Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

বাড়ছে বয়স, নজর দিন হাড়ের দিকে

বয়স বাড়লে হাড়ের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর মধ্যে সবথেকে বেশি যে রোগটি দেখা যায় তা হল অস্টিওপোরোসিস। মহিলাদের ক্ষেত্রে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। এ নিয়ে কথা বললেন অস্থিরোগ বিশেষজ্ঞ সৈয়দ নকি ইমাম। সাক্ষাৎকার: বিপ্লব ভট্টাচার্যবয়স বাড়লে হাড়ের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর মধ্যে সবথেকে বেশি যে রোগটি দেখা যায় তা হল অস্টিওপোরোসিস। মহিলাদের ক্ষেত্রে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। এ নিয়ে কথা বললেন অস্থিরোগ বিশেষজ্ঞ সৈয়দ নকি ইমাম। সাক্ষাৎকার: বিপ্লব ভট্টাচার্য

রোগী দেখছেন চিকিৎসক। নিজস্ব চিত্র

রোগী দেখছেন চিকিৎসক। নিজস্ব চিত্র

শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৮ ০৫:২০
Share: Save:

প্রশ্ন: বয়সে বাড়লে কি অস্থি বা হাড়ের সমস্যা দেখা দিতে পারে?

উত্তর: হ্যাঁ, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানব শরীরে হাড়ের নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। দেখা গিয়েছে সাধারণ পুরুষদের থেকে মহিলাদের মধ্যেই কয়েক ধরনের হাড়ের রোগ বেশি হচ্ছে। যেমন, অস্টিওপোরোসিস। সমীক্ষা বলছে, বিশ্বে বয়সজনিত কারণে হাড়ে যে সমস্যাগুলি বা রোগ দেখা দেয় তার মধ্যে অস্টিওপোরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাই বেশি থাকে।

প্রশ্ন: বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অস্টিওপোরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায় কি? এই রোগে আক্রান্ত হলে আসলে কী হয়?

উত্তর: হ্যাঁ, বয়স বাড়লে অস্টিওপোরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। বয়স ৩০ ছাড়িয়ে গেলেই অস্টিওপোরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই রোগে আসলে হাড়ের ঘনত্ব কমে যায়। এই রোগে আক্রান্ত হলে হাড় ধীরে ধীরে দুর্বল এবং ভঙ্গুর হয়ে যায়। তবে পুরুষদের থেকে মহিলাদের ক্ষেত্রে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। মেনোপজ বা ঋতুবন্ধ হওয়ার পরে মহিলারা সব থেকে বেশি অস্টিওপোরোসিসে আক্রান্ত হন। সারা বিশ্বে বয়স পঞ্চাশ বছর ছাড়িয়ে গিয়েছে এমন মহিলাদের তিন জনের মধ্যে এক জন আক্রান্ত হন এই রোগে। তবে পুরুষেরাও যে খুব সুরক্ষিত আছেন এমন মনে করার কারণ নেই। পঞ্চাশ ছাড়িয়ে গিয়েছে এমন পুরুষদের ক্ষেত্রে পাঁচ জনের মধ্যে এক জন এই রোগে আক্রান্ত হন। এই মুহূর্তে সারা বিশ্বে প্রায় ২০ কোটি মানুষ অস্টিওপোরোসিস রোগে আক্রান্ত। এর মধ্যে প্রায় ৬৮ শতাংশই মহিলা। ভারতেই এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা কোটিরও বেশি মানুষ। এশিয়া জুড়েই এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি। বয়স্কদের হাড় ভাঙার অন্যতম কারণ এই রোগ।

প্রশ্ন: এই রোগ মহিলাদের কেন বেশি হয়?

উত্তর: মহিলাদের মেনোপজের পরে ইস্ট্রোজেন নামক একটি হরমোনের ক্ষরণ অনেকটাই কমে যায়। এই হরমোনের একটি অন্যতম কাজ হল হাড়কে সুস্থ রাখা। কাজেই ইস্ট্রোজেনের ক্ষরণ কম হওয়ার ফলে তার নানা কাজও কমে যায়। এতে হাড়ের উপরে প্রভাব পড়তে শুরু করে। ফলে হাড়ের ঘনত্বও কমতে থাকে। সেই কারণে মহিলাদের এই রোগ বেশি হয়।

প্রশ্ন: অস্টিওপোরোসিসের সঙ্গে ভিটামিন ডি-এর সম্পর্ক কী?

উত্তর: ভিটামিন-ডি-এর অন্যতম কাজ হল খাবার থেকে মানব শরীরে ক্যালসিয়াম জোগানে সাহায্য করা। কাজেই ভিটামিন-ডি-এর অভাব হলে, এই প্রক্রিয়ার ব্যাঘাত ঘটে। যা হাড় ক্ষয়ের অন্যতম কারণ।

প্রশ্ন: কী করে বুঝব যে এই রোগ হয়েছে?

উত্তর: সমস্যার ব্যাপার হলে হাড় যে দুর্বল হয়ে যাচ্ছে, তা চট করে বোঝা যায় না। মানে, সাধারণত অস্টিওপোরোসিসের কোনও লক্ষণ নেই। তবে এই রোগে আক্রান্ত রোগী হাড়ে ব্যথা অনুভব করতে পারেন। আপনা থেকেই হাড় ভেঙেও যেতে পারে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে আবার হাল্কা চোট পেলেই হাড় ভেঙে যেতে পারে। অর্থাৎ হাড়ের ক্ষমতা অনেকটাই কমে যায়। সঙ্গে হাড়ের ক্ষয় হতে শুরু করে।

প্রশ্ন: এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আর কি কোনও কারণ আছে?

উত্তর: আগেই বলেছি সাধারণত বয়স বাড়লে এই রোগ হতে পারে। তবে মহিলাদের ক্ষেত্রে নানা হরমোনজনিত সমস্যা থেকেও অস্টিওপোরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সে ক্ষেত্রে ৪৫ বছরের পরে অস্টিওপোরোসিস হতে দেখা যায়। শরীরের অন্য কোনও হাড় ভেঙে যাওয়ায় দীর্ঘদিন শয্যাশায়ী থাকলেও এই রোগ হতে পারে। তা ছাড়া অতিরিক্ত ধূমপান ও মদ্যপানের ফলে, নিয়মিত শরীরচর্চা না করলে, ঠিক পরিমাণে সুষম খাবার না খাওয়ার ফলেও এই রোগ হতে পারে।

প্রশ্ন: কী কী পরীক্ষা করালে নিশ্চিত ভাবে বোঝা যাবে যে অস্টিওপোরোসিস রোগটি হয়েছে?

উত্তর: অস্টিওপোরোসিস হয়েছে কি না তা জানার জন্য ‘বোন মিনারেল ডেনসিটি’ পরীক্ষা রয়েছে। তবে সব থেকে নিশ্চিত ভাবে রোগটি হয়েছে কি না তা বোঝার জন্য ডিইএক্সএ (ডুয়াল এনার্জি এক্সরে অ্যাবজর্পসনমেট্রি) পরীক্ষা করা যেতে পারে। এ ছাড়া ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন-ডি টেস্ট করেও অস্টিওপোরোসিস রোগ হয়েছে কি না জানা যেতে পারে।

প্রশ্ন: এই রোগের ফলে মানুষের শরীরে কী কী হতে পারে?

উত্তর: অস্টিওপোরোসিসে আক্রান্ত হলে শরীর দুর্বল হয়ে যায়। একটু বেশি হাঁটাচলা করলেই দুর্বল বোধ হতে পারে। এই রোগে হাঁটু, কোমর, গোড়ালি, পায়ের তলায় বেশ ব্যথা হতে পারে। কিন্তু সব থেকে বড় সমস্যা হয় কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে। হাড়ের সহ্যক্ষমতা কমে যায়। ফলে অল্প চোটেই হাড় ভেঙে যাবে।

প্রশ্ন: শরীরের কোন কোন অংশের হাড় অস্টিওপোরোসিসে বেশি আক্রান্ত হতে পারে?

উত্তর: যে কোনও হাড়েই এই রোগ হতে পারে। তবে সব থেকে বেশি হয় গোড়ালি, মেরুদণ্ড ও কব্জিতে। তবে শরীরের অন্যান্য হাড়েও এই রোগ হতে পারে।

প্রশ্ন: অস্টিওপোরোসিস রোগটি কি বংশগত?

উত্তর: গবেষণা বলছে এই রোগ অনেকটা বংশগত। কাজেই বংশে কারও অস্টিওপোরোসিস থাকলে, এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই বেড়ে যায়। পাশাপাশি কেউ যদি হাড়ে বার বার আঘাত পান এবং তার ফলে যদি তাঁর হাড় বেশ কয়েক বার ভেঙে যায়, তা হলেও অস্টিওপোরোসিস হতে পারে। আগেই ঠিকমতো শরীরচর্চা না করার কথা, খাবারে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি-এর অভাবের কথা বলেছি। ৬০ বছর উপরের যাঁরা দীর্ঘদিন স্টেরয়েডের ওষুধ খান, যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে কেমোথেরাপি নিচ্ছেন তাঁদেরও এই রোগ হতে পারে। তা ছাড়া থাইরয়েডজনিত সমস্যা, কিডনির অসুখ, ক্রোনস, সিলিয়াক, কার্শিং-এর মতো রোগ মানুষের শরীরে থাকলে, অস্টিওপোরোসিস হতে পারে।

প্রশ্ন: এই রোগ থেকে মুক্তির উপায় কী?

উত্তর: মূলত জীবনশৈলীর পরিবর্তন করতে হবে। নিয়মিত খাওয়াদাওয়া, পাশাপাশি শরীরচর্চা করতে হবে নিয়মিত। শরীরে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি-এর অভাব থাকলে ওষুধ খেতে হবে।

প্রশ্ন: এই রোগ হলে কী ধরনের খাবার খাওয়া দরকার?

উত্তর: অস্টিওপোরোসিসের থেকে বাঁচার জন্য দুধ জাতীয় খাবার খেতে হবে। যেমন দুধ, দই, চিজ এবং সবুজ আনাজ খেতে হবে নিয়মিত। তা ছাড়া মাছ খেতে হবে। ডাল, সয়াবিনের মতো পুষ্টিকর খাবারও খেতে হবে। নজর রাখতে হবে যেন কোনও ভাবেই খাবারে ক্যালসিয়াম বা ভিটামিন ডি-এর অভাব না হয়।

প্রশ্ন: এই রোগ প্রতিরোধ করা যাবে কী করে?

উত্তর: এই রোগের হাত থেকে বাঁচতে হলে ছোট বয়স থেকেই জীবনচর্চায় পরিবর্তন করতে হবে। পুষ্টিকর খাবার, দুধ, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার খাওয়া, নিয়মিত খেলাধুলো করা, শরীরের ওজন ঠিক রাখা দরকার। এ সব করতে হবে ছোট বয়স থেকেই। তবেই এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। পাশাপাশি নজর রাখতে হবে যেন শরীরে চোট আঘাত

কম লাগে। বিশেষ করে হাড় ভাঙা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হবে।

প্রশ্ন: যে সব মহিলারা শিশুদের স্তন্যপান করান, তাঁদের এই রোগ হওয়ার আশঙ্কা কেমন থাকে?

উত্তর: স্তন্যপান করানোর সময় প্রাথমিক ভাবে অস্টিওপোরোসিস হতে পারে। পুষ্টিকর খাবার খেলে এই রোগ নিজে নিজেই সেরে যায়।

প্রশ্ন: গর্ভবতী মহিলাদের সঙ্গে কি এই রোগের কোনও যোগ আছে?

উত্তর: সাধারণত কোনও সম্পর্ক নেই। যদিও গর্ভবতী মহিলাদের এই রোগ হতে পারে। তবে তাতে ভয়ের কিছু নেই। সেটি ঠিকও হয়ে যায়।

প্রশ্ন: এই রোগের চিকিৎসা কী?

উত্তর: অস্টিওপোরোসিস হলে সাধারণত ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি-এর ওষুধ খেতে হবে। পাশাপাশি, হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপিও করানো যায়। তা ছাড়া চিকিৎসকের পরামর্শ মতো বিসফসপোনেটস, ক্যালসিটনি, টেরাপ্যারাটাইড জাতীয় ওষুধ নিয়মিত গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি শরীরচর্চা করতে হবে নিয়মিত। বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম রয়েছে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য। সেগুলি করতে হবে। এই রোগের থেকে মুক্তি পেতে গেলে ধূমপান ও মদ্যপান বন্ধ করতে হবে। তা ছাড়া প্রতি দিন হাঁটার অভ্যাসও করতে হবে। এ ভাবে জীবনযাপন করলে অস্টিওপোরোসিস থেকে মুক্তি মিলতে পারে।

প্রশ্ন: হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি কী?

উত্তর: সাধারণত মহিলাদের ৪৫ বছরের বেশি বয়স হয়ে গেলে এই চিকিৎসা করানো যায়। সহজে বোঝাতে গেলে এই চিকিৎসাটি হল, শরীরে যে হরমোনের ক্ষরণ কমে যায়, সেই হরমোন বাইরে থেকে শরীরে প্রবেশ করানো। যে হরমোনের ঘাটতি হয়েছে সেটি পূরণ করার জন্য এই উদ্যোগ। এই চিকিৎসা করানোর আগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। তাঁর পরামর্শ মতো এগতে হবে।

প্রশ্ন: এই কয়েক ভাবে চিকিৎসা করে কি অস্টিওপোরোসিস পুরোপুরি সারানো সম্ভব?

উত্তর: অস্টিওপোরোসিসের চিকিৎসা করা হয় হাড়কে ভঙ্গুর হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য। হাড় যাতে বেশি না ক্ষয়ে যায় সে দিকে নজর দেওয়া হয়। ঠিকমতো ওষুধ ও খাবারের মাধ্যমে হাড়ের ঘনত্ব ও ক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়। যদি ঠিক সময়ে এই রোগের চিকিৎসা করা হয়, তা হলে ভবিষ্যতে হাড়ের ক্ষয় রোধ করা যায়। তবে কখনই পুরোপুরি রোগমুক্ত করা যায় না। কারণ, অস্টিওপোরোসিসের জন্য যে হাড় দুর্বল হয়ে গিয়েছে, তাকে ঠিক করা খুবই সমস্যার। কিন্তু চিকিৎসার ক্ষেত্রে ওই রোগকে রোধ করা সব থেকে আগে দরকার।

প্রশ্ন: অস্টিওপোরোসিস হলে কোন ধরনের শরীরচর্চা করা উচিত?

উত্তর: চিকিৎসকের পরামর্শ মতো কিছু ব্যায়াম করা যায়। কিন্তু কখনই দৌড়ানো বা ভারী বস্তু ওঠানামা করানো উচিত নয়। কারণ, তাতে আঘাতজনিত হাড় ভাঙার প্রবণতা বেড়ে যায়। সাধারণ ভাবে হাঁটলে তেমন কোনও সমস্যা নেই।

প্রশ্ন: অস্টিওপোরোসিসের চিকিৎসার জন্য ওষুধ কি দীর্ঘদিন খাওয়া উচিত?

উত্তর: সাধারণত ভিটামিন-ডি এবং ক্যালসিয়াম ওষুধের তেমন কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। কিন্তু ব্যথা উপশমের ওষুধ খুব প্রয়োজন না পড়লে খাওয়া উচিত নয়। কারণ, এই ধরনের ওষুধের কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। এ বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

প্রশ্ন: দুই বর্ধমানে এই রোগের কেমন প্রকোপ?

উত্তর: এই রোগটি অঞ্চলের উপরে নির্ভর করে না। তবে আমরা ধীরে ধীরে শহুরে জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছি। ফলে শরীরচর্চা, পরিশ্রম কম হচ্ছে। ফলে অস্টিওপোরোসিসের থাবা বসাতে সুবিধা হচ্ছে। দুই বর্ধমানে রোগী বাড়ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bone Doctor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE