সুপারকে ঘিরে বিক্ষোভ। চুচুঁড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে। ছবি: তাপস ঘোষ।
এক সদ্যোজাতর মৃত্যুতে চিকিৎসকের গাফিলতির অভিযোগ তুলে হাসপাতাল সুপারকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাল মৃতের পরিবারের লোকজন। শুক্রবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে। হাসপাতালের সুপার সুভাষ মণ্ডল বলেন, ‘‘সব মৃত্যুই দুঃখজনক। তবে প্রসূতির পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আমাদের হাসপাতালের পক্ষ থেকে একটি বিভাগীয় তদন্ত করা হবে।” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বলেন, “প্রসূতির পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে দুই সদস্যের এক তদন্ত কমিটি ঘটনার তদন্ত শুরু করেছেন।”
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে গিয়েছে, চুঁচুড়ার খড়ুয়াবাজার ঠাকুরগলির বাসিন্দা শীলা দাস ১৯ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার রাত ১১টা নাগাদ প্রসব বেদনা নিয়ে চুঁচুড়া হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সেই সময় হাসপাতালের তরফে রোগিণীর পরিবারকে জানানো হয়েছিল বাচ্চা ভালই আছে। গভীর রাতে রোগিণীর প্রসব বেদনা বাড়লে তাঁকে দেখার জন্য কোনও চিকিৎসককে ডাকা হয়নি বলে অভিযোগ পরিবারের। এমনকী রাতেই রোগিণীকে অস্ত্রোপচারের জন্য নিয়ে যাওয়া হলেও কোনও চিকিৎসক না আসায় অস্ত্রোপচার করা যায়নি বলেও অভিযোগ। রাতভর প্রসব যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকেন রোগিণী। পরিবারের বক্তব্য, শুক্রবার সকালে জনৈক স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ রোগিণীকে পরীক্ষা করে তাঁদের জানান, বাচ্চা এবং মা দু’জনেই ভাল আছে।
সকাল ৮টা নাগাদ বিনা অস্ত্রোপচারেই শীলাদেবীর একটি পুত্র সন্তান জন্মায়। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, বেশ কিছুক্ষণ পরে চিকিৎসকের তরফে তাঁদের জানানো হয় যে শীলাদেবী একটি মৃত সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। খবর শুনে ক্ষোভে ফেটে পড়েন পরিবারের লোকজন। চিকিৎসকের গাফিলতিতে সদ্যোজাতের মৃত্যু হয়েছে এই অভিযোগ তুলে রোগিণীর বাড়ির লোকজন হাসপাতালের সুপারকে সকাল ১১টা থেকে ঘেরাও ও বিক্ষোভ শুরু করেন। বেলা ১টা পর্যন্ত ঘেরাও চলার পর সুপার বিভাগীয় তদন্তের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ থামে। ইতিমধ্যে অশান্তি এড়াতে চুঁচুড়া থানা থেকে পৌঁছে যায় বিশাল বাহিনীও। প্রসূতির পরিবারের পক্ষ থেকে ওই স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞের শাস্তির দাবিতে চুঁচুড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।
শীলাদেবীর স্বামী দিব্যেন্দুবাবু বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার রাতে স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর থেকে তাঁকে কোনও চিকিৎসক দেখেননি। শুক্রবার সকালে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ উমাপদ মণ্ডল প্রথমে দেখে বলেছিলেন প্রসূতি ও বাচ্চা দু’জনে ভালই আছে। কিন্তু কিছুক্ষণ পরে ফের এসে জানান যে, শিশুটি মৃত অবস্থায় জন্ম নিয়েছে। আমরা ওই চিকিৎসকের শাস্তির দাবি করেছি।”
এদিকে যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই চিকিৎসক উমাপদ মণ্ডল ঘটনার পরই হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান। তাঁর মোবাইল ফোনে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু মোবাইলটি সুইচ অফ ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy