Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ছানি কাটায় গাফিলতি, শাস্তির দাবিতে স্মারকলিপি তৃণমূলের

ছানি কাটতে গিয়ে দৃষ্টিহীন হওয়া ৪ জন রোগীর পরিবারদের পাশে দাঁড়ায়নি কেউই। এখনও পর্যন্ত তাঁদের সঙ্গে দেখা করেননি জনপ্রতিনিধি বা প্রশাসনিক কর্তারা। শনিবার পুরো ঘটনায় গাফিলতি খুঁজে বের করে দোষীদের শাস্তির দাবিতে ও আক্রান্তদের পরিবারকে সাহায্যের দাবিতে মহকুমাশাসকের দফতরে স্মারকলিপি দিয়েছে তৃণমূল, যা ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ বলে কটাক্ষ করছে বিরোধীরা।

ছানি কাটাতে গিয়ে চোখ নষ্ট হয়েছে (ডান দিকে) আমিরুল ইসলাম, (বাঁ দিকে) জাবেদা বেওয়ার। নিজস্ব চিত্র।

ছানি কাটাতে গিয়ে চোখ নষ্ট হয়েছে (ডান দিকে) আমিরুল ইসলাম, (বাঁ দিকে) জাবেদা বেওয়ার। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালবাজার শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:২৪
Share: Save:

ছানি কাটতে গিয়ে দৃষ্টিহীন হওয়া ৪ জন রোগীর পরিবারদের পাশে দাঁড়ায়নি কেউই। এখনও পর্যন্ত তাঁদের সঙ্গে দেখা করেননি জনপ্রতিনিধি বা প্রশাসনিক কর্তারা। শনিবার পুরো ঘটনায় গাফিলতি খুঁজে বের করে দোষীদের শাস্তির দাবিতে ও আক্রান্তদের পরিবারকে সাহায্যের দাবিতে মহকুমাশাসকের দফতরে স্মারকলিপি দিয়েছে তৃণমূল, যা ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ বলে কটাক্ষ করছে বিরোধীরা।

সিপিএমের পক্ষ থেকে মালবাজার জোনাল কমিটির সম্পাদক চানু দে বলেন, “তৃণমূল স্মারকলিপি দিয়ে নিজেদের সরকারের দোষ ঢাকার চেষ্টা করছে।” ক্রান্তি ব্লক তৃণমূলের পক্ষ থেকে এ দিন মহকুমাশাসককে আক্রান্ত দুই রোগীর আত্মীয়দের নিয়ে স্মারকলিপি দেন ব্লক সভাপতি করুণাময় চক্রবর্তী এবং ক্রান্তি ব্লক তৃণমূল নেত্রী মহুয়া গোপ। করুণাময় চক্রবর্তী বলেন, “তৃণমূল সব সময় আক্রান্তদের পাশে রয়েছে। তাই আমরাই আক্রান্তদের সাহায্য এবং দোষীদের শাস্তির দাবি করছি।”

এ দিন একই দাবিতে স্মারকলিপি দেন লাটাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর মাটিয়ালি এলাকার বাসিন্দা তথা গাফিলতির শিকার আমিরুল ইসলাম এবং জাবেদা বেওয়ার পরিবারের সদস্যেরা। মালবাজার মহকুমাশাসকের দফতরে গিয়ে এ দিন কেঁদে ফেলেন জাবেদা বেওয়ার ছেলে আজিনূর ইসলাম। তিনি পেশায় ভ্যান চালক। আমিরুল ইসলামের ছেলে কৃষিজীবী খাদেমুল ইসলাম। তাঁরা বলেন, “দ্রুত ক্ষতিপূরণ না-পেলে আমরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।” ক্ষতিপূরণের বিষয়টি ঊধ্বর্র্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে দাবি করেন মালবাজারের মহকুমাশাসক জ্যোতির্ময় তাঁতি।

কেন চোখ হারানোর ৭ দিন পরেও রোগীদের বাড়িতে কোনও জনপ্রতিনিধি বা প্রশাসনিক কর্তারা যাননি, তা নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে এলাকায়। কুমলাই গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা খতেজা খাতুনের চোখও এ ভাবে নষ্ট হয়েছ। তাঁর বড় ছেলে খয়েরুজ্জামান, আজিনুর, খাদেমূলদের কথায়, ‘‘আমরা গরিব পরিবারের বাসিন্দা। তাই হয়তো কারও চোখে পড়ছে না। কেউ খোঁজ নেওয়ার প্রয়োজন মনে করছেন না।”

মালবাজারের সিপিএম পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কৌশল্যা রায় এদিন বলেন, “আমি নিয়মিত পরিবারগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। বাড়িতে না গেলেও আক্রান্তরা যাতে দ্রুত ক্ষতিপূরণ পেতে পারেন তাঁর জন্যে প্রশাসনিক স্তরেও কথা বলেছি।” মালবাজারের সিপিএম বিধায়ক বুলু চিক বড়াইকের কথায়, সরকারি কাজেই বিভিন্ন জেলা ঘুরতে হচ্ছে। দ্রুত ফিরে পরিবারগুলোর সঙ্গে দেখা করবেন বলে জানান। একই কথা জানান, নাগরাকাটার কংগ্রেস বিধায়ক জোসেফ মুণ্ডাও। বিজেপির তরফে আজ রবিবার অমিত শাহের কলকাতার সভার জন্যে ব্যস্ত থাকার কথা জানানো হয়। দলের দাবি, সে জন্যই জেলা-নেতারা ওই রোগীদের বাড়িতে যেতে পারেননি।

ওই চার জন ছাড়া মালবাজার হাসপাতালে ছানির চিকিৎসা করাতে গিয়ে চোখে সংক্রমণ হয় হামিদা খাতুনেরও। তাকে শিলিগুড়িতে চোখের চিকিৎসার সুবিধাযুক্ত নার্সিংহোমে পাঠানো হয়। চিকিৎসার পর এ দিন তাঁকে ছুটি দিলে তিনি ফিরে যান। মঙ্গলবার তাঁকে কেন্দ্রে এসে চোখ দেখাতে বলেছেন চিকিৎসক। চোখের পরিস্থিতি ভাল নয় বলে জানা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

cataract surgery malbazar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE