এই তৃতীয় স্রোতে কে কখন পজ়িটিভ হবেন— তার নিশ্চয়তা নেই। একদিকে যেমন সেই চিন্তা, তেমনই বয়স্ক মানুষদের নিয়ে রয়েছে বেশি দুশ্চিন্তা। টাইমলাইনেও বাড়ছে দুঃসংবাদ। মন ভয়ে কুঁকড়ে যাচ্ছে আবার। বিচ্ছিন্নবাসে আপনজনের স্নেহস্পর্শটুকুও নিষিদ্ধ। শরীরের যন্ত্রণা দ্বিগুণ করছে সেই মনোকষ্ট। ওয়ার্ক ফ্রম হোমে প্রোডাক্টিভিটি বজায় রাখতে নাজেহাল অনেকেই। ফিরেছে কর্মক্ষেত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তাও। ফল, একটুতেই মেজাজ হারানো, পারিবারিক অশান্তি। লাগাতার অনলাইন স্কুলিংয়ে বাচ্চারাও অধৈর্য, অমনোযোগী হয়ে পড়ছে। মানসিক স্বাস্থ্যের যে ক্ষতি করছে অতিমারি, তার থেকে রেহাই মিলবে কী করে? বিশেষজ্ঞরা কিছু পরামর্শ দিয়েছেন ঠিকই, তবে অতিমারিজাত প্রবল মানসিক ক্লান্তি, স্ট্রেসকে মোকাবিলার উপায়গুলো কিন্তু একটু নিজেদেরই জোগাড় করে নিতে হবে। সেই রাস্তায় আপনাকে কিছুটা এগিয়ে দিতে পারি।
বইয়ের মতো বন্ধু সংক্রমণ কত, মৃত্যু কত বাড়ল— শুধু সেই হিসেব করবেন না। সংক্রমণের হার কমছে কি না, কত জন সুস্থ হলেন, সেই খবরও রাখুন। এই বিপদে বইয়ের জগতে ডুব দিলে, মনটা অন্য দিকে ঘুরবে। ফিকশন, রান্নার বই, হাল্কা ম্যাগাজ়িন, কবিতা— যা ভাল লাগে পড়তে শুরু করুন। টিনটিন, অ্যাসটেরিক্স, নন্টে ফন্টে— কমিকস পড়ুন। বুকের পাথরটা হালকা হবে। বিচ্ছিন্নবাসে বই কাছে রাখলে দিনগুলো ঝড়ের গতিতে কেটে যাবে। বই পড়ার অভ্যেস মস্তিষ্কের কোষগুলিকে উজ্জীবিত করে। মনঃসংযোগ, সৃষ্টিশীলতার অনুশীলন হয়। এ সবই মনের ভাল গুণ বা শক্তি। সেই মনের জোরই বিষাদকে আপনা হতেই ঠেলে সরিয়ে দেবে। শান্ত মনে কাজও ভাল হয়।
নিজেকে প্যাম্পার করুন ইউটিউব দেখে রান্না করুন। রান্নার পদ্ধতিতে ইন্দ্রিয়গুলি সজাগ আর চনমনে হয়ে যায়। ফলে স্ট্রেস কমে। রোজ নতুন রেসিপি ট্রাই করার এনার্জি না থাকলে, মাঝেমধ্যে নতুন সস বা স্প্রেড ব্যবহার করুন। ডেলিভারি অ্যাপের মাধ্যমে কাছের মানুষদের আপনার রান্না প্যাক করে পাঠিয়েও দিন। একসঙ্গে বসে পাত পেড়ে খাওয়ার সুখটুকুর পরশ পাবেন। খাবার আনিয়ে রেস্তরাঁর আবহ তৈরি করে পরিপাটি টেবিল সাজিয়ে খেতে বসে যান। মেনু পাল্টালেই মুডও বদলাবে।
মন ভাল না থাকলে সাজগোজের ইচ্ছে হয় না। বিষয়টাকে উল্টে দিন। বাড়িতে একটা সুন্দর পোশাক পরুন। নখ ফাইল করুন, নেলপলিশ বদলান। শীতে পা ফাটছে কি না, খেয়াল রাখুন। পেডিকিয়োর কিট আনিয়ে বাথসল্ট দিয়ে পা ঘষে পরিষ্কার রাখুন। সুদৃশ্য, পেলব হাত-পা, কেতায় রঞ্জিত নখ, হালকা লিপস্টিক, সুগন্ধী— এ সব দেখলে মন খারাপ কাছে ঘেঁষবে না। রোজকার যাপনে বৈচিত্র রাখুন। নতুন বেডশিট পাতুন বা কার্পেটটা বদলে ফেলুন। গাছের টব রং করে দেখুন, এইটুকুতেও মন কতখানি উজ্জ্বল হয়! এ সব কাজে শরীরও সচল এবং সুস্থ থাকবে।