দুপুরে খাওয়া শেষ হল কি হল না, চোখ ঘুমে ঢুলে আসে? দুপুর ১টার পর থেকে সিটে বসেই ঢুলতে থাকেন। প্রচণ্ড ক্লান্তিতে কাজ করার ইচ্ছাই হয় না, ভুলভ্রান্তিও হতে থাকে। ঘুম কাটাতে ঘন ঘন চায়ের কাপে চুমুক দিলে বা ধূমপানে সাময়িক স্বস্তি মিললেও, কিছু ক্ষণ পরে আবার যে কে সেই অবস্থা। বেশির ভাগ বাঙালি বাড়িতে দুপুরে খেয়ে একটু জিরিয়ে নেওয়ার অভ্যাস আছেই। মা-ঠাকুরমারা খাওয়ার পরে ছোটদের খানিক ঘুমিয়ে নিতেই বলতেন। কিন্তু অফিসে বা কাজের জায়গায় তা সম্ভব নয়। তাই সে ক্ষেত্রে ছোট্ট বিরতিতে ১০ মিনিটের ঘুমই যথেষ্ট।
পাওয়ার ন্যাপ কথাটা খুবই পরিচিত। ঠিক গভীর ঘুম বলা যায় না, তবে ১০ থেকে ২০ মিনিট চোখ বন্ধ করে মস্তিষ্ককে বিশ্রাম দেওয়া যায়। কাজের মাঝের ছোট্ট একটা ন্যাপই শক্তি বহু গুণে বাড়িয়ে দেয়। চিন্তাভাবনা স্বচ্ছ হয়, দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা জন্মায়, এমনকি মনঃসংযোগ আরও বাড়ে।
অনেকেই ভাববেন, অফিসে বসে কি আর ঘুমোনো যায়? তা দেখতেও শোভনও লাগে না। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণায় বলা হচ্ছে, নাক ডেকে ঘুম নয়, ১০ থেকে ২০ মিনিটের ‘পাওয়ার ন্যাপ’ সব ক্লান্তি দূর করবে। নতুন করে কাজে উৎসাহ পাওয়া যাবে। যে কাজটি দীর্ঘ সময় ধরে করতে পারছেন না, খানিক বিশ্রাম নিলে তারই সমাধানসূত্র বেরিয়ে আসবে আপনারই মস্তিষ্ক থেকে।
আরও পড়ুন:
পাওয়ার ন্যাপ কেন ভাল?
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থের গবেষণা বলছে, স্বল্প সময়ের ঘুম মস্তিষ্কের হিপ্পোক্যাম্পাস অংশের সক্রিয়তা বাড়ায়। ফলে যেমন স্মৃতিশক্তি উন্নত হয়, তেমনই একাগ্রতা বাড়ে।
৩০ মিনিট বা তার বেশি ন্যাপ নিলে মস্তিষ্কের ‘মোটর স্কিল’ উন্নত হয়। এনার্জি ও স্নায়ুর কর্মক্ষমতা বাড়ে এই স্তরে।
১০ থেকে ৩০ মিনিটের ন্যাপে মানসিক চাপ কমে, ফ্যাট মেটাবলিজম বাড়ে। অপ্রয়োজনীয় স্মৃতি মুছে গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য নিয়ে কাজ করে মস্তিষ্ক।
ঘটনা, চেহারা ও নাম মনে রাখার জন্য এই সময়সীমার ন্যাপ সবচেয়ে উপকারী।
স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ কমে পাওয়ার ন্যাপে। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, অফিসে বসে ৩০ মিনিট ন্যাপ নেওয়া সম্ভব না-ও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ১০-১৫ মিনিটের ন্যাপেই কাজের গতি বাড়বে, শরীর ও মন চাঙ্গা হয়ে উঠবে। যাঁরা অনিদ্রা ও ‘স্লিপ ডিজ়অর্ডার’-এর সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের জন্য পাওয়ার ন্যাপ খুবই উপকারী।