Advertisement
E-Paper

এনসেফ্যালাইটিসে মৃত্যু বাড়ছে, মেডিক্যালের পরিষেবা বেহালই

চার দিন ধরে রাজ্যের স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ঘাঁটি গেড়ে বসে রয়েছেন। কিন্তু হাসপাতালের পরিষেবার হাল ফিরছে না। কোথাও পানীয় জলের আকাল। কোথাও দূষণের অভিযোগ উঠছে। প্রয়োজনীয় ওষুধ-পথ্য অমিল হওয়ার নালিশও বিস্তর। নানা ওয়ার্ডে নিয়মিত চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের দেখা মিলছে না বলেও অভিযোগ করেছেন বেশ কয়েকজন রোগীর আত্মীয়-স্বজনেরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৪ ০২:৪০
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে রোগীদের পাশে কংগ্রেস নেতা মানস ভুঁইয়া ও বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ।  ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে রোগীদের পাশে কংগ্রেস নেতা মানস ভুঁইয়া ও বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

চার দিন ধরে রাজ্যের স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ঘাঁটি গেড়ে বসে রয়েছেন। কিন্তু হাসপাতালের পরিষেবার হাল ফিরছে না। কোথাও পানীয় জলের আকাল। কোথাও দূষণের অভিযোগ উঠছে। প্রয়োজনীয় ওষুধ-পথ্য অমিল হওয়ার নালিশও বিস্তর। নানা ওয়ার্ডে নিয়মিত চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের দেখা মিলছে না বলেও অভিযোগ করেছেন বেশ কয়েকজন রোগীর আত্মীয়-স্বজনেরা। অথচ হাসপাতালের ওয়ার্ডে সপার্ষদ নেতাদের ভিড় কিন্তু রোজই উপচে পড়েছে। কংগ্রেস এবং বিজেপি মৃত ও অসুস্থদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি তুলেছে। তা নিয়ে শাসক তৃণমূলের সঙ্গে শুরু হয়ে গিয়েছে তর্কাতর্কিও।

বুধবার প্রথমে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। তিনি ওয়ার্ডে গেলে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার বিজয় থাপার সামনেই যোগেশ দাস, সুকুমার ধর, জীবেশ বর্মনদের মতো কয়েকজন রোগীর পরিজনেরা হাসপাতালে পরিষেবার অভাব নিয়ে অভিযোগ করেন। রাহুলবাবু জানান, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক এনসেফ্যালাইটিস মোকাবিলায় সাহায্য করতে চেয়ে রাজ্যকে চিঠি পাঠিয়েছে, অথচ রাজ্য সেই সাহায্য নিতে চাইছে না।

এ দিন মানস ভুঁইয়ার নেতৃত্বে কংগ্রেসের পাঁচ জন বিধায়কের একটি দলও ওই হাসপাতালে যান। তাঁদের দাবি, বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত মেডিক্যাল দলের অন্তত ১৫ দিন উত্তরবঙ্গে থাকা দরকার। তাঁরা জানান, হাসপাতালে ঘুরে যা দেখলেন, তা নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেবেন। সম্প্রতি তিন স্বাস্থ্যকর্তাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে। মানসবাবুর বক্তব্য, এখন যখন চিকিৎসকদেরই সব থেকে বেশি দরকার, তখন ওই তিন জনকে সাসপেন্ড করা উচিত হয়নি। সম্প্রতি সুপারের পদ থেকে সাসপেন্ড হওয়া অমরেন্দ্র সরকারকে ফেরানোর দাবিতে এ দিন চিকিৎসকদের একটি সংগঠনের তরফে পোস্টার সাঁটা হয় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে।

এনসেফ্যালাইটিসের উপসর্গ নিয়ে এ দিনও মেডিক্যাল কলেজে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁদের মধ্যে বীণা প্রধানের (৪০) বাড়ি বানারহাটের বন্ধ রেডব্যাঙ্ক চা বাগান। মারা গিয়েছেন ইটাহারের বাসিন্দা নফু বর্মন (৬৫), বিধাননগরের বিবেকানন্দপল্লির সুধীর সরকার (৬৫), জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জের সুখবালা ভর (৬০) এবং দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের বাসিন্দা যোগমায়া সরকারও (৩৬)।

এমন মৃত্যুর মিছিল অব্যাহত থাকলেও হাসপাতালের দূষণ চিত্র কিছুতেই বদলায় না। খোলা মাঠে বিছিয়ে রেখে, রোদে শুকিয়ে নিয়ে চাদর পাতা হয় রোগীর বিছানায়। হাসপাতালের মর্গ লাগোয়া যে মাঠে চাদর শোকানো হয়, সেই মাঠে দিনভর গরু, কুকুর, বেড়াল ঘুরে বেড়ায়। মাঠে বিছিয়ে রাখা চাদরের সঙ্গে জীবাণুও ওয়ার্ডে সংক্রমিত হচ্ছে বলে অভিযোগ। শুধু তা-ই নয়, এদিনই হঠাৎ জমে থাকা বর্জ্য জড়ো করে তা পুড়িয়ে নষ্ট করার জন্য আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। সেই ধোঁয়া মেডিসিন ওয়ার্ডে ঢুকে পড়ায় রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয় বলে অভিযোগ। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা জানান, এমন হওয়া উচিত নয়। মেডিক্যাল কলেজে যন্ত্রে কাপড় কাচা ও শুকানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

encephalitis uttarbanga medical college manas bhunia rahul sinha
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy