Advertisement
E-Paper

‘হিজড়া’ বলে গালাগালি, গণপ্রহার! যোধপুর পার্কে যৌনতার নিরিখে প্রান্তিকদের উপর হামলার অভিযোগ

যৌনতার নিরিখে প্রান্তিক কয়েক জনকে যৌন হেনস্থা, গালাগালি ও মারধরের অভিযোগ ওঠে মঙ্গলবার। দক্ষিণ কলকাতার যোধপুর পার্কের এই ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ জমা পড়েছে পুলিশে।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২১:০৪
যোধপুর পার্ক অঞ্চলের এই ক্যাফেতেই কাজ করেন অভিযোগকারীরা।

যোধপুর পার্ক অঞ্চলের এই ক্যাফেতেই কাজ করেন অভিযোগকারীরা। ছবি: সংগৃহীত।

কাজের দিনের ব্যস্ত সকাল। তার উপর দক্ষিণ কলকাতার যোধপুর পার্কের মতো জনবহুল অঞ্চল। সেখানেই এক ক্যাফের ক্যুইয়র ও রূপান্তরকামী সদস্যদের উপর গণ-হামলার অভিযোগ উঠল। যৌন হেনস্থা ও ‘হিজড়া’ বলে গালিগালাজ করারও অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবারের এই ঘটনায় লেক থানায় একটি এফআইআর দায়ের হয়েছে।

যোধপুর পার্কে ‘পড়শি’ নামক একটি ক্যান্টিন চালান যৌনতার নিরিখে প্রান্তিক কয়েক জন সমমনস্ক ব্যক্তি। যৌনতার নিরিখে প্রান্তিকদের সংগঠন ‘সাফো ফর ইকুয়্যালিটি’-র প্রশিক্ষণ কেন্দ্রও সেটি। মঙ্গলবার সকালে সেই ক্যাফের জন্য কিছু রান্নার জিনিস কিনতে পাড়ার একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে গিয়েছিলেন সায়ন শেখ এবং রুনা ধাড়া। তাঁরা জানিয়েছেন, সেখানে আর এক ক্রেতার সঙ্গে টাকা দেওয়ার কাউন্টারে শুরু হয় বচসা। তা-ই কিছু ক্ষণের মধ্যে বড় আকার নেয় বলে অভিযোগ।

বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ সায়নদের মারধর করা হচ্ছে বলে খবর যায় ক্যাফেতে। তখন ছুটে যান ক্যাফের কর্ণধার কোয়েল ঘোষ। সঙ্গে যান অঙ্কনা দে এবং ঋদান খান। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অঙ্কনা আনন্দবাজার অনলাইনকে জানান, তাঁরা ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই সেখানে ভিড় জমে গিয়েছিল। সায়ন ও রুনাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে তাঁদেরও মারধর করা হয়। অঙ্কনার অভিযোগ, ‘‘আমার চুলের মুঠি ধরে টেনে রাখেন এক জন। বার বার সাহায্য চাওয়ায় কেউ আমাদের পাশে এসে দাঁড়াননি। আমার বন্ধুদের বার বার হিজড়া বলে গালাগালি করছিল ওরা। আরও খারাপ কথা বলা হচ্ছিল বার বার। তা মুখেও আনতে চাই না!’’ অঙ্কনা-কোয়েলদের অভিযোগ, যাঁরা মারধর করছিলেন, তাঁরা আগেই বুঝেছিলেন যে, যাঁদের সঙ্গে বচসা তাঁরা যৌনতার নিরিখে প্রান্তিক গোষ্ঠীর। অঙ্কনাদের অভিযোগ, ধরেই নেওয়া হয়েছে তাঁরা দুর্বল। তাঁদের মারধর করাই যায়। পড়শি ক্যাফেতে নিয়মিত যাতায়াত চলচ্চিত্রকার দেবলীনার। ঘটনাটি শুনে উদ্বিগ্ন তিনি। আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘একটু অন্য রকম দেখতে মানেই তাঁকে মারা যায়, তাঁর উপর অত্যাচার করা যায়। এমনই ধরে নেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রেও তেমনই ঘটেছে।’’

অনেক ক্ষণ ধরে পুলিশকে অনুরোধ করা হলেও সাহায্য পাননি বলে অভিযোগ অঙ্কনাদের। তিনি জানান, পুলিশ আসতেও বেশ সময় লাগে। পরে লালবাজার থেকে খবর পেয়ে লেক থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে প্রথমে অভিযোগকারীদেরই তুলে নেওয়া হয় পুলিশের গাড়িতে। বাঘাযতীন হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার পর তাঁদের অভিযোগ গৃহীত হয়েছে এবং ঘটনাটির তদন্ত হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে পুলিশ।

ঘটনার খবর পেয়ে লেক থানায় ছুটে গিয়েছিলেন মনো-সমাজকর্মী রত্নাবলী রায়। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি জানান, পুলিশকে ‘ট্রান্সজেন্ডার প্রোটেকশন অ্যাক্ট’-এর কথা বলে বোঝাতে হল। তিনি বলেন, ‘‘সায়নকে মারার সময়ে রাস্তায় ফেলে বলা হয়েছিল, ‘তুই ছেলে না মেয়ে আগে দেখব’! এ ধরনের ঘটনা কলকাতা শহরে এখনও ঘটতে পারে! এবং তার গুরুত্ব বোঝাতে হবে পুলিশকে? আমরা এর ন্যায়বিচার চাই।’’

LGBTQ Ratnaboli Ray queer
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy