Advertisement
E-Paper

‘তোতা’ আবার খাঁচাবন্দি, অলোক বর্মার অপসারণে কটাক্ষ কংগ্রেসের

পাঁচ বছর আগে সুপ্রিম কোর্টের তদানীন্তন প্রধান বিচারপতি আর এম লোঢা মন্তব্য করেছিলেন, সিবিআই আসলে ‘খাঁচাবন্দি তোতা’। যে শুধু প্রভুর কথাই বলে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:১৮
—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

পাঁচ বছর আগে সুপ্রিম কোর্টের তদানীন্তন প্রধান বিচারপতি আর এম লোঢা মন্তব্য করেছিলেন, সিবিআই আসলে ‘খাঁচাবন্দি তোতা’। যে শুধু প্রভুর কথাই বলে।

অলোক বর্মাকে অপসারণের পর সিবিআইয়ের প্রাক্তন কর্তারা মনে করছেন, খাঁচার তোতা ফের খাঁচায় ঢুকে পড়ল। মোদী সরকারের প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতগির মতে, ‘‘সরকারের গোটা বিষয়টা আগেই মিটিয়ে ফেলা উচিত ছিল। এতে সিবিআইয়ের সুনামও নষ্ট হল।’’

মোদী সরকার সিবিআইকে বশে রাখার জন্যই অলোক বর্মাকে সরাল বলে বিরোধীরা অভিযোগ তুলবেন, সেটাই প্রত্যাশিত। কিন্তু বিজেপির সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর মত, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট এক বার বর্মাকে ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত খারিজ করে আমাদের শিক্ষা দিয়েছে। তার পরেও ভিজিল্যান্স কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে ফের বর্মাকে হটানো যায় না। বোগাস আইনি পরামর্শদাতাদের কথা প্রধানমন্ত্রীর শোনা উচিত নয়।’’ প্রবীণ আইনজীবী বিশ্বজিৎ দেবের যুক্তি, ‘‘মোদী সরকার আসলে লাগাম পরানো সিবিআই চায়। যখনই সরকার দেখল, সিবিআইকে লাগাম পরিয়ে রাখা যাচ্ছে না, তখনই বর্মাকে সরিয়ে দেওয়া হল।’’

শীর্ষকর্তাদের বিরুদ্ধে বারবার দুর্নীতির অভিযোগও সিবিআইয়ের অন্দরে সমস্যা তৈরি করছে বলে নিচুতলার তদন্তকারী অফিসারদের মত। তাঁদের যুক্তি, সিবিআই মূলত দুর্নীতির তদন্ত করে। অথচ ডিরেক্টরদের বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে।

যেমন কানপুরের মাংস রফতানিকারী মইন কুরেশির থেকে অলোক বর্মা ২ কোটি টাকা ঘুষ নেন বলে অভিযোগ। ২০১৪-তে কুরেশির সঙ্গে সিবিআইয়ের আর এক প্রাক্তন ডিরেক্টর রঞ্জিত সিনহার ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ ওঠে। আর এক ডিরেক্টর এ পি সিংহের সঙ্গেও কুরেশির যোগাযোগ ছিল বলে অভিযোগ। সিবিআই মামলা করায় তাঁকে ইউপিএসসি-র সদস্য পদ থেকে সরতে হয়। সেই সিংহ অবশ্য বলেন, ‘‘সিবিআইয়ের অন্দরে দলবাজি চলছে, এমন ধারণা এখন স্পষ্ট। দুই দল নিজেদের মধ্যে লড়ছে।’’

আরও পড়ুন: বদলি নিয়ে কামান দেগে ইস্তফা বর্মার

সিবিআইয়ের এক প্রাক্তন কর্তা এ-ও বলেন, ‘‘রাজনৈতিক স্বার্থে সিবিআইকে কাজে লাগানোর কারণেও ট্র্যাক রেকর্ড খারাপ হয়েছে। তিন দশকে সিবিআই পি ভি নরসিংহ রাও, লালকৃষ্ণ আডবাণী থেকে শুরু করে এ রাজা, দয়ানিধি মারানের মতো কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করেছে। অথচ পরে সকলে ছাড়া পেয়ে যান। ফলে তদন্তের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে বাধ্য।’’

সিবিআইয়ের এক প্রাক্তন ডিরেক্টরের মতে, ‘‘বর্মার ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের মূল কথা ছিল, উচ্চপর্যায়ের কমিটির ছাড়পত্র ছাড়া সিবিআই ডিরেক্টরকে সরানো যাবে না। ডিরেক্টরের এই রক্ষাকবচ থাকলে গোটা প্রতিষ্ঠানেরই রক্ষাকবচ থাকে। কিন্তু দু’দিনের মধ্যে রক্ষাকবচ ভেঙে ফেলা হল।’’ কংগ্রেসের আইনজীবী নেতা কপিল সিব্বলের কটাক্ষ, ‘‘তোতা খাঁচা বন্দিই থাকল।’’

BJP Congress Alok Verma CBI
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy