অপুষ্টিতে ভুগছে বালুরঘাট ব্লকের অন্তত সাড়ে তিনশো শিশু। গত জুন মাসে অঙ্গনওয়াড়ি স্তরে শিশুদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে এই তথ্য সামনে এসেছে। মূলত সরকারের সুসংহত শিশুবিকাশ প্রকল্পের অধীন বালুরঘাট ব্লকের ১১টি গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার ৪৪৪ টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের আওতাভুক্ত পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের উপর ওই সমীক্ষা চালানো হয়। তাতেই ওই তথ্য উঠে এসেছে বলে জানা গিয়েছে। এই রিপোর্ট পেয়ে উদ্বিগ্ন রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর।
গতমাসে গঙ্গারামপুর সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই রিপোর্ট পেয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর। তারপরেই প্রশাসনিক মহলেও নড়াচড়া শুরু হয়। গত জুন মাসের ওই সমীক্ষার পর জুলাই-অগস্ট দু’মাস কেটে গিয়েছে। অপুষ্টিতে ভোগা শিশুর সংখ্যা বেড়ে চলেছে বলে দফতরের আধিকারিকরাই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। অঙ্গনওয়াড়ি স্তরেও মিড ডে মিল চালু থাকায় সেই প্রকল্পেরর মান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে বালুরঘাট ব্লক প্রশাসন গ্রাম স্তরে সবুজের অভিযান নামে এক কর্মসূচি শুরু করেছে। আগামীকাল, মঙ্গলবার থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টানা ১৭ দিন ধরে বালুরঘাট ব্লকের ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় শিবির করে শিশুদের পুষ্টি এবং মায়েদের সচেতনতার উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। বালুরঘাট ব্লকের বিডিও শুভ্রজিত গুপ্ত বলেন, “প্রায় ৩৫০ জন শিশুকে চিহিৃত করা হয়েছে। যারা অতি অপুষ্টিতে ভুগছেন। এখনই এদের প্রতি নজর না দিলে পরবর্তীতে ওই শিশুরা কেউই প্রাথমিক স্কুল অবধি পৌঁছতে পারবে না।” বিডিও জানান, ওই অভিযানে স্বাস্থ্য দফতর, পঞ্চায়েত এবং আইসিডিএস বিভাগকে যুক্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার বালুরঘাট ব্লকের চকভৃগু, বোল্লা ও অমৃতখন্ড গ্রামপঞ্চায়েতে শিবির করে সবুজের অভিযান কর্মসূচি শুরু হবে। ওই শিবির থেকে অতি অপুষ্ট শিশুদের বালুরঘাট হাসপাতালের পুষ্টি পুনর্বাসন কেন্দ্রে ভর্তি করে চিকিত্সা করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে শুভ্রজিতবাবু জানিয়েছেন।
জেলার শিশু বিকাশ প্রকল্প আধিকারিক দিলীপ বিশ্বাস বলেন, “অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি থেকে মা ও শিশুদের পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ করা হয়। কিন্তু খাবারই শিশুর পুষ্টির একমাত্র মাপকাঠি নয়। স্বাস্থ্য সচেতনতা ও সময়ে শিশুর টিকাকরণের বিষয়ে সমান গুরুত্ব দিতে হবে।” তাঁর দাবি, গ্রামের অনেক মা সকালে উঠে কাজে চলে যাওয়ায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের পরিষেবা নিতে পারেন না। বাড়ির উঠোনে, মাঠে গোটা দিন শিশুকে কার্যত অবহেলায় কাটাতে হয়।
যদিও, জেলার বহু অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শিশুদের খাবার নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। খাবারের মান নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেই বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। বালুরঘাট ব্লক মেডিক্যাল অফিসার বিবেকানন্দ বিশ্বাস বলেন, “অপুষ্টির শিকার ওই শিশুদের চিকিত্সার সঙ্গে গ্রামস্তরে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধিতেও পঞ্চায়েতকে সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy