বিমানযাত্রার সময় কে না আসনে পিঠ এলিয়ে আরাম করে বসতে চান? বিশেষত লম্বা যাত্রা হলে, যাত্রীরা তো আর সারা ক্ষণ পিঠ সোজা করে বসে থাকতে পারেন না। কিন্তু বিমানযাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য তা কি ভাল?
অহমদাবাদ বিমান দুর্ঘটনার ভয়াবহ স্মৃতি উসকে দিয়েছে এমন অনেক প্রশ্ন। মৃত্যু হয়েছে ২৪১ জনের। অথচ অদ্ভুত ভাবে প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন বিমানের আপাৎকালীন দরজার সামনের আসনে থাকা বিশ্বাসকুমার রমেশ। আসনই কি বাঁচাল তাঁকে? কারণ খুঁজছেন অনেকেই।
তবে সেই সঙ্গে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে বিমানে যাত্রীদের বিমানসংস্থার নির্দেশিকা মানার বিষয়টিও। নিরাপত্তার খাতিরেই বিমানে নির্দিষ্ট ভঙ্গিতে বসা-সহ একাধিক নিয়মকানুন থাকে। যেমন বিমান ওঠা এবং নামার সময় যাত্রীদের পিঠ সোজা করে সিট বেল্ট বেঁধে বসতে বলা হয়। কোনও আসন যদি হেলানো থাকে বিমান সেবিকারা নিজেরা এসে, সেই আসনটি সোজা করে দিয়ে যান।
কিন্তু তার পরে? আসন হেলিয়ে পা ছডিয়ে, গা এলিয়ে আরাম করে বসতে পারেন কি যাত্রীরা? নিরাপত্তার শর্ত অনুযায়ী, পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে, মাঝ আকাশে কোনও রকম ঝঞ্ঝার উদয় না হলে আসনে হেলান দিয়ে আরাম করে যাত্রীদের বসায় কোনও সমস্যা নেই, জানাচ্ছেন উ়ড়ান প্রশিক্ষণ সংস্থার কর্ণধার কর্নেল রাজগোপালন পি।
তবে আদবকায়দা অনুযায়ী তা কতটা সঠিক, এ নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে। বেশির ভাগ বিমানে পা রাখার স্থান এমনিতেই কম। বিশেষত স্বল্প দূরত্বে যে সব বিমান যাতায়াত করে সেগুলিতে তো বটেই। ফলে সিট হেলিয়ে বা গা এলিয়ে পা ছড়িয়ে বসলে সমস্যা হতে পারে অন্য যাত্রীর। বিমানে যাতায়াত করতে হলে কিছু আদবকায়দা এবং সহযাত্রীর সুবিধা-অসুবিধার কথাও মাথায় রাখা প্রয়োজন, মনে করাচ্ছেন কর্নেল রাজাগোপালন। তাই আরাম করতে হলে একটু বুঝেশুনেই তা করা দরকার।
তবে সাধারণ সময়ে আরাম করায় বাধা না থাকলেও, খাওয়ার সময় আসন সোজা করে বসাটাও নিয়ম। কারণ না হলে, পিছনের যাত্রীর খেতে অসুবিধা হবে। সাধারণত ইকোনমি ক্লাসে প্রতি আসনের পিছন দিকে খাবারের ট্রে জোড়া থাকে। আসনটি সোজা না থাকলে পিছনের যাত্রী খাবার খেতে পারবেন না।
তবে যদি আবহাওয়া আচমকা খারাপ হয়ে যায়, বিমান চালক মনে করেন, বিমানে ঝাঁকুনি হতে পারে বা অন্য কোনও বিশেষ পরিস্থিতির উদয় হয়, সে ক্ষেত্রে সিট বেল্ট বেঁধে বসার নির্দেশিকা এলে দ্রুত তা মানতে হবে। কারণ, বিষয়টির সঙ্গে জুড়ে থাকে নিরাপত্তা।
যেমন বিমান ওঠা এবং নামার সময় বিমানকর্মীরা হাতের উপর ভর দিয়ে বসেন। দুই হাত থাকে ঊরুর নীচে। তার কারণ হল, ঝাঁকুনি হলে এ ভাবে শরীর ভারসাম্য বজায় রাখা সহজ হয় এবং চট করে হাতে চোট লাগে না। তেমনই সিট বেল্ট বাঁধা, মেরুদণ্ড সোজা রেখে বসাও নিরাপত্তাজনিত কারণেই জরুরি হয়ে পড়ে।