ছত্রাক সংক্রামিত অসুখ বলতে বহু দিন পর্যন্তই ধরেই নেওয়া হত শুধুমাত্র ত্বকের কোনও সমস্যা। কিন্তু ইদানীং ফুসফুসের সংক্রমণ তো বটেই, এমনকী সেপ্টিসেমিয়া, প্রস্রাবের নালির সংক্রমণ, কিডনির সংক্রমণের ক্ষেত্রেও মিলছে ছত্রাকের হদিস। নিঃশব্দে এই সমস্যা বড়সড় ঠাঁই করে নিয়েছে রোগের মানচিত্রে। তা সত্ত্বেও এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে তেমন কোনও সচেতনতা গড়ে ওঠেনি বলেই চিকিৎসক এবং বিজ্ঞানীদের একাংশের আক্ষেপ।
এই সুদূরপ্রসারী সমস্যার হাত থেকে কী ভাবে রক্ষা পাওয়া যায় সে নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘মাইকোকন’-এর আয়োজন করেছিল ফাঙ্গাল ইনফেকশন স্টাডি ফোরাম। শুক্রবার থেকে রবিবার, কলকাতায় অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে হাজির ছিলেন দেশ-বিদেশের বিশেষজ্ঞেরা। উদ্যোক্তাদের বক্তব্য, বিদেশে বহু বছর ধরেই এ নিয়ে কাজ হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্মেলনও হয়েছে বিভিন্ন দেশে। কিন্তু ভারতে ছত্রাকচর্চা এখনও পর্যন্ত তেমন সংগঠিত আকার নেয়নি।
অন্য মেট্রো শহরগুলির তুলনায় কলকাতায় ছত্রাক নিয়ে গবেষণা আরও কম। অথচ ছত্রাক নিয়ে এ দেশে উল্লেখযোগ্য কাজ শুরু হয়েছিল কলকাতার স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনেই, ১৯২৪ সালে। সেই দিক থেকে দেখতে গেলে ভারতের প্রথম সম্মেলনটি কলকাতায় আয়োজিত হওয়াকে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি বলেই মনে করছেন তাঁরা।
চিকিৎসক সুভাষ টোডি জানিয়েছেন, এর পর থেকে নিয়মিত এই ধরনের সম্মেলনের আয়োজন করবেন তাঁরা। মাইকোলজিস্ট শঙ্কর সেনগুপ্ত বলেন, “কী ভাবে ছত্রাক-সংক্রমিত অসুখের মোকাবিলা করা যায় সে বিষয়ে চিকিৎসকেরা যেমন অনেক কিছু জানলেন, তেমনই মাইক্রোবায়োলজিস্টরা ছত্রাক সংক্রমণ পরীক্ষার পরিকাঠামো নির্মাণ সম্পর্কেও বেশ কিছু তথ্য সংগ্রহ করলেন।”
এ দেশে ছত্রাক সংক্রমণ পরীক্ষার উন্নত পরিকাঠামো রয়েছে খুব কম কেন্দ্রেই। হাতে গোনা যে ক’টি কেন্দ্র রয়েছে তার অন্যতম চণ্ডীগড়ের পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউশন। সারা দেশ থেকেই সেখানে নমুনা পাঠানো হয় পরীক্ষার জন্য।
পিজিআই-এর চিকিৎসক অরুণালোক চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ছত্রাক সংক্রমণ পরীক্ষার জন্য আঞ্চলিক রেফারেন্স ল্যাবরেটরি গড়ার জন্য তাঁদের তরফে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন জানানো হবে। ছত্রাক সংক্রামিত অসুখ যে ভাবে বেড়ে চলেছে, তাতে আঞ্চলিক স্তরে এই ধরনের পরিকাঠামো গড়ে তোলা না হলে রোগ নির্ণয় এবং দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে না বলেই তাঁদের অভিমত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy