সময়ের সঙ্গে ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা’ (এআই)-র উপর মানুষের নির্ভরতা বাড়ছে। বিভিন্ন চ্যাটবটের সঙ্গে আদানপ্রদানের মাধ্যমে কাজের সুবিধা যেমন হচ্ছে, তেমন ঝুঁকিও বাড়ছে। সম্প্রতি ‘মেটা এআই’-এর বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত ফোন নম্বর ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে।
সম্প্রতি ইংল্যান্ড নিবাসী এক ব্যক্তি ট্রেনে সফর করবেন বলে ঠিক করেন। স্যাডেলওয়র্থ স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে ট্রেন লেট করছে কি না জানতে তিনি মেটা এআই-এর কাছে ‘ট্রান্সপেনি এক্সপ্রেস’-এর কাস্টমার কেয়ারের নম্বর চান। চ্যাটবট দ্রুত তাঁকে সেই নম্বরও দিয়ে দেয়। কিন্তু জানা যায়, নম্বরটি আসলে ২৭৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত অক্সফোর্ডশায়ারের একজনের ব্যক্তিগত ফোন নম্বর, যা হোয়াট্সঅ্যাপের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল না! বিষয়টি নিয়ে সমাজমাধ্যমে ইতিমধ্যেই চর্চা শুরু হয়েছে।
ব্যক্তিগত ফোন নম্বর যদি মেটা ফাঁস করতে থাকে, তাহলে অনেকেরই আশঙ্কা, ব্যক্তির নাম, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বা পাসওয়ার্ডের মতো সংবেদনশীল তথ্যও ফাঁস হয়ে যেতে পারে। এখন হোয়াট্সঅ্যাপের মধ্যেই মেটা ব্যবহার করার সুযোগ রয়েছে। পাশাপাশি আলাদা অ্যাপও রয়েছে। মার্ক জ়ুকেরবার্গ মেটাকে ‘বিনামূল্যে পাওয়া সবথেকে বুদ্ধিমান এআই অ্যাসিসট্যান্ট’ হিসেবে উল্লেখ করলেও, সাবধান না হলে সমস্যায় পড়তে পারেন যে কেউ।
আরও পড়ুন:
সমস্যা থেকে বাঁচতে বর্তমান সময়ে এআই নির্ভরতা কমানো সবথেকে ভাল পদক্ষেপ। কিন্তু প্রযুক্তি এবং সময়ের দাবিতে অনেকের ক্ষেত্রেই তা করা সম্ভব নয়। সঙ্গে রয়েছে চ্যাট জিপিটি, গুগ্লের জেমিনি বা এক্স-এর গ্রকের মতো ‘নির্ভরযোগ্য’ এআই-এর হাতছানি। মেটা এআই চ্যাটবট ব্যবহারের ক্ষেত্রে কয়েকটি সতর্কতা খেয়াল করা উচিত। সে ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হওয়ার সম্ভাবনা কমবে।
কী কী করা যেতে পারে
১) ব্যক্তিগত ফোন নম্বর, ঠিকানা বা ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত তথ্য এআই চ্যাটবটের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া উচিত নয়।
২) ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম বা মেসেঞ্জারের মতো মাধ্যমে এআই-এর অ্যাকসেস নিয়ন্ত্রিত (সেটিংস>প্রাইভেসি> ইন্টারাকশন উইদ এআই) রাখা উচিত।
৩) ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হলে অবিলম্বে অ্যাপে অভিযোগ জানানো উচিত।
৪) প্রোফাইল, ফোন নম্বর এবং কনট্যাক্টের ক্ষেত্রে সেটিংস থেকে ‘অনলি মি’ বা ‘ফ্রেন্ডস্ অনলি’ ফিচার দুটি বেছে নেওয়া যেতে পারে।
৫) মেটা এআই অ্যাপ ব্যবহার করলে ‘ডেটা অ্যান্ড প্রাইভেসি’ থেকে যাবতীয় পাবলিক প্রম্পটকে ‘ফর ইউ’ করে রাখা উচিত।
৬) অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসা বেড়ে গেলে বুঝতে হবে, আপনার ফোন নম্বর ফাঁস হয়েছে। সে ক্ষেত্রে ফোনে স্প্যাম ব্লকার অ্যাপ ব্যবহার করলে সুবিধা হবে।