আবর্জনার ব্যাগ, বাসনপত্র, গৃহস্থালির পণ্য, বোতল— প্লাস্টিকেরই তো রমরমা গোটা বিশ্বে। আর তাই বেড়েই চলেছে প্লাস্টিক বর্জ্যের পরিমাণ। প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানোর জন্য নানাবিধ অভ্যাস চর্চা করেন লোকে। প্রথমে কম প্লাস্টিক কেনার চেষ্টা, তার পর সেটিকেই পুনর্ব্যবহার করা, শেষে সে সব রিসাইক্লে পাঠানো। কিন্তু সবচেয়ে কার্যকর পন্থা কোনটি জানেন? কম ব্যবহার করা। অর্থাৎ মূলে বিনাশ করতে হবে। না হলে স্বাস্থ্য থেকে পরিবেশ, সব কিছুরই ক্ষতি হতে থাকবে।
একসঙ্গে মাসকাবারি বাজার করলে প্লাস্টিক ঘরে ঢুকবে কম। ছবি: সংগৃহীত।
নিত্য দিনের প্লাস্টিক ব্যবহার কমানোর উপায় কী?
প্লাস্টিক বর্জ্য কমানোর সবচেয়ে ভাল উপায় হল, শুরু থেকেই কম কেনা। যেগুলি ‘রিসাইক্লযোগ্য’ বলে বিক্রি হয়, সেগুলিও অনেক ক্ষেত্রে ফেলা হয়। আর তাই ছোট ছোট পদক্ষেপ করতে হবে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য।
শুরুতেই যদি আপনি ভাবেন ১০০ শতাংশ প্লাস্টিকমুক্ত হয়ে যাবেন, তা হলে সেটি সম্ভব নয়। বরং ছোট ছোট কদম ফেললেই কার্যকর হবে। আর তাই অভ্যাসে বদল আনতে হবে।
১. অনলাইনে প্রাত্যহিক প্রয়োজনীয় কিছু কেনাকাটা করলে চেষ্টা করুন বার বার না করে এক বার অর্ডার করতে। তা হলে প্যাকেজিংয়ের ক্ষেত্রে কম প্লাস্টিক ব্যবহার হবে।
২. বাজারের ব্যাগ যেন পুনর্ব্যবহারযোগ্য হয়।
৩. একসঙ্গে মাসকাবারি বাজার করলে প্লাস্টিক ঘরে ঢুকবে কম। তা ছাড়া রিফিলযোগ্য জিনিসের ব্যবহার বাড়াতে হবে। যেমন ধরা যাক, হাত ধোয়ার তরল সাবান কিনলে একটি বোতলের সঙ্গে একটি বড় রিফিল প্যাক কিনে নিন। তা হলে বার বার বোতল বা প্যাকেটের প্রয়োজন হবে না। ওই দু’টি জিনিস এক বার কিনলেই অনেক দিন চলে যাবে। সাবান ছাড়াও ডিটারজেন্ট, শ্যাম্পু অথবা হেঁশেলের মশলাপাতি কেনার অভ্যাস পাল্টে ফেলতে পারেন।
আরও পড়ুন:
৪. অফিসে চা খাওয়ার সময়ে বা দোকানে গিয়ে চা কিনলে নিজের কাপ ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। দোকানে যদি মুশকিলও হয়, অন্তত অফিসে রোজ প্লাস্টিকের কাপ বা প্লাস্টিক মেশানো কাগজের কাপ ব্যবহার বন্ধ করে ফেলুন। নিজের কাছে কাচের বা স্টেনলেস স্টিলের বোতল বা মগ রাখুন।
৫. ঘর থেকে প্লাস্টিকের জিনিস সরাতে হবে। সব একসঙ্গে ফেলে দিতে হবে না। যেগুলি আগে থেকেই ব্যবহার করেন, সেগুলি থাকুক। নতুন জিনিস আর কিনবেন না।
৬. শিশুর খাবার রাখার পাত্র, বোতল, খাওয়ার সরঞ্জাম কেনার সময়ে প্লাস্টিকমুক্ত জিনিসই খুঁজবেন দোকানে বা অনলাইনে।
প্লাস্টিকমুক্ত জিনিসপত্রের দাম কখনও-সখনও বেশি হয় ঠিকই, কিন্তু সেগুলি অনেক বেশি টেকসই। এমনকি খারাপ বা নষ্ট হয়ে গেলে সারানো সম্ভব কোনও ক্ষেত্রে। প্লাস্টিকের জিনিসে সারানোর বা মেরামতির সুযোগ নেই। তাই ভেবে দেখুন, খরচ কিন্তু কম হচ্ছে না আপনার।