Advertisement
E-Paper

ছানি কাটাতে গিয়ে চোখ নষ্ট সরকারি হাসপাতালে

সরকারি হাসপাতালে ছানি কাটাতে গিয়ে চোখ নষ্ট হওয়ার অভিযোগ উঠল মালবাজারে। গত ১৬ অগস্ট ওই মালবাজার মহকুমা হাসপাতালে ৫ জন রোগীর একটি করে চোখের ছানি কাটানো হয়। তাঁদের চার জন বৃদ্ধা এবং এক জন বৃদ্ধ। সকলেই দারিদ্রসীমার নিচে বসবাসকারী পরিবারের সদস্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:০৭

সরকারি হাসপাতালে ছানি কাটাতে গিয়ে চোখ নষ্ট হওয়ার অভিযোগ উঠল মালবাজারে। গত ১৬ অগস্ট ওই মালবাজার মহকুমা হাসপাতালে ৫ জন রোগীর একটি করে চোখের ছানি কাটানো হয়। তাঁদের চার জন বৃদ্ধা এবং এক জন বৃদ্ধ। সকলেই দারিদ্রসীমার নিচে বসবাসকারী পরিবারের সদস্য। ছানি কাটানোর পরে বাড়ি চলে যান তাঁরা। কিন্তু এক সপ্তাহের মধ্যে পাঁচ জনের চোখেই সংক্রমণ দেখা দেয়। রোগীরা ফের হাসপাতালে গেলে সেখান থেকে তাঁদের শিলিগুড়িতে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে তৈরি নার্সিংহোমে স্থানান্তর করা হয়। চোখের চিকিৎসার জন্য ওই নার্সিংহোমের সঙ্গে স্বাস্থ্য দফতরের চুক্তি রয়েছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান। কিন্তু সংক্রমণ তীব্র হওয়ায় গত ২৯ অগস্ট চার জনের ছানি আক্রান্ত চোখ অস্ত্রোপচার করে বাদ দেওয়া হয়েছে।

মালবাজার মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসার গাফিলতিতেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে জলপাইগুড়ি জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকের তরফে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। মালবাজারের মহকুমাশাসক জ্যোতির্ময় তাঁতি বলেন, “কেন এমন ঘটল, তা তদন্ত হলেই স্পষ্ট হবে।” জলপাইগুড়ির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধা জানান, উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-২ পূরণ শর্মার নেতৃত্বে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেন, “মালবাজার মহকুমা হাসপাতালে ছানির অস্ত্রোপচার সাফল্যের সঙ্গেই হচ্ছে। প্রতিমাসে গড়ে ১০০ জন ওই ধরনের রোগীর চিকিৎসা হয়। ৫ জনের ছানি অস্ত্রোপচারের পর চোখে সংক্রমণ কী ভাবে হল তা পরিষ্কার নয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

মালবাজার হাসপাতালের সুপার মাসুদ আলি বলেন, “জেলা স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগে তদন্ত কমিটি করে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হাসপাতালে ছানির চিকিৎসার সময় যন্ত্রাংশে কোনও সমস্যা ছিল না, রোগীরা বাড়ি চলে যাওয়ার পরে কিছু ঘটেছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” যাঁদের চোখ বাদ দিতে হয়েছে তাঁরা হলেন খতেজা খাতুন, আমিরুল ইসলাম, সরুবালা রায়, জাবেদা বেওয়া। তাঁদের সঙ্গে হামিদা খাতুনের চোখেও ছানির চিকিৎসা করা হয়েছিল। তাঁর চোখেও সংক্রমণ হয়েছে। ওই রোগীরা সকলেই বর্তমানে শিলিগুড়িতে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ওই নার্সিংহোমে ভর্তি। পুরো ঘটনা জানাতে রোগীর আত্মীয়রা মালবাজার মহকুমা হাসপাতালের সুপার এবং রোগী কল্যাণ সমিতির সভাপতি তথা মহকুমাশাসক জ্যোতির্ময় তাঁতির সঙ্গে দেখা করেন। তাঁদের কাছে অভিযোগ জানান। লাটাগুড়ি এলাকার বাসিন্দা জাবেদা বেওয়ার ছেলে আমিরুল ইসলাম বলেন, “মা যাতে ভাল দেখতে পান সে জন্য হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম। সেখানে চিকিৎসার পর তাঁর একটা চোখ বাদ দিতে হওয়ার ঘটনা মেনে নিতে পারছি না।”

শিলিগুড়ির যে নার্সিংহোমে ওই ৫ জন রোগীকে পাঠানো হয় তার মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক কমলেশ গুহ বলেন, “চিকিৎসকরা জানিয়েছেন সংক্রমণের বিষয়টি আরও আগে জানা গেলে চিকিৎসা করিয়ে চোখ ভাল করা যেত। কিন্তু দেরিতে তারা রিপোর্ট করায় সংক্রমণ হওয়া চোখ বাদ দিতে হয়েছে।” তিনি জানান, বর্তমানে হামিদা খাতুন ভর্তি রয়েছেন। আজ, শুক্রবার বিশেষজ্ঞরা তাঁর চোখ পরীক্ষার পর জানাবেন অস্ত্রোপচার করে তা বাদ দিতে হবে কি না। তবে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁরও চোখের পরিস্থিতি ভাল নয়। যে চার জনের চোখ বাদ দিতে হয়েছে, তাঁরা বাড়ি ফিরে গিয়েছেন।

গত জুলাইয়ের শেষের দিকে কোচবিহারে এমজেএন হাসপাতালে ছানি কাটতে গিয়ে ৮ জনের চোখে সংক্রমণ হয়েছিল। পরে জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে চোখের চিকিৎসা করিয়ে তাঁরা সুস্থ হন। ওই ঘটনাতেও কোচবিহার জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে তদন্ত কমিটি গড়ে খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। তবে পরবর্তীতে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।

malbazar hopital cataract
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy