শরীর চাঙ্গা রাখতে নিয়ম করে শরীরচর্চা করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। এই এক দাওয়াইতেই গায়েব হতে পারে হাজারটা রোগ। তবে অফিসের ব্যস্ততা ও সংসারের হাজারটা কাজ সামলে জিমে যাওয়ার সময় কোথায়? ইচ্ছে থাকলে বাড়িতে আধ ঘণ্টা সময় বার করে যোগাসন অভ্যাস করতে পারেন। কেবল রোগা হতেই নয়, নানা শারীরিক সমস্যা দূর হতে পারে নিয়ম করে যোগাসন করলে। তবে সঠিক নিয়ম মেনে যোগাসন করলে তবেই মিলবে ফল। পুজোর আগে শরীর চাঙ্গা রাখতে কোন কোন আসন অভ্যাস করতে পারেন, খোঁজ নিল আনন্দবাজার অনলাইন। রইল আসন আসান করার পদ্ধতির হদিস। আজকের আসন মার্জারাসন।
সংস্কৃতে মার্জার শব্দের অর্থ বিড়াল। মার্জারাসন অনেকটা বিড়াল ও উটের মতো ভঙ্গিমা। এই আসনটি অভ্যাস করার সময়ে পিঠ কখনও বিড়ালের মতো দেখতে লাগে, কখনও আবার উটের মতো দেখতে লাগে। পিঠ উপরে ও নীচে দু’দিকেই প্রসারিত হয়। দীর্ঘ সময় এক ভাবে বসে থাকলে কিংবা ভুল ভঙ্গিমার কারণে পিঠের ব্যথায় কষ্ট পান অনেকেই। অফিসে বসে যাঁরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাজ করেন তাঁদের এই সমস্যা হয় বেশি। নিয়মিত মার্জারাসন অভ্যাস করলে পিঠের বেশির ভাগ সমস্যা চলে যায়।
কী ভাবে করবেন?
● ম্যাটের উপর হাঁটু গেড়ে বসুন। দুই হাতের তালু মাটিতে ঠেকিয়ে রাখুন কাঁধের সোজাসুজি। দুই হাঁটুর দূরত্ব থাকুক কাঁধের দূরত্বে। দুই ঊরু ও হাত যেন সমান্তরাল অবস্থায় থাকে। পিঠ থাকবে চ্যাটালো অবস্থায়, ঠিক যেন টেবিল। মাথা থাকুক শিথিল। এটা শুরুর ধাপ। এই ভঙ্গিতে খানিক ক্ষণ স্থির থাকুন।
● এ বার শ্বাস নিতে নিতে মাথা উপরের দিকে তুলুন। এই সময়ে পেটের দিক কিছুটা নীচে নেমে যাবে ও পিঠ অবতল হয়ে থাকবে। বুক উপরের দিকে থাকায় অনুভব করতে পারবেন ফুসফুস বাতাসে ভর্তি হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থান কয়েক সেকেন্ড ধরে রাখুন। এই অবস্থানে পিঠ বাঁকানো থাকবে ও গলায় টান পরবে, এই ব্যাপারটা খেয়াল রাখুন।
● এ বার শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে পিঠ উটের কুঁজের মতো উঁচু করুন। চোখ থাকুক নাভির দিকে। উঁচু করলে পিঠ ও গলায় টান পড়বে। কয়েক সেকেন্ড এই অবস্থানে থাকুন। ফুসফুস থেকে সম্পূর্ণ বাতাস বেরোনোর সময় পেট ভিতরের দিকে টেনে নিতে হবে। এক রাউন্ড সম্পূর্ণ হল। এই ভাবে ৭–১০ রাউন্ড অভ্যাস করতে হবে।
● অভ্যাস করার সময় শ্বাস ও শরীরের গতি যেন ধীর স্থির হয় এবং শিরদাঁড়ার স্ট্রেচিং সঠিক থাকে, সে দিকে খেয়াল রাখবেন।
আরও পড়ুন:
সতর্কতা
মনে রাখবেন, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় এই আসনটি করবেন না যেন।
কেন করবেন?
এই আসনটিতে সম্পূর্ণ শিরদাঁড়া উপর-নীচ দু’দিকেই সঞ্চালিত হয়। মার্জারাসন সতর্কতার সঙ্গে অভ্যাস করলে মেরুদণ্ডের সঙ্গে আটকে থাকা সায়টিকা নার্ভ উজ্জীবিত হয় বলে ব্যথা কমে। পেটের পেশির স্ট্রেচিং হওয়ার পাশাপাশি নিতম্ব ও পায়ের রক্ত সঞ্চালন বাড়ে। যে সব মহিলার ঋতুচক্রের সমস্যা আছে ও এই সময়টায় ক্র্যাম্প হওয়ার জন্যে ব্যথায় কষ্ট পান, তাঁদের কষ্ট কমাতে এই আসনটি অত্যন্ত উপযোগী।