Advertisement
E-Paper

পড়ুয়াদের মনের হদিস থাকুক শিক্ষকের কাছে

এমনিতেই শহরের বিভিন্ন স্কুলে মনোরোগ চিকিৎসক রয়েছেন। নিয়মিত কাউন্সেলিং করার পদ্ধতিও চালু রয়েছে। অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনাও হয়।

সুপ্রিয় তরফদার

শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:৪৭
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

পড়ুয়ার চরিত্র গঠনে সাহায্য করে স্কুলের পরিবেশ। তাই পড়ুয়াদের থেকে স্বার্থপরতা এবং সঙ্কীর্ণতা দূরে সরাতে স্কুলের সব শিক্ষককেই সক্রিয় হতে হবে বলে মনে করছেন মনোরোগ চিকিৎসকেরা। সম্প্রতি ফ্লরিডায় যে ভাবে স্কুলের এক প্রাক্তন ছাত্র স্কুলে ঢুকে এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়েছে তার পরে ফের এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। মনোবিদের পাশাপাশি শিক্ষকদেরও আরও বেশি সক্রিয় অংশগ্রহণে উদ্যোগী হচ্ছে শহরের বিভিন্ন ইংরেজি ও বাংলা মাধ্যম স্কুল।

জানা গিয়েছে, ফ্লরিডায় যে ছাত্রটি গুলি চালিয়েছিল সে আগে থেকেই মানসিক অবসাদগ্রস্ত ছিল। তাকে স্কুল থেকে বহিষ্কারও করা হয়। বদলা নিতেই অতর্কিতে আক্রমণ করেছিল সে। এর পরেই শহরের বিভিন্ন স্কুলে পড়ুয়াদের মনের খবর নেওয়ায় আরও জোর দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।

এমনিতেই শহরের বিভিন্ন স্কুলে মনোরোগ চিকিৎসক রয়েছেন। নিয়মিত কাউন্সেলিং করার পদ্ধতিও চালু রয়েছে। অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনাও হয়। তবুও মডার্ন হাই স্কুল ফর গার্লসের অধিকর্তা দেবী কর জানান, বাড়িতে শিশুদের উপরে নজর যেমন বাড়ানো উচিত, তেমনই স্কুলগুলিকে আরও বেশি দায়িত্বশীল ও সক্রিয় হতে হবে। প্রতিটি পড়ুয়ার মনের খবর রাখতে হবে শিক্ষকদেরই।

সম্প্রতি মৌলানা আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এমনই এক প্রকল্প শুরু করেছে। পড়ুয়াদের কয়েকটি গ্রুপে ভাগ করে তাঁদের সঙ্গে মিশে গিয়ে মনের খবর রাখতে হবে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। এমনকী, খাতায় সেটা নোট করেও রাখতে হবে। তার ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট পড়ুয়ার মনের পরিস্থিতির বিশ্লেষণ করতে হবে। একই ভাবে স্কুলেও ঠিক এ ভাবে না হলেও শিক্ষকদের উপরে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়ার পক্ষেই মত দিয়েছেন একাধিক স্কুল।

দ্য হেরিটেজ স্কুলের প্রিন্সিপাল সীমা সাপ্রু জানান, স্কুলে শিক্ষকেরাই পড়ুয়াদের বাবা-মা। তাই পড়ুয়াদের পাশে থেকে পথ দেখানো তাঁদের কর্তব্য। ‘‘স্কুলে মনোরোগ চিকিৎসক দিয়ে কাউন্সেলিং করানো হয়। কিন্তু শিক্ষকদেরই প্রথমে পড়ুয়াদের কাছে এগিয়ে আসাটা কাম্য,’’— বলেন সীমাদেবী। সেন্ট্রাল মডার্ন স্কুলের প্রিন্সিপাল নবারুণ দে বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের সঙ্গে শিক্ষকরা যাতে আরও বেশি করে পিতৃ-মাতৃ সুলভ আচরণ করতে পারেন সেটা লক্ষ্য রাখছি। পড়ুয়াদের মনের খবর যাতে তাঁদের কাছে থাকে, সেটাও জরুরি।’’

ভারতীয় বিদ্যাভবনের প্রিন্সিপাল রেখা বৈশ্য জানান, স্কুলে শিশুদের বাবা-মায়ের ভূমিকায় থাকেন শিক্ষক শিক্ষিকারা। তাই শিশুদের পড়াশোনার বাইরেও তাদের কাছাকাছি পৌঁছে মনের অবস্থা জানার জন্য বলা থাকে। একে অপরের দিকে বোতল ছুড়ে মারার মতো ছোট ছোট ঘটনা থেকেও শিশু মনের ওপরে খারাপ প্রভাব পড়ে। তাই সব ক্ষেত্রে সেগুলির ওপরে রাশ টানা প্রয়োজন। পাশাপাশি বাড়ির পরিবেশও যেন উপযুক্ত হয় সে দিকে পরিবারের নজর দেওয়া প্রয়োজন।

এ রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, কয়েক মাস আগেই ঠিক হয়েছিল বাংলা মাধ্যমের স্কুলগুলিতে মনোবিদ নিয়োগ করা হবে। সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তাই সরকারি বা সরকার পোষিত স্কুলগুলির পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে সমস্ত দায়িত্ব শিক্ষকদের উপরেই বর্তায়। তাতে আদৌ আসল উদ্দেশ্য কতটা সফল হবে তা নিয়ে সন্দিহান খোদ প্রধান শিক্ষকেরাই।

মনোরোগ চিকিৎসক সুজিত সরখেল অবশ্য বলেন, ‘‘স্কুলের এই উদ্যোগ ভালই। কিন্তু শিক্ষকদের মনোরোগ সম্পর্কে কিছুটা ধারণা থাকাও প্রয়োজন। তা হলে প্রকৃত উদ্দেশ্য সফল হবে।’’

Mental Health Psychiatry
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy