Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
National News

কাজ নেই, এক মাসে অন্ধ্রে আত্মঘাতী ৩ নির্মাণ শ্রমিক, ভিডিয়ো সামনে আসতেই তোলপাড়

তিন জনেরই বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, গত কয়েক মাস ধরে কাজ নেই। পরিবারে অভাব-অনটন। সেই হতাশা থেকেই আত্মহত্যা করেছেন তাঁরা।

আত্মহত্যার আগে ভিডিয়োতে গুন্টুরের শ্রমিক ভেঙ্কটেশ।

আত্মহত্যার আগে ভিডিয়োতে গুন্টুরের শ্রমিক ভেঙ্কটেশ।

সংবাদ সংস্থা
হায়দরাবাদ শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৯ ১৯:৫৮
Share: Save:

কাজ নেই। রোজগার না থাকায় সঙ্কটে পরিবার। এক মাসে তিন নির্মাণ শ্রমিকের আত্মহত্যা ঘিরে সরগরম অন্ধ্রপ্রদেশের রাজনীতি। কাজ না থাকায় অভাবের তাড়নায় তেনালি, গুন্টুর ও মঙ্গলগিরি এলাকায় ওই তিন জন আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ। গুন্টুর জেলায় আত্মঘাতী ভেঙ্কটেশ আত্মহত্যার আগের একটি সেলফি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ায় আরও জোরদার হয়েছে বিতর্ক। সেই ভিডিয়ো টুইট করে ওয়াইএসআর কংগ্রেস সরকারের সমালোচনা করেছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু। দাবি করেছেন অর্থ সাহায্যেরও। যদিও জগনমোহন রেড্ডি সরকারের দাবি, কৃষ্ণা-গোদাবরী অববাহিকায় বালির সঙ্কটের কারণেই নির্মাণ শিল্পে সঙ্কট দেখা দিয়েছে।

গত এক মাসে অন্ধ্রের ভেঙ্কটেশ ছাড়াও নাগা ব্রহ্মজি নামে তেনালির এক শ্রমিকও কাজ না থাকায় আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ। মঙ্গলগিরিতে আত্মঘাতী শ্রমিকের নাম জানা যায়নি। কিন্তু তিন জনেরই বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, গত কয়েক মাস ধরে কাজ নেই। পরিবারে অভাব-অনটন। সেই হতাশা থেকেই আত্মহত্যা করেছেন তাঁরা।

অন্য দিকে ভেঙ্কটেশ মৃত্যুর আগের সেলফি ভিডিয়োতেও দাবি করেছেন, কাজ নেই। বাড়িতে অভাব। তাঁর পরিবারের স্ত্রী রাশি বলেন, ‘‘এই নির্মাণ শিল্পে কাজ করেই আমাদের সংসার চলত। স্বামী অন্য কোনও কাজও জানত না। আমাদের এক বছরের একটি ছেলে রয়েছে। ওর স্বাস্থ্যও ভাল নেই। চিকিৎসা করাতে হবে।’’ ছবিটা স্পষ্ট হয়েছে ভেঙ্কটেশের প্রতিবেশীদের কথায়। তাঁদের এক জন বলেন, ‘‘গুন্টুরের এই গোরান্টলা এলাকায় বহু নারী-পুরুষ নির্মাণ শিল্পের উপর নির্ভরশীল। কেউ টাইল তৈরির কারখানায় কাজ করেন, কেউ নবনির্মীত ভবনে জলের লাইন তৈরির কাজ, কেউ বা সরাসরি রাজমিস্ত্রির কাজ করেন।’’

ভেঙ্কটেশের সেই ভিডিয়ো সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। তার পরেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। চন্দ্রবাবু নিজের টুইটার হ্যান্ডলে ওই ভিডিয়োটি শেয়ার করে সরকারকে আক্রমণ করেছেন। এ নিয়ে সরকারের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে দাবি করেন তিনি। তারকা থেকে রাজনীতিতে আসা তেলুগু অভিনেতা তথা জনসেনা পার্টির নেতা পবন কল্যাণ আগে থেকেই জগন সরকারের বালি নীতির বিরুদ্ধে কেন্দ্রের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। এই ভিডিয়ো সামনে আসার পর ফের জগন সরকারের বালি নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

আরও পড়ুন: সুড়ঙ্গে সাড়া নেই সুজিতের, চলছে উদ্ধারকাজ, লাগতে পারে আরও ১০-১২ ঘণ্টা

আরও পড়ুন: এক ঘণ্টার অপারেশন বাগদাদি শেষ সুড়ঙ্গের প্রান্তে, কী ভাবে চলল মার্কিন সেনার অভিযান

কিন্তু কেন নির্মাণ শিল্পের এমন হাল অন্ধ্রপ্রদেশে? গত মে মাসে লোকসভার সঙ্গেই অন্ধ্র বিধানসভার ভোটগ্রহণ এবং ফল প্রকাশিত হয়েছে। তাতে চন্দ্রবাবু নায়ডুর দলকে ধরাশায়ী করে ক্ষমতায় এসেছে ওয়াইএসআর কংগ্রেস। কিন্তু ক্ষমতায় এসেই বালি নীতির পরিবর্তন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী জগনমোহন। গত মাসেই আগের চন্দ্রবাবু সরকারের ‘মুক্ত বালি নীতি’র পরিবর্তন করে নয়া নীতি ঘোষণা করেছে। তাতে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র সরকারের কাছ থেকেই বালি কেনা যাবে। কিন্তু সরকারি ভাণ্ডার থেকে পর্যাপ্ত বালি পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ ঠিকাদার ও নির্মাণ শিল্পের সঙ্গে যুক্ত শিল্পপতিদের। ফলে কাজ হারাচ্ছেন শ্রমিকরা।

যদিও জগন সরকারের দাবি, সাম্প্রতিক বন্যায় কৃষ্ণা-গোদাবরী অববাহিকায় পলি জমে গিয়েছে। পলে বালি তোলায় সঙ্কট দেখা দিয়েছে। সেই কারণেই বালির জোগানে কিছু কমতি রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Andhra Pradesh Suicide Labour
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE