অহমদাবাদের বিমান দুর্ঘটনা অনেক প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। সেই সঙ্গে চর্চায় এসেছে বিমানের সুরক্ষা সংক্রান্ত কৌশল, সঙ্কেতও। জানা গিয়েছে , ভয়াবহ ঘটনাটি ঘটার আগে ভেঙে পড়া বিমানের চালক ‘মেডে কল’ করেছিলেন।
ঠিক যেমন সুরক্ষার স্বার্থে বিমান চালকদের সঙ্কেতবার্তা রয়েছে, তেমনই বিমানকর্মীদের জন্যও রয়েছে কিছু নিয়ম। বসা, দাঁড়ানোর নির্দিষ্ট ভঙ্গি। বিমান যদি দুর্ঘটনার মুখে পড়ে, জরুরি অবস্থা তৈরি হয়, তখন কী করণীয় সে কৌশলও যাত্রীদের শেখানো হয়। আর তা করা হয় বিমান রানওয়ে ছাড়ার আগেই।
কিন্তু কখনও খেয়াল করে দেখেছেন কি, উড়ান রানওয়ে ছাড়ার আগের মুহূর্তে সিট বেল্ট বেঁধে নির্দিষ্ট আসনে বিমানকর্মীরা কী ভাবে বসেন? তাঁদের দুই হাত থাকে ঊরুর নীচে। কার্যত দুই হাতের তালুতে চাপ দিয়ে বসেন তাঁরা। কখনও অবশ্য দেখা যায় ঊরুর উপরে দুই হাত রাখতে। কিন্তু তাঁরা কখনও চেয়ারের হাতল ধরে বসেন না!
আরও পড়ুন:
এমন ভাবে কেন বসেন তাঁরা? ভারতীয় উড়ান প্রশিক্ষণ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা এবং কর্নধার কর্নেল রাজ গোপালন পি জানাচ্ছেন, নিরাপত্তা জনিত প্রোটোকল মেনেই এই কাজ করেন তাঁরা। হাতের উপর চাপ দিয়ে বসার ফলে ঝাঁকুনি বা আপৎকালীন পরিস্থিতিতে আঘাত এড়ানো যায়। বিশেষত হাত আলগা ভাবে এলিয়ে রাখলে আচমকা বিমান আকাশপথে দুর্যোগের মুখে পড়লে ঝাঁকুনিতে আঘাত লেগে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে। বরং হাত শক্ত করে রাখলে এবং ঊরুর নীচে নির্দিষ্ট ভঙ্গিতে রেখে বসলে বিমান ওড়ার সময় হেলে পড়ে যাওয়ার ভয় থাকে না। এতে শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে সুবিধা হয়।
বিমানযাত্রীদের শুধু পরিষেবা দেওয়াই নয়, বিপদসঙ্কুল পরিস্থিতিতে তাঁদের নিরাপদে বার করার গুরুদায়িত্ব থাকে বিমানকর্মীদের। বিমান ওড়ার আগে তাঁরা শুধু যাত্রীদের নিয়ম মেনে কী করণীয় তা বোঝান না, আসল সময়ে সেই কাজটি তাঁদের করতেও হয়।
অহমদাবাদের বিমান দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২৭৪ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। মৃত্যুমিছিলের মধ্যেও অদ্ভুত ভাবে বেঁচে গিয়েছেন এক যাত্রী। নিরাপত্তা সংক্রান্ত এই নির্দেশিকার কোনটি যে বিপদের সময় কোন যাত্রীর প্রাণ রক্ষা করতে পারে, তা আগাম বলা সম্ভব নয়। সে কারণেই বিমান সংক্রান্ত নির্দেশিকা গুরুত্ব দিয়ে অনুসরণ করা প্রয়োজন, বলছেন বিমান প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত কর্মকর্তারা।