Advertisement
E-Paper

মুক্তি, নাকি বন্ধনডোর

কতটা পথ পেরোলে তবে মুক্তি পাওয়া যায়? সর্বনাশা ড্রাগের নেশার থেকে? ওলটপাল ট হয়ে যাওয়া জীবন থেকে? হতাশার বেড়াজাল থেকে?

পরমা দাশগুপ্ত

শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৬ ০৭:১৪

কতটা পথ পেরোলে তবে মুক্তি পাওয়া যায়?

সর্বনাশা ড্রাগের নেশার থেকে? ওলটপাল ট হয়ে যাওয়া জীবন থেকে? হতাশার বেড়াজাল থেকে?

তারই পাঠ নিতে গিয়েছিল ওরা। ৮ থেকে ১৪ বছরের জনা পনেরো-কুড়ি ছেলে। প্রায় সকলেরই ঠিকানা ছিল স্টেশন চত্বর, আর নেশা ছিল মূলত ডেনড্রাইটের। শুক্রবার দুপুরে ওরা পৌঁছে গিয়েছিল শহরের এক মাল্টিপ্লেক্সে। মাদক পাচার আর নেশার গোলমেলে জীবন, তার সর্বনাশা প্রভাব এবং শেষমেশ তা থেকে বেরোনোর মুশকিল আসান হয়ে উঠতে চাওয়া, সেন্সর বোর্ডের কাঁচি ঘিরে বিতর্কের ঝড় তোলা ছবি ‘উড়তা পঞ্জাব’ দেখতে। সৌজন্য এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। যাদের হাত ধরে এখন ওই কিশোরের দল হাঁটছে নতুন জীবনের পথে।

কিন্তু শেখা হল কি শেষমেশ? অনেকেই বলছেন, ‘মুক্তি’র এই পথ বোধহয় খানিকটা বন্ধনডোরই হয়ে উঠবে। কারণ তাঁদের মতে, শাহিদ কপূর, আলিয়া ভট্ট, করিনা কপূর অভিনীত এই ছবির প্রথমার্ধ জুড়ে রয়েছে মাদক পাচার, নেশার পদ্ধতি ও তার প্রভাব। বড্ড রূঢ় ভাবে বাস্তবের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়া সেই অংশ বরং ওই কিশোরদের মনে করাতে পারে ফেলে আসা দিনগুলোর কথা। চারিয়ে দিতে পারে মাদকের টান। দ্বিতীয়ার্ধে নেশামুক্তির পথ বলা হলেও চিত্রনাট্যের প্রয়োজনেই মাদকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জায়গাটায় পৌঁছতে কেউ প্রেমে পড়েছেন, কারও নামে ২৪ ঘণ্টায় জারি হয়ে গিয়েছে গ্রেফতারি পরোয়ানা, কেউ বা অপহরণকারীদের খুন করে প্রাণপণ পালিয়েছেন আলোর দিকে।

‘‘সেলুলয়েডে আড়াই ঘণ্টার টানটান যুদ্ধে জয় এসেছে। কিন্তু বাস্তব কি আর অত সহজ? নিজের সঙ্গে যুদ্ধেই কত দিন লেগে যায়, তবে তো মুক্তির লড়াই। বাস্তবে নাটক নয়, বরং হতাশাই থাকে বেশি। তা থেকে বেরোতে চাই মূল স্রোতে ফেরার তাগিদ আর সচেতনতা,’’ বলছিলেন ক্যাকটাস ব্যান্ডের সিদ্ধার্থ। ছোটদের সঙ্গেই এ দিন ছবিটি দেখেছেন ব্যান্ডের সদস্যরা। একদা মাদকাসক্ত, বর্তমানে মাদক-বিরোধী যুদ্ধে সামিল প্রৌঢ় সুব্রত মুখোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘মাদকাসক্তদের কিন্তু সমাজ ব্রাত্য করে না। বরং সমাজের মুখোমুখি হওয়ার ভয়ে তারাই গুটিয়ে নেয় নিজেদের। ওদের সাহস জোগাতে হয়। এ ছবি সেটাই চেষ্টা করেছে। কিন্তু তা বোঝার মতো জায়গাতেও তো থাকতে হবে। ছবিটা দেখতে দেখতে আমারও কিন্তু মাদক নেওয়ার ইচ্ছেটা ফিরে আসছিল।’’

যাঁদের হাত ধরে হাঁটছে কিশোরেরা, যাঁদের উদ্যোগে এ দিনের সিনেমা দেখা, সেই ‘মুক্তি রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার’-এর সদিচ্ছা বা চেষ্টায় অবশ্য ফাঁক ছিল না। ছবি-শেষে সন্ধ্যায় এক অনুষ্ঠানে একদা মাদকাসক্ত ছেলেদের ওই দলটাকে তারা নিয়ে এসেছিলেন সর্বসমক্ষে। রানা-বিজয়-আসলামরা (নাম পরিবর্তিত) সবার সামনে বলেছে নেশার ঘোরে সব গুলিয়ে যাওয়া, ব্লেড দিয়ে হাত-পা কাটা, মাকে মিথ্যে বলার গল্প। বলেছে নতুন জীবনে ভাল ভাবে বাঁচার স্বপ্নগুলোর কথাও। ভরে গিয়েছে হাততালিতে।

সপ্তাহশেষে প্রাপ্তি ছিল সেটাই।

Udta Punjab
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy