ছুটির দিনটিতে সন্তান কী করে? সারা দিন খেলার জন্য রেখে না দেওয়াই ভাল। আবার ছুটি মানেই দিনভর মোবাইল হাতে দেওয়াও কাজের কথা নয়। বরং সারা দিনের সময়টাকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে দিন। একটি সময় থাকবে পড়াশোনার জন্য, একটি সময় থাকবে শুধু খেলার জন্য। তা ছাড়া শরীরচর্চা, গল্পের বই পড়া, ছবি আঁকার মতো সৃজনশীল কাজের জন্যও ভাগ করে নিতে হবে সময়। দিনের কখন কোন কাজটি করালে ভাল, তা জেনে নিন বাবা-মায়েরা।
সকাল থাকুক পড়ার জন্য
শিশু যদি ভোরের দিকে উঠতে পারে তা হলে ভাল। না হলে ঘুম থেকে ওঠার পরে ১০ মিনিট মেডিটেশন বা ধ্যানের জন্য রাখুন। এতে মন স্থির হবে। এর পর জলখাবার খেয়ে অন্তত ১ ঘণ্টা পড়াশোনার জন্য রাখা ভাল। সকালের দিকটা অঙ্ক কষার জন্যও ভাল সময়। শিশুর যে বিষয়টা নিয়ে ভীতি বেশি, সেটিই সকালের জন্য রেখে দিন।
খেলার জন্য দিন আরও এক ঘণ্টা
পড়াশোনা শেষ হলেই মোবাইল দেবেন না। পেরেন্টিং কনসালট্যান্ট পারমিতা মুখোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, আধ ঘণ্টার মতো সময় দিন ছবি আঁকার জন্য। এর পরে নানা রকম খেলা খেলাতে পারেন শিশুকে। অবশ্যই পড়াশোনায় সহায়ক হবে এমন খেলাই ভাল।
দুপুরে ভাতঘুম নয়
রাতে পর্যাপ্ত ঘুম হলে আর দিবানিদ্রার প্রয়োজন পড়ে না। বরং ওই সময়ে নানা কাজে ব্যস্ত রাখুন খুদেকে। খেয়ে উঠে প্রথম কাজ হাঁটাহাঁটি করা। ঘরের ভিতরে, বাড়ির উঠোনে, ছাদে— যে কোনও জায়গায় হাঁটতে পারে। এতে হজমশক্তি আরও ভাল হবে। দুপুরে গল্পের বই পড়ানোর অভ্যাস করান শিশুকে। তা না হলে ছবি আঁকতে পারে। মোবাইল, ট্যাব বা কোনও রকম বৈদ্যুতিন ডিভাইসে চোখ না রেখে বরং সৃজনশীল কাজের অভ্যাস করাতে পারলে ভাল হয়।
আরও পড়ুন:
বিকেল হোক শরীরচর্চা
বিকেলের দিকে শরীরচর্চা বা পার্কে গিয়ে হাঁটা, স্পট জগিং করতে পারলে ভাল। এতে শরীরের ক্লান্তি দূর হবে, আলস্যও কাটবে। যদি বাইরে গিয়ে খেলার সুযোগ না থাকে, তা হলে বাড়িতেই নানা যোগাসন অভ্যাস করাতে পারেন।
ছুটির দিনে খাওয়াদাওয়াও জরুরি
সন্ধ্যায় পড়াশোনার ফাঁকে স্বাস্থ্যকর স্ন্যাক্সও জরুরি। ওই সময়ে খিদে পেলে ছোটরা ভাজাভুজি বা মিষ্টি জাতীয় কিছু খেতে চায়। তা না দিয়ে, বরং রোস্টেড মাখানা, ছোলা-মটরের চাট, সব্জি দিয়ে স্ন্যান্ডউইচ বা কলার স্মুদি বানিয়ে দিতে পারেন। শিশুর হাতের কাছে ড্রাই ফ্রুট্স রেখে দিন, এতে তার চিপস বা চানাচুর খাওয়ার ইচ্ছা চলে যাবে।
গল্প বলা
শোয়ার আগে কিছুটা সময় থাক গল্প বলার জন্য। অভিনয় করে গল্প বললে ওরা আগ্রহী হবে। গল্পের মাঝেই ওকে প্রশ্ন করার সুযোগ দিতে হবে। এতে খুদে শ্রোতাটির ধৈর্য ধরে শোনার প্রবণতাও তৈরি হয়। মনোযোগ বৃদ্ধি করতে গল্প শোনানোর ভূমিকা বিরাট। সে গল্প শুনছে কি না, তা বুঝতে আপনিও পরে গল্পের মধ্যে থেকে প্রশ্ন করে যাচাই করে নিতে পারেন।