ফের কর্তব্যে গাফিলতি এবং অমানবিক আচরণের অভিযোগ উঠল সরকারি হাসপাতালে। এ বার ঝাড়গ্রামে।
অভিযোগ, কর্তব্যরত নার্স গুরুত্ব না দেওয়ায় এবং ডাকাডাকি সত্ত্বেও না আসায় রবিবার ভোরে ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে শৌচাগারের মেঝেতেই সন্তান প্রসব করেন এক তরুণী। তারপর মেঝেতেই টানা এক ঘণ্টা রক্তমাখা অবস্থায় নবজাতককে নিয়ে কাতরেছেন কবিতা গড়াই নামে ওই প্রসূতি। তারপর তাঁকে লেবার রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। শুধু তাই নয়, ওই প্রসূতির শাশুড়িকে দিয়ে শৌচাগারের মেঝে পরিষ্কার করানো হয় বলেও অভিযোগ।
অন্য এক সঙ্কটজনক প্রসূতিকে নিয়ে ব্যস্ত থাকায় কবিতার কাছে যেতে পারেননি বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত নার্স ঝর্না গঙ্গোপাধ্যায়। তবে প্রসূতির শাশুড়িকে দিয়ে শৌচাগার পরিষ্কার করানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ঝর্নাদেবী। হাসপাতালের ডেপুটি নার্সিং সুপার চন্দনা পাণিগ্রাহী আবার কর্মী-সঙ্কটের কথা বলছেন।
কবিতার চিকিৎসায় কিছুটা দেরি হয়েছে বলে মানছেন হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার প্রসূন ঘোষও। তিনি বলেন, “অনভিপ্রেত ঘটনা। তবে ওই প্রসূতিকে শয্যা ছাড়তে বারণ করা হয়েছিল। উনি নিজেই শৌচাগারে গিয়েছিলেন।” সেই সঙ্গে প্রসূনবাবু জানিয়েছেন, প্রসবের পরই এক চিকিৎসক শৌচাগারে গিয়ে শিশুটিকে পরীক্ষা করেন। ঝাড়গ্রামের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) স্বপন সরেন অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। আর রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথীর বক্তব্য, “বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে অভিযোগ গুরুতর। আমি সিএমওএইচকে ফোন করে সব জানছি। তদন্তের নির্দেশ দেব।”
শনিবার গভীর রাতে প্রসব বেদনা নিয়ে ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে আসেন ঝাড়গ্রাম শহরের শক্তিনগরের বাসিন্দা বছর উনিশের কবিতা গড়াই। তাঁর স্বামী মিঠু গড়াই পেশায় ট্রলিচালক। রাত দেড়টা নাগাদ কবিতাকে প্রসূতি বিভাগে ভর্তি করা হয়। রবিবার সকাল সাড়ে ছ’টায় প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয় তাঁর। হাসপাতাল সূত্রের খবর, তখন প্রসূতি বিভাগের দায়িত্বে এক জন নার্স ছিলেন। কবিতার শাশুড়ি কাজলদেবীর অভিযোগ, “বৌমার ব্যথার কথা নার্সকে বললেও উনি গুরুত্ব দেননি। ভোর সাড়ে ছ’টা নাগাদ বৌমা শৌচাগারে যায়। অনেকক্ষণ পরেও না বেরনোয় সন্দেহ হয়। গিয়ে দেখি বৌমা শৌচাগারের মেঝেতে পুত্রসন্তান প্রসব করেছে।”
শেষমেশ সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ দু’জন মহিলা-কর্মী স্ট্রেচার নিয়ে আসেন। নাড়ি কেটে কবিতা ও নবজাতককে লেবার রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপরেও প্রসূতি বিভাগের মেঝেতেই ঠাঁই হয়েছিল কবিতা ও তাঁর সন্তানের। পরে অবশ্য শয্যা জুটেছে। মা ও শিশু ভাল আছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy