Advertisement
E-Paper

হৃদ্‌রোগীর প্রাথমিক শুশ্রূষার প্রশিক্ষণ শিবির

চিকিৎসকদের কাছে তাঁর আবেদন, পুরো পদ্ধতিটা ভিডিয়ো ও ইউটিউবের মাধ্যমে আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হোক।

জয়তী রাহা

শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৮ ০২:২২
হাতেকলমে: সিপিআর-এর পাঠ। মঙ্গলবার। ছবি: শৌভিক দে

হাতেকলমে: সিপিআর-এর পাঠ। মঙ্গলবার। ছবি: শৌভিক দে

দেশে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার যেখানে প্রতি লক্ষে ৪,২৮০ জন, সেখানে আমেরিকায় সংখ্যাটা মাত্র ৬০। কিন্তু এতটা পার্থক্য কীসের জন্য? আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতির পাশাপাশি ‘কার্ডিয়ো পালমোনারি রিসাসিটেশন’ (সিপিআর) এর অন্য কারণ, বলছেন চিকিৎসকেরা। এ দেশের প্রায় ৭০ শতাংশ হৃদ্‌রোগই হয় বাড়িতে। যার মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশেরই মৃত্যু ঘটে। কারণ, অ্যাটাক হওয়ার পরে এবং হাসপাতালে পৌঁছনো পর্যন্ত মাঝের সময়ে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই রোগী প্রয়োজনীয় শুশ্রূষা থেকে বঞ্চিত হন।

বিশেষ শুশ্রূষা দেওয়ার প্রশিক্ষিত লোকের অভাব এর একটা বড় কারণ। ২৩ অক্টোবর মঙ্গলবার, ‘ওয়ার্ল্ড রিস্টার্ট আ হার্ট ডে’ উপলক্ষে নিউ টাউনের টাটা মেডিক্যাল সেন্টারের অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বারবার চিকিৎসকদের আলোচনায় উঠে এল এমনই তথ্য। অনুষ্ঠানটির সহযোগিতায় ছিল ‘ইন্ডিয়ান রিসাসিটেশন কাউন্সিল’।

কয়েক মাসে আগে ইকো পার্কে বেড়াতে এসে তিন বছরের একটি শিশু রাইড থেকে পড়ে যায়। সেই ঘটনার উল্লেখ করে হিডকো চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন বলেন, ‘‘ইকো পার্কের তরফে নিকটবর্তী হাসপাতালে খবর দিলে অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে দ্রুত চিকিৎসক পৌঁছে যান। সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসাও শুরু হয়। এক মাস লড়াইয়ের পরে শিশুটি এখন সুস্থ। কিন্তু সেই সময়ে চিকিৎসকেরা বলেছিলেন, কিছু ক্ষণের জন্য শিশুটির শরীরে প্রাণ ছিল না। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি পথে-ঘাটে, অফিসে, বাড়িতে যে কারও হতে পারে। তেমন পরিস্থিতিতেই ‘কম্প্রেশন ওনলি লাইফ সাপোর্টের’ (সি ও এল এস) জ্ঞান থাকাটা জরুরি।’’ চিকিৎসকদের কাছে তাঁর আবেদন, পুরো পদ্ধতিটা ভিডিয়ো ও ইউটিউবের মাধ্যমে আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হোক।

বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে পঞ্চাশ জন শিক্ষার্থী এ দিনের কর্মশালায় যোগ দেন। নিউ টাউন পুলিশ, হিডকোর মেডিক্যাল অফিসার, নিরাপত্তারক্ষী, নিউ টাউনের আবাসন ও হোটেলের প্রতিনিধি এবং তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার তরফে কর্মীরাও ছিলেন এ দিন। কর্মশালায় পুরো পদ্ধতিটা প্রথমে আলোচনা, পরে ভিডিয়ো এবং ডামির মাধ্যমে তুলে ধরা হয়। সেই সঙ্গে চলে হাতেনাতে প্রশিক্ষণ।

প্রশিক্ষণে উপস্থিত নিউ টাউন ট্র্যাফিক গার্ডের সাব ইনস্পেক্টর দেবায়ন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ডিউটি করার সময়ে এমন বহু অঘটন ঘটতে দেখছি। এত দিন অসহায় হয়ে অন্যদের জন্য অপেক্ষা করতে হত। এই প্রশিক্ষণের পরে নিজেই মানুষের সাহায্যে লাগতে পারব বলে মনে হচ্ছে।’’ নিউ টাউনের বাসিন্দা এবং তথ্য প্রযুক্তি কর্মী শান্তনু আইচ বলেন, ‘‘সিপিআর কী সেটাই তো জানতাম না! প্রশিক্ষণের পরে মনে হচ্ছে এটা আরও অনেক মানুষের কাছে, এমনকি স্কুল-কলেজেও পৌঁছে দেওয়া জরুরি। আমি ফিরে আবাসনের সকলকে বিষয়টি জানাব।’’

সেন্টারের সিনিয়র কনসালট্যান্ট অ্যানাস্থেশিস্ট অরুণাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এর আগেও হাসপাতালের তরফে সিপিআর কর্মশালার আয়োজন করা হলেও তা ছিল শুধু চিকিৎসকদের জন্য। কিন্তু নন মেডিক্যালদের জন্য প্রশিক্ষণের ডিজ়াইন আলাদা। এ বারই সেটাই প্রথম হল।’’ টাটা মেডিক্যাল সেন্টারের অধিকর্তা মামেন চ্যান্ডি বলেন, ‘‘বিভিন্ন সামাজিক কাজে যুক্ত এই হাসপাতাল। সিপিআর-এর প্রচার এবং প্রসার এই মুহূর্তে সমাজের ক্ষেত্রে অত্যন্ত জরুরি। হাসপাতালের তরফে ফের এমন কর্মশালার আয়োজন করার ভাবনাচিন্তা চলছে।’’

heart disease Fasted
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy