কমলালেবু না খেলে যেমন শীতের আমেজ পাওয়া যায় না, তেমনই বড়দিন বা নতুন বছরে কেক না খেলে উদ্যাপন সম্পূর্ণ হয় না। তবে বন্ধুদের সঙ্গে খেতে গেলে শুধু কেক, পেস্ট্রিতে শেষ হবে না। খানার সঙ্গে একটু আধটু 'পিনা'র ব্যবস্থাও থাকতে হবে। উৎসব উপলক্ষে শহরের সঙ্গে সেজে উঠছে বেশ কিছু রেস্তরাঁও। বন্ধুদের সঙ্গে কোথায় যাবেন, পরিবারের সঙ্গেই বা কোথায় খাবেন, রইল তার সুলুকসন্ধান।
চৌধুরী অ্যান্ড কোম্পানির বাঙালি খাবারে পাবেন একটু টুইস্ট।
চৌধুরী অ্যান্ড কোম্পানি
বড়দিনে একটু অন্য ধাঁচের বাঙালি খাবার চেখে দেখতে হলে দেশপ্রিয় পার্কের এই ঠিকানা থেকে ঘুরে আসতেই পারেন। রেস্তরাঁয় বসে পাইস হোটেলের আমেজ নিতে পারবেন এখানে। সাদামাঠা বাঙালি খাবার নয়, সাবেক রেসিপিতে পাবেন ফিউশনের টুইস্ট। অন্য রকম ফিশ ফ্রাই, গন্ধরাজ চিকেন, শিলে বাটা মুরগি, রেলওয়ে মুরগির ঝোল, কাঁকড়া ভাপা, পাইস হোটেল স্পেশ্যাল থালি, চিংড়ি পোলাও— মেনুতে রয়েছে রকমারি বিকল্প।
বিরিয়ানি ক্যান্টিনের স্পেশ্যাল মোগলাই সিজ়লার। ছবি: সংগৃহীত।
বিরিয়ানি ক্যান্টিন
অনেকের কাছেই উৎসবের উদ্যাপন বিরিয়ানি ছাড়া অসম্পূর্ণ, তাদের জন্য বিরিয়ানি ক্যান্টিন আদর্শ ঠিকানা। বিরিয়ানির সঙ্গে রকমারি কবাব তো আছেই, এ ছাড়াও বড়দিন আর নতুন বছর উপলক্ষে বিরিয়ানি ক্যান্টিন নিয়ে এসেছে তাদের নতুন মেনু, যার নাম ‘সিজ়ল ২৬’। অর্থাৎ বড়দিনে সিজ়লার খেতে ইচ্ছে করলে এই ঠিকানায় যেতেই পারেন। মেনুতে পাবেন নর্থ ইন্ডিয়ান সিজ়লার, মোগলাই সিজ়লারের মতো চমক।
বার্মা বার্মা স্পেশ্যাল ড্রাই খাওসুয়ে। ছবি: সংগৃহীত।
বর্মা বর্মা
কলকাতায় বসে বাও থেকে শুরু করে খাওসুয়ে, মায়ানমারের নানা ধরনের খাবার চেখে দেখার অন্যতম ঠিকানা বর্মা বর্মা। আমিষের ছোঁয়া না থাকলেও প্রতিটি খাবারের আস্বাদ নিলে জিভ অখুশি হবে না। বড়দিন আর নববর্ষ উপলক্ষে বার্মা বার্মা নিয়ে এসেছে তাদের স্পেশাল খাওসুয়ে মেনু। ওহ্ নো খাওসুয়ে, গ্র্যান্ডমা’জ় স্পেশ্যাল খাওসুয়ে, ডাউনটাউন খাওসুয়ে, নো জ়ি খাওসুয়ে— নুডল্স বোলের রকমারি স্বাদ চেখে দেখতে হলে ঘুরে আসতে পারেন শহর কলকাতার মধ্যে এক টুকরো বর্মা মুলুক থেকে। চেখে দেখতে পারেন ইয়াঙ্গোন সানসেট, বর্মা সাওয়ার, কেন গ্লোয়ের মতো রকমারি ককটেলও।
ক্যাফে অফবিট আপ দেয়ার
বড়দিন উপলক্ষে প্রেমিক বা প্রেমিকার সঙ্গে কোনও ক্যাফেতে ঢুঁ মারতে চাইলে ক্যাফে অফবিট আপ দেয়ারকে রাখতেই পারেন পছন্দের তালিকায়। মেক্সিকান ও এশিয়ান কুইজ়িন পছন্দ হলে এই ক্যাফে নিরাশ করবে না। বড়দিন আর নববর্ষ উপলক্ষে বাড়তি পাওনা হবে এই ক্যাফের সিজ়লার মেনু। ক্যাফের সি ফুড মেক্সিকান সিজ়লার, ভেজ ওরিয়েন্টাল সিজ়লার, ননভেজ এশিয়ান সিজ়লারের মতো বাহারি খানা চেখে দেখতেই পারেন।
অওধ ১৫৯০
সঙ্গে যিনিই থাকুন, উৎসবের মরসুমে বিরিয়ানি খাওয়া হবে না, তা কি হয়! বিরিয়ানি বললেই তো লখনউয়ের কথা নবাবি ঘরানার কথা মনে পড়ে। কলকাতায় বসে এই লখনউ ঘরানার বিরিয়ানি অওধ ছাড়া আর কোথায় পাবেন? বিরিয়ানির বিপুল সম্ভার যেমন থাকবে, তেমন নিরামিষ খেতে পছন্দ করেন যাঁরা, তাঁদের জন্যেও নানা রকম পদ থাকবে। লেহ্সুনি পালক, মাশরুম গলৌটি কবাব, আওয়ধি হান্ডি বিরিয়ানি, রান বিরিয়ানি, মুর্গ কলমি কবাব, গোস্ত তেহরি তো রয়েছেই, সঙ্গে থাকছে ফিরনি, শাহি টুকরার মতো শেষপাতে মিষ্টিমুখের আয়োজন ।
ফ্লুরিজ়ের বড়দিনের মেনুতে পাবেন স্পাফ্ড বেকড পমফ্রেট। ছবি: সংগৃহীত।
ফ্লুরিজ়
বড়দিন, সাহেবি খাওয়াদাওয়া আর পার্ক স্ট্রিটের সঙ্গে এক নিঃশ্বাসে মাথায় আসে ফ্লুরিজ়ের নাম। বড়দিনের সকালের জলখাবার হোক কিংবা রাতের ভোজ— ঠিকানা হতেই পারে ফ্লুরিজ়। কফির সঙ্গে চেখে দেখতে পারেন আমন্ড আইস্ড প্লাম কেক, জিঞ্জারব্রেড কুকিজ়। ক্রিসমাস ও নববর্ষ উপলক্ষে ড্যান্ডি কেক, রিচ প্লাম কেক, ড্রাই ফ্রুট কেক, চকোলেট ট্রাফ্ল কেকও চেখে দেখতে পারেন। ভোজ সারতে হলে এদের ক্রিসমাস স্পেশ্যাল মেনুতে পাবেন স্পাফ্ড বেকড পমফ্রেট, স্পাইসড ক্র্যানবেরি টার্কি রোলাড উইথ অস্ট্রেলিয়ান ডাক।
ঝড়ে জলে জঙ্গলে
বড়দিন কিংবা নববর্ষ উপলক্ষে সুন্দরবনে যেতে হলে ঘুরে আসতে পারেন এই ঠিকানা থেকে। মনোরম স্টেকেশন, সঙ্গে এলাহি খাওয়াদাওয়ার আয়োজনও রয়েছে। দুপুরের মেনুতে পাবেন লুচি, পোলাও, আলুর দম, হাঁসের ডিমের ডেভিল, কষা মাংস, চিংড়ির মালাইকারি, রসমালাইয়ের মতো পদ। শীতের ছোট ছুটি কাটানোর আদর্শ ঠিকানা হতেই পারে এই রিসর্ট।