বাতাসে হিমের পরশ লেগেছে। পারদ পতন শুরু হয়েছে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামী কয়েক দিনে তাপমাত্রা আরও কমবে। কাজেই ছোটদের শরীরস্বাস্থ্য নিয়ে এখন থেকেই চিন্তায় রয়েছেন মা-বাবারা। যাদের ঠান্ডা লাগার ধাত, তাদের অনেক বেশি সাবধানে রাখতে হবে। বিশেষ করে এই সময়ে শিশুদের স্নান করানো নিয়ে আশঙ্কায় থাকেন অনেক অভিভাবকই। তার মধ্যে শিশু যদি সর্দি-কাশিতে ভোগে, তা হলে তো কথাই নেই। স্নান করাবেন না বাদ দেবেন, তা নিয়ে চিন্তা থাকেই।
শীতের সময়ে তাপমাত্রা যতই নামুক, শিশুর স্নান বাদ না দেওয়ারই পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। এই বিষয়ে শিশুরোগ চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কর পাল জানাচ্ছেন, ঠান্ডার সময়ে বাতাসে আর্দ্রতা কমে। ফলে ত্বক শুষ্ক হয়। ছোটদের ত্বক খুবই স্পর্শকাতর। এই সময়ে ওদের নরম চামড়াতেও টান ধরে। তাই ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে স্নান করাতেই হবে। শিশুর যদি খুব বেশি ঠান্ডা লাগার ধাত থাকে বা অ্যালার্জি জনিত সমস্যা থাকে, তা হলে উষ্ণ জলে কাপড় ভিজিয়ে গা স্পঞ্জ করানোও যেতে পারে। তবে সবই করতে হবে হাতে সময় নিয়ে। খুব বেলায় যদি শিশুকে স্নান করান, তা হলে ঠান্ডা লেগে যাওয়ার আশঙ্কা থাকবে।
স্নানের সঠিক সময়
খুব ভোরে নয়, আবার বেশি বেলাতেও নয়। সকাল ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে স্নান করাতে পারলে ভাল হয়। এখন সকালের দিকে ঠান্ডা হাওয়া বইছে। তাই ওই সময়ে স্নান না করানোই ভাল। বেলা ১১টার পর রোদ উঠলে ঈষদুষ্ণ জলে স্নান করান শিশুকে। যদি কুয়াশা বা খুব মেঘলা দিন হয়, তা হলে উষ্ণ জলে গা স্পঞ্জ করাতে পারেন।
আরও পড়ুন:
নিয়ম মানুন
খুব ঠান্ডা বা অতিরিক্ত গরম জলে স্নান করাবেন না। ঈষদুষ্ণ জলে স্নান করাতে হবে শিশুকে।
স্নানের পরেই তোয়ালে দিয়ে মুড়ে দিন শিশুকে। ঠান্ডা হাওয়া যেন না লাগে গায়ে। ভাল করে মুছিয়ে পোশাক পরাতে হবে।
শীতে স্নানের সময় পাঁচ থেকে সাত মিনিটের বেশি হওয়া উচিত নয়। এর চেয়ে বেশি জলে রাখবেন না শিশুকে।
স্নানের সময়ে গ্লিসারিনযুক্ত সাবান ব্যবহার করুন। রোজ শ্যাম্পু করানোর প্রয়োজন নেই।
স্নানের পরে গরম পোশাক, মোজা, টুপি পরিয়ে দিন শিশুকে। কিছু ক্ষণ রোদে রাখতে পারলে ভাল হয়।
শিশু নিউমোনিয়া বা ব্রঙ্কাল কোনও অসুখ নিয়ে জন্মালে বা সময়ের আগেই জন্ম নিলে সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
ত্বকের যত্ন
স্নানের আগে ও পরে ত্বকের যত্ন নেওয়াও প্রয়োজন। স্নানের আগে নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল মালিশ করতে পারেন। স্নানের পরে ময়েশ্চারাইজ়ার মাখাতেই হবে শিশুকে।
শীতের সময়ে ত্বক বাঁচাতে স্নানের পর অ্যালো ভেরা, দুধ ও মধু মিশিয়ে মাখাতে পারেন। এটিও ময়েশ্চারাইজ়ারের মতোই কাজ করবে। তবে আগে দেখে নেবেন, অ্যালো ভেরায় শিশুর অ্যালার্জি হচ্ছে কি না।
ছোটদেরও সানস্ক্রিন মাখানো জরুরি। ছোটরা বাইরে বেশি ক্ষণ খেলাধুলো করলে সান ট্যান, সান বার্ন, অ্যালার্জির মতো সমস্যা দেখা যায়। বাইরে বেরোলে সানস্ক্রিন তাই আবশ্যিক। ছোটদের ক্ষেত্রে এসপিএফ ২০ বা ৩০ হলেই যথেষ্ট।