Advertisement
E-Paper

Monsoon in Brussels: ব্রাসেলসের বৃষ্টি যেন ফিরিয়ে নিয়ে যায় পুরনো দিনে

ইলশে গুঁড়ি বৃষ্টি এক সময়ে খুব প্রিয় ছিল আমার। জানালার ধারে বসে উদাস মনে সেই বৃষ্টি দেখতে দেখতে চায়ে চুমুক দেওয়ার এক আলাদা আমেজ ছিল, লিখেছেন প্রিয়ঙ্কা রায় বন্দ্যোপাধ্যায়

সংগৃহীত প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২২ ১৯:২৮
ব্রাসেলসের আকাশে মেঘের ঘনঘটা

ব্রাসেলসের আকাশে মেঘের ঘনঘটা

“বৃষ্টি পড়ে এখানে বারো মাস,এখানে মেঘ গাভীর মত চরে…”

বারো মাস না হলেও বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে অন্তত ছ’মাস তো বৃষ্টি হয়ই। মোটামুটি নভেম্বর মাস থেকে বৃষ্টির মরসুম শুরু হয়। বৃষ্টি চলে প্রায় এপ্রিল পর্যন্ত। পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে এখানে থাকার দরুণ মাঝে মাঝে ভাবি ব্রাসেলসের নতুন নামকরণ বোধ হয় ‘পশ্চিমের চেরাপুঞ্জি’ করাই যায়। শুধু যে শীত আর বসন্তে বৃষ্টি পড়ে তা নয়; এই যেমন ধরুন আজ জুলাইতে বসে এটা লেখার সময়ে গ্রীষ্মের রৌদ্রোজ্জ্বল দিন থাকার কথা, কিন্তু তার জায়গায় মেঘলা স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়া রয়েছে।

এই শহরটার সিলেবাস লেখার সময়ে প্রকৃতির বোধ হয় একটু, অথবা অনেকটাই মন খারাপ ছিল। অঙ্কের সব হিসেব গুলিয়ে বেশি করে মেঘলা রঙ আকাশের ক্যানভাস ছাপিয়ে দিয়েছিল। ব্রাসেলসের নিজস্ব চিত্রশিল্পী রেঁ মাগরিতের একটি ছবি আছে - আলোর সাম্রাজ্য (১৯৬১) - ছবিটি ঠিক বৃষ্টিস্নাত না হলেও যে স্যুরিয়ালিজমের ভাবনা প্রকাশ করে তা একটু খুঁজলে ব্রাসেলসের অলিগলিতে দেখতে পাওয়া যায় এখনও। আলো আঁধারির এক অদ্ভুত খেলা চলে বছরের অর্ধেকের ওপর মাসগুলিতে। এক ডিসেম্বরে লন্ডন এবং বাকি সব শহরের রেকর্ড ভেঙে ব্রাসেলসে গোটা মাসে সূর্যের আলো ছিল মাত্র আট ঘন্টা। হ্যাঁ, ঠিকই পড়লেন, গোটা দিন বা সপ্তাহে নয়, মাসে আট ঘন্টা মাত্র আলো। বাকি সময়ে আকাশের মুখ ভার।

জানালার ধারে বৃষ্টির ফোঁটা

জানালার ধারে বৃষ্টির ফোঁটা

ইলশে গুঁড়ি বৃষ্টি এক সময়ে খুব প্রিয় ছিল আমার। জানালার ধারে বসে উদাস মনে সেই বৃষ্টি দেখতে দেখতে চায়ে চুমুক দেওয়ার এক আলাদা আমেজ ছিল। এখন হয়েছে উল্টো। মেঘ বৃষ্টির একঘেয়েমির পর মে-জুন মাস থেকে বাকি ব্রাসেলস-নিবাসীর মত আমরাও অপেক্ষা করি একটু রোদের। তবে রোদ উঠলেও সঙ্গে ছাতা-টুপি-জ্যাকেট কিছু না কিছু নিয়ে বের হই। কারণ এখানে বর্ষার ওপর কোনও ভরসা নেই। রোদের মধ্যেই হয়ত খানিকটা শিলাবৃষ্টিও হয়ে গেল। তারপর রামধনুর মুখ দেখে আমরা বাড়ি থেকে বের হলাম। মুষলধারে বৃষ্টি খুব একটা হয় না এখানে। বরঞ্চ ওই ঘ্যানঘ্যানে ইলশে গুঁড়িরই চল বেশি। কথায় বলে, ব্রাসেলসে শীতের জ্যাকেটের চেয়েও বেশি জরুরি এমন কিছু যাতে বৃষ্টি আটকাবে, সঙ্গে কনকনে হাওয়া।

তবে যতই বলি, এই মেঘলা আবহাওয়ারও একটু নিজস্বতা আছে যা মাঝে মাঝে ভাল লাগে। জলে ভেজা চকচকে রাস্তার ওপর ট্র্যাফিক, গাড়ির থেকে বৃষ্টির ফোঁটা ভেদ করে আলোর প্রতিফলন, একশ বছরেরও পুরনো আর্ট ন্যুভ্যো বাড়ির লালচে ঘন ছায়া, লোহার সূক্ষ্ণ কারুকার্য করা বারান্দায় বৃষ্টির জলের জাফরি, আশেপাশের প্রচুর পার্কের ফোয়ারা ও লেকের ফুলেফেঁপে ওঠা আর উথাল পাথাল হাওয়ায় আমাদের পাড়ায় উঁচু উঁচু ঝুপ্পুস গাছগুলোর মাথা ঝুঁকিয়ে নৃত্য - এই সব মিলিয়ে ব্রাসেলসের বর্ষা যে খুব মন্দ লাগে তা বলতে পারব না।

সঙ্গের ছবিটি আমাদের বারান্দার, দেখুন ওপরের লেখার সঙ্গে কোনও মিল পান কিনা।

এই প্রতিবেদনটি সংগৃহীত এবং ‘আষাঢ়ের গল্প’ ফিচারের একটি অংশ।

Monsoon Brussels Monsoon Special আষাঢ়ের গল্প memories
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy