বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শিশুর বুদ্ধিমত্তায় বদল আসে। ধীরে ধীরে নানা রকম অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে থাকে সে। শিক্ষা শুধু পাঠ্য বই এবং স্কুলেই সীমিত নয়। বরং দৈনন্দিন সম্পর্ক, বাড়ির মানুষ, খেলার মাধ্যমেও শেখে সে। শুধু বুদ্ধি নয়, সন্তানের শারীরিক এবং মানসিক বিকাশেও সাহায্য করে বিভিন্ন রকম খেলা।
বিশ্ব জুড়েই শিশুদের স্বাস্থ্য এবং সঠিক বিকাশের লক্ষ্যে কাজ করে আন্তর্জাতিক সংস্থা ইউনিসেফ। তাদেরই ওয়েবসাইট বলছে, বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কোন খেলা শিশুকে আনন্দ দিতে পারে এবং শিক্ষাও দেয়।
এক বছরের নীচে:
সন্তান যখন খুব ছোট থাকে, তার সামনে হাত দিয়ে মুখ ঢেকে ‘টুকি’ করেন অভিভাবকেরা। তা দেখেই খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে খুদে। বিষয়টি খুব সাধারণ। তবে এর মাধ্যমেও শিশুর বিকাশ হয়। এক বছরের কম বয়সি শিশুকেও এই খেলা শেখানো যায়। এতে সে বুঝতে পারে, কোনও জিনিস আড়ালে চলে গেলে বা দেখতে না পেলেও, শব্দ শোনা না গেলেও সেই জিনিসটি কিন্তু থাকে।
১-২ বছর: এক বছরের শিশু বাবা-মাকে চিনতে শিখে যায়। শব্দও বুঝতে পারে সে। এটা-ওটা টানাটানিও করে। এই বয়সের শিশুর কাছে কিছু বাসনপত্র দিন, সঙ্গে দিন চামচ। অবশ্যই যেন বাসনগুলি ধারালো না হয়, যাতে শিশুর ক্ষতি হবে। কাঠের বা স্টিলের বাটি, চামচ, গ্লাস দিতে পারেন। এ বার চামচ দিয়ে এতে শব্দ করে শোনান। শিশুকেও নিজে থেকে খেলতে দিন। নতুন নতুন শব্দের সঙ্গে পরিচিত হবে সে। বিকাশ হবে মস্তিষ্কের। একই সঙ্গে, খেলতে খেলতে জিনিস ধরার ক্ষমতা বাড়বে তার, শ্রবণক্ষমতাও বৃদ্ধি পাবে।
আরও পড়ুন:
৩-৪ বছর: এই বয়সের ছেলেমেয়েরা হাঁটতে, কথা বলতে শিখে যায়। নতুন জিনিসের প্রতিও তাদের আগ্রহ তৈরি হয়। শিশুদের রকমারি পোশাক পরায় উৎসাহ দিতে পারেন। একসঙ্গে কয়েক জন মিলে নানা রকম সাজের এই খেলাটি খেললে তারা শুধু আনন্দই পাবে না, পোশাকের বৈচিত্র বুঝতে শিখবে। এক এক জনকে এক এক রকম রাজ্যের পোশাকে সাজাতে পারেন। এতে তাদের মধ্যে শেখার পাশাপাশি আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে।
৪-এর বেশি বয়স: এই বয়সের শিশুদের এক গামলা জল দিয়ে দৈনন্দিন খেলনাগুলি তাতে ডুবিয়ে দিতে বলুন। বিশেষত গরমের দিনে বা বর্ষায় জল নিয়ে খেলতে ভীষণ আনন্দ পাবে তারা। ভিজে খেলনাগুলি কী ভাবে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছে রাখতে হয় শিখিয়ে সেটি করতে বলুন। খুব সাধারণ বিষয় থেকেই খুদেরা জিনিসপত্র পরিষ্কার করে মুছে তুলে রাখার পদ্ধতি শিখবে। তবে সাবধান, কোনটি জলে ডোবানো যায়, কোনটি ডুবিয়ে দিলে জিনিসটি খারাপ হয়ে যায়, সেটিও কৌশলেই শেখাতে হবে তাদের। এতে দামি জিনিস জলে ফেলে দেওয়া বা ডুবিয়ে দেওয়ার প্রবণতা কমবে।
৫ বছরের বেশি বয়সিদের খেলা: বিভিন্ন রকম আকারের ব্লক তাদের খেলতে দিন। কিংবা রঙিন কাগজ দিয়ে চতুর্ভুজ, ষড়ভুজ, ত্রিভুজ বানিয়ে দিন। একটি ছোট আয়না দিয়ে তার সামনে সেগুলি সাজাতে বলুন। আয়নায় প্রতিবিম্ব দেখে তাদের কৌতূহল বাড়বে। সেই আকার দিয়ে গাছ, দৃশ্যাবলি বানাতে শেখান। এতে শিশুর বৌদ্ধিক বিকাশ হবে।