল্প-বিস্তর মনখারাপ হয় বিড়ালেরও। কিন্তু কোন মনখারাপ সাধারণ বা স্বাভাবিক আর কোনটি হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া দরকার, বুঝবেন কী ভাবে?
ডাক: পোষ্যের অভিভাবকেরা তার ডাকের অর্থ বোঝেন। আদরে তার গলার স্বর এক রকম, রেগে গেলে আর এক রকম। আচমকাই যদি সেই ডাকে বদল হয়, মনে হয় অল্পেই বিরক্ত হচ্ছে বা রেগে যাচ্ছে অথবা কোনও অস্বাভাবিকত্ব রয়েছে, তা হলে তাকে নজরে রাখা দরকার।
আরও পড়ুন:
আচরণ: বেড়াল খুব পরিচ্ছন্ন প্রাণী। তার চলাফেরা সম্পর্কে সচেতন। এমনকি, মল-মূত্র ত্যাগের জায়গা নিয়েও বেড়ালের খুঁতখুতানি থাকে। যদি দেখা যায় মল, মূত্র ত্যাগের নির্দিষ্ট পাত্র বা স্থানটি সে দিনের পর দিন এড়িয়ে চলছে, তার দিকে সতর্ক দৃষ্টি দেওয়া দরকার। স্থানটি অপরিচ্ছন্ন বা কোলাহলমুখর হলে পোষ্য এড়িয়ে যেতেই পারে। তবে তেমন কোনও কারণ ছাড়া হঠাৎ করে নির্দিষ্ট জায়গা থেকে সরে গেলে বা যেখানে সেখানে মল-মূত্র ত্যাগ করলে তার আচরণ নজরে রাখা প্রয়োজন।
চুপচাপ: আগে যে মার্জার পায়ে পায়ে ঘুরত, বাড়ির লোককে ফিরতে দেখলে আনন্দের বহিঃপ্রকাশ থাকত, সে কি এখন একটু বেশি চুপচাপ? এক, দু’দিন বা সপ্তাহখানেক এমনটা হলে এক রকম। যদি তার চেয়েও বেশি দিন তা চলতে থাকে, সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। শারীরিক না মানসিক— কোন সমস্যা থেকে বিড়াল এমনটা করছে বোঝা দরকার।
খাওয়া-ঘুম: অতিরিক্ত বা কম ঘুম— দু'টি দিনের পর দিন চললে স্বাভাবিকতা থাকে না। অবসাদের কারণে পোষ্য বেশি ঘুমোতে পারে। এই দিকেও নজর দিতে হবে। খাওয়ার বিষয়টি দিয়েও অনেক কিছু বোঝা যায়। স্বাভাবিক খাওয়ায় রুচি হারালে কারণ অনুসন্ধান করা দরকার।
আঁচড়ানো: মার্জার আসবাবে আঁচড় কাটে। কিন্তু তা খুব বেশি করলে সতর্ক হতে হবে। উদ্বেগের কারণে আচরণে বদল আসতে পারে।
কী করণীয়?
লম্বা সময় ধরে পোষ্যের আচরণে বদল চোখে পড়লে তার দিকে বাড়তি নজর দেওয়া প্রয়োজন। দেখতে হবে, খাওয়া থেকে ঘুমে অসুবিধা হচ্ছে কি না। মনিবের সান্নিধ্যও সে আশা করে। এতে খামতি হচ্ছে কি না, দেখতে হবে। যদি মনে হয়, কারণ বোঝা যাচ্ছে না, অবশ্যই পশুরোগ চিকিৎসকের দ্বারস্থ হওয়া দরকার।