বারান্দায় লিফটের অদূরে বহাল তবিয়তে বসে রয়েছে গরু। ল্যাজ নেড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে কুকুর। তার মাঝেই স্যালাইনের বোতল হাতে ঝুলিয়ে রোগীকে নিয়ে লিফটে উঠছেন রোগীর পরিজনেরা।
পরিদর্শনে এসে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে বৃহস্পতিবার এই দৃশ্য দেখে চটে গেলেন রাজ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ন্যাশনাল রুরাল হেল্থ মিশন প্রকল্পের উপ-অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী। বিশ্বরঞ্জনবাবু ওই দৃশ্য দেখে হাসপাতালের আধিকারিকদের জিজ্ঞাসা করেন, “এখানে এরা কেন? কী ভাবে আসে?” দৃশ্যতই অপ্রস্তুতে পড়ে গেলেন সুপার নীলাঞ্জনা সেন ও জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মানবেন্দ্র ঘোষ। তখনও দিব্যি বসে ল্যাজ দিয়ে মাছি তাড়াচ্ছিল গরুটি। ততক্ষণে পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে গরুটির দিকে তেড়ে গেলেন এক চতুর্থ শ্রেণির কর্মী।
হাসপাতালের দোতলায় প্রসূতি বিভাগের ওয়ার্ড ঘুরে দেখতে গিয়ে তাঁরা দেখেন, লেবার রুমের বাইরে প্রসূতি ও তাঁদের পরিজনদের থিকথিকে ভিড়। স্বাস্থ্য অধিকর্তা সুপারের কাছে জানতে চান, এখানে রোগীর পরিজনদের বসার কোনও ব্যবস্থা নেই কেন? গরমে মাথার উপরে একটা পাখাও নেই কেন? এ বারও নিরুত্তর সুপার-সহ অন্য স্বাস্থ্যকর্তারা। অধিকর্তা জানতে চান, কবে এঁদের বসার ব্যবস্থা করা হবে? সুপার তাঁকে জানান, তাড়াতাড়ি সে ব্যবস্থা করা হবে। পরে সুপার বলেন, “অধিকর্তার কথা মতো তাড়াতাড়ি ওখানে প্রসূতিদের বসার ব্যবস্থা করা হবে। তবে ওই গরুটা মাঝে মধ্যে হাসপাতালে চলে আসে। ওটাকে তাড়িয়ে দিলে চলে যায়।” কেমন দেখলেন? স্বাস্থ্য অধিকর্তা বলেন, “পরিদর্শন করলাম। পরিষেবার মানোন্নয়নে কিছু নির্দেশ দিয়েছি।”
এ দিন জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নিয়ে স্বাস্থ্য অধিকর্তার বৈঠকে মানবাজার গ্রামীণ হাসপাতালের পরিষেবার হাল নিয়েও কথা ওঠে। জেলার এক স্বাস্থ্য কর্তা এ দিন আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত মানবাজার স্বাস্থ্যকেন্দ্রের খবরটি স্বাস্থ্য অধিকর্তাকে দেখান। তিনি ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের খবরটি পড়ে বিশদে জানতে চান। তারপরে পরিষেবার মান বাড়ানোর ব্যাপারে আশ্বাস দেন বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। পরে মানবেন্দ্রবাবু বলেন, “স্বাস্থ্য অধিকর্তা জানিয়েছেন, মানবাজারের হাসপাতালের পরিকাঠামোর মান বৃদ্ধি-সহ উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে। উন্নয়ন সংক্রান্ত কিছু প্রস্তাব আগেই পাঠানো হয়েছে। পুজোর পরে এসে হাসপাতালের উন্নয়ন নিয়ে আরও আলোচনা করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy