স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গেলে চিকিৎসকের দেখা মেলে না। ছোটখাটো রোগ নিয়ে গেলেও বড় হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এমনই নানা অভিযোগ তুলে বরাবাজারের সিন্দরি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দরজায় তালা ঝুলিয়ে দিলেন বাসিন্দারা। বরাবাজার-মানবাজার রাস্তায় ঘণ্টাদুয়েক ধরে তাঁরা অবরোধও শুরু করেন। শনিবার সকালে এই বিক্ষোভ চলে। পরে পুলিশের আশ্বাসে বাসিন্দারা অবরোধ তুলে নেন। খুলে দেওয়া হয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের তালা।
সিন্দরি গ্রামের বাসিন্দা আশিস মাহাতো, সুচাঁদ মাহাতোদের অভিযোগ, “সিন্দরি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অন্তর্বিভাগ রয়েছে। দু’জন চিকিৎসক দায়িত্বে ছিলেন। কিন্ত মাস তিনেক আগে এক চিকিৎসক অন্যত্র বদলি হয়ে চলে যান। তার পর থেকে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। স্মারকলিপি দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছি, কিন্তু চিকিৎসক পাওয়া যায়নি। উল্টে একমাত্র চিকিৎসক হঠাৎ এক সপ্তাহ আগে ছুটি নিয়ে চলে গেছেন।” তাঁদের দাবি, এখন ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভরসা একজন মাত্র হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক। কিন্তু তিনি এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রসব করাতে পারেন না। ফলে ধুঁকতে থাকা এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র কার্যত অচল হয়ে পড়েছে।
শনিবারই বরাবাজারের বান্দোয়ান গ্রাম থেকে সুধীর মাহাতো দেড় বছরের অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে চিকিৎসা এসেছিলেন। শুকনো মুখে তিনি বলেন, “শুনছি ডাক্তারবাবু নেই। জ্বর গায়ে ছেলেকে নিয়ে এখন কোথায় যাব?” অযোধ্যাডি গ্রাম থেকে ন’মাসের ছেলেকে নিয়ে অসিত সোরেন এসেছিলেন। তিনি বলেন, “ছেলেটার দু’দিন ধরে জ্বর, পেট খারাপ। কাকে যে দেখাই?” স্বাস্থ্যকেন্দ্রের হোমিও চিকিৎসক পিন্টু বিশ্বাস বলেন, “স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তালা দিয়ে দেওয়ায় ঢুকতে পারছি না।” তিনি বাইরে আটকে ছিলেন। সিন্দরি পঞ্চায়েতের প্রধান বিশ্বজিৎ মাহাতো বলেন, “এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভরসায় বরাবাজার, মানবাজার ১ ও মানবাজার ২ ব্লকের চারটি পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা নির্ভরশীল। এমনকী লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের গ্রাম থেকেও রোগীরা এখানে আসেন। সিন্দরি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সমস্যার কথা প্রশাসনের অনেককে জানিয়েছি। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি।”
বরাবাজার বিএমওএইচ পরিতোষ সোরেন বলেন, “এই ব্লকে প্রয়োজনের তুলনায় চিকিৎসক কম। ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সমস্যার কথা জেলা স্বাস্থ্য কর্তাদের জানিয়েছি। দেখা যাক।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy