নভেল করোনা ভাইরাসের থেকেও ভয়ানক অসুখের নাম ক্যানসার। আর এ রোগের প্রকোপ ক্রমশ বাড়ছে। দু’বছর আগে আমাদের দেশে ক্যানসার আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১১ লক্ষ ৬০ হাজার, ২০২০ শেষ হওয়ার আগেই তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ লক্ষ ৯০ হাজারে। আশঙ্কার কথা শুনিয়েছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) ও ব্যাঙ্গালুরুর ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ ইনফরমেটিক্স অ্যান্ড রিসার্চের যৌথ সমীক্ষা। ভারতবর্ষে ক্যানসার আক্রান্তের সংখ্যা ২০২৫-এ গিয়ে পৌঁছবে ১৫ লক্ষ ৭০ হাজারে। এ দেশে মেয়েদের মধ্যে ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা তুলনামূলক ভাবে অনেকটাই বেশি। ক্যানসার চিকিৎসায় রেডিওথেরাপির ব্যবহার আবিষ্কারক মেরি ক্যুরির জন্মদিনে আমাদের দেশে পালন করা হচ্ছে জাতীয় ক্যানসার দিবস। এই মারাত্মক অসুখটি সম্পর্কে সাধারণ মানুষের সচেতনতা বাড়াতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক ২০১৪ সালে এই দিনটিকে জাতীয় ক্যানসার দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে আমাদের দেশে প্রতি ১০ জনের ১ জন ক্যানসার আক্রান্ত এবং প্রতি ১৫ জনের ১ জন ক্যানসারের কারণে মারা যান। অচিরেই ক্যানসার এ দেশে মহামারির আকার নিতে চলেছে বলে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা। তবে একটু সচেতন হলেই কর্কট রোগকে রুখে দেওয়া যায়। প্রয়োজন, প্রত্যেকের সচেতনতা। চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যানসার ইনস্টিটিউটের অধিকর্তা ক্যানসার সার্জন জয়ন্ত চক্রবর্তী জানালেন যে, ক্যানসারের চিকিৎসা এখন অনেক এগিয়ে গেছে। কলকাতাতেই বিশ্বমানের ক্যানসারের চিকিৎসার যাবতীয় ব্যবস্থা আছে। তবে চিকিৎসকের কাছে পৌঁছতে হবে রোগের শুরুতেই।
অসুখের প্রাথমিক উপসর্গ সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকলে এবং সেলফ মেডিকেশন বন্ধ করে সঠিক চিকিৎসার সাহায্য নিলে রোগের বিস্তার আটকে দেওয়া যায়। জয়ন্ত চক্রবর্তী আরও জানালেন যে, রোজকার জীবনযাত্রায় কিছুটা অদল বদল করতে পারলে দূরে সরিয়ে রাখা যায় কর্কট রোগের বিস্তার। ক্যানসার আটকাতে প্রথমেই সিগারেট সহ তামাকের নেশা বরাবরের মত ছাড়তে হবে। একই সঙ্গে মাত্রাতিরিক্ত মদ্যপানও বন্ধ করা দরকার। যে কোনও নেশাই ক্যানসার সহ নানান রোগের আঁতুড়ঘর। সাবেকি জীবন যাত্রার পরিবর্তে আমূল বদলে যাওয়া জীবন যাপন ক্যানসার ও অন্যান্য লাইফস্টাইল ডিজিজকে ডেকে আনছে। এর মধ্যে সব থেকে বিপজ্জনক হল বাড়তি ওজন। নিয়মিত ফিজিক্যাল এক্সারসাইজ ও আসন করে ওজন ঠিক রাখার পাশাপাশি বাড়িতে তৈরি টাটকা হালকা খাবার খেতে হবে।