যোগাসনের অনেক ধরনই আছে। তার মধ্যে এমন একটি আসন আছে, যার পদ্ধতি খুব একটা কঠিন নয়। অথচ এর উপকারিতা অনেক। গলাব্যথা, হাঁপানি বা সিওপিডি— শ্বাসযন্ত্রের যে কোনও জটিল সমস্যাই থাকুন না কেন, এই আসন করলে তার কষ্ট থেকে অনেকটাই রেহাই পাওয়া যায়। পাশাপাশি, শরীরের পেশিগুলিও সক্রিয় হয়। এর নাম 'সিংহাসন'। যোগাসন প্রশিক্ষকেরা বলেন, ‘সিংহ ভঙ্গি’ বা ‘সিংহ গর্জনাসন’।
কেন এমন নাম?
সিংহাসনে শরীরের ভঙ্গিমা এমন থাকে, যা দেখতে অনেকটা সিংহের মতোই লাগে। বসার ভঙ্গি, জ্বিহা প্রসারিত করে সিংহের মতোই গর্জন করতে হয়। শরীরের উপরিভাগের পেশিগুলি শক্তিশালী হয় এই আসন অভ্যাস করলে।
সিংহাসন কী ভাবে করবেন?
প্রথমে ম্যাটের উপরে বজ্রাসনে বসুন। খেয়াল রাখতে হবে দুই হাঁটুর মধ্যে যেন ব্যবধান থাকে।
এর পর শরীর সামনের দিকে ঝুঁকিয়ে দুই হাতের তালু, দুই হাঁটুর মাঝে রাখুন। শরীরের ভর হাতের উপর দিতে হবে।
নাক দিয়ে গভীর ভাবে শ্বাস টেনে মুখ প্রসারিত করে জিভ বার করুন। আর মুখ দিয়ে খুব জোরে ‘অ্যা’ শব্দ উচ্চারণ করুন।
মাথা সোজা থাকবে এবং দৃষ্টি দুই ভ্রুর মাঝে থাকলে ভাল হয়।
এই ভঙ্গিমায় ২০-৩০ সেকেন্ড থেকে মুখ বন্ধ করুন আর শ্বাস ছাড়ুন।
ফের একই ভাবে উপরের পদ্ধতিটি করতে হবে। ৫-৬ বার করে অভ্যাস করতে হবে।
সিংহাসনের উপকারিতা কী কী?
১) গলায় প্রচণ্ড ব্যথা, শুকনো কাশি থাকলে এই আসন নিয়মিত অভ্যাস করলে আরাম হবে।
আরও পড়ুন:
২) হাঁপানির সমস্যা থাকলে এই আসন করা যেতে পারে। যাঁদের সিওপিডি আছে, তাঁরা প্রশিক্ষকের পরামর্শ নিয়ে সিংহাসন অভ্যাস করতে পারেন।
৩) এই আসন অভ্যাস করলে হজমশক্তি ভাল হয়। যাঁরা গ্যাস-অম্বলের সমস্যায় বেশি ভোগেন, তাঁরা এই আসন নিয়মিত করলে ভাল ফল পেতে পারেন।
৪) পিঠ ও কোমরের ব্যথা খুব ভোগালে সিংহাসন বা সিংহ ভঙ্গি অভ্যাস করলে ব্যথা কমতে পারে। এই আসন পেশির শক্তি বাড়ায়।
৫) গোটা শরীরে রক্ত সঞ্চালন ভাল হয়। বিশেষ করে মুখের পেশিগুলি টান টান হয়। নিয়মিত অভ্যাস করলে চট করে বয়সের ছাপ পড়বে না মুখে।
৬) মানসিক চাপ, উদ্বেগও কমবে এই আসন অভ্যাস করলে।
কারা করবেন না?
সিংহাসন খুবই নিরাপদ। যে কোনও বয়সেই করা যেতে পারে। তবে হাঁটুতে কোনও আঘাত থাকলে বা আর্থ্রাইটিসের ব্যথা ভোগালে, এই আসন অভ্যাসের আগে প্রশিক্ষকের পরামর্শ নিতে হবে। যাঁদের হাঁটু প্রতিস্থাপন হয়েছে, তাঁরা নিজে থেকে এই আসন করতে যাবেন না।