Advertisement
E-Paper

তাওয়াংয়ে হবে তেরঙ্গা ওড়ানোর স্মৃতিসৌধ

যা শুধু ববের প্রতি শ্রদ্ধাই নয়, চিনের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে তাওয়াংয়ের উপরে ভারতের ঐতিহাসিক অধিকার প্রতিষ্ঠারও স্মারক হতে চলেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২১ ০৩:৪৯
মেজর বব রেলেংনাও খাটিং। সঙ্গে তাওয়াংয়ে ববের নেতৃত্বাধীন দলের পৌঁছনোর দৃশ্য। ছবি সৌজন্যে অরুণাচল সরকার

মেজর বব রেলেংনাও খাটিং। সঙ্গে তাওয়াংয়ে ববের নেতৃত্বাধীন দলের পৌঁছনোর দৃশ্য। ছবি সৌজন্যে অরুণাচল সরকার

১৪ ফেব্রুয়ারি। দেশ তথা বিশ্ববাসীর কাছে প্রেম দিবস হিসেবেই তারিখটি পরিচিত। কিন্তু ভারত-চিন সম্পর্কের ক্ষেত্রে দিনটির গুরুত্ব অনেকেরই জানা নেই। ৭০ বছর আগে, এই দিনে তাওয়াংয়ের উপরে নিজেদের দখল প্রতিষ্ঠা করেছিল ভারত। তাওয়াংয়ের মাটিতে উড়েছিল প্রথম ভারতীয় তেরঙ্গা। সেই তেরঙ্গা উড়িয়েছিলেন মেজর বব খাথিং। এত দিন পরে, তাঁর স্মরণে তাওয়াংয়ে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিল অরুণাচল সরকার। যা শুধু ববের প্রতি শ্রদ্ধাই নয়, চিনের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে তাওয়াংয়ের উপরে ভারতের ঐতিহাসিক অধিকার প্রতিষ্ঠারও স্মারক হতে চলেছে।

১৯৫১ সালে ১৭ জানুয়ারি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে লড়ে সাহসিকতার জন্য ‘মিলিটারি ক্রস’ পাওয়া টাংখুল নাগা অফিসার বব রেলেংনাও খাথিং আসাম রাইফেলসের কয়েক জন জওয়ানকে সঙ্গে নিয়ে চারদুয়ার থেকে রওনা হয়েছিলেন চিন সীমান্তের উদ্দেশে। লক্ষ্য ছিল ম্যাকমোহন লাইনে ভারতের সীমানা ও শেষ জনবসতি চিহ্নিত করা।

ব্রিটিশ রাজের তরফে ‘অ্যাওয়ার্ড অব মেম্বার’ সম্মান পাওয়া বব সেনাবাহিনী থেকে স্বেচ্ছাবসর নিয়ে প্রাক-স্বাধীনতা আমলে মণিপুরের মন্ত্রী হয়েছিলেন। প্রথম মণিপুর বিধানসভার বিধায়ক তথা মন্ত্রীও ছিলেন বব। পরে তিনি ফের সামরিক জীবনে ফেরেন। আসাম রাইফেলসের হয়ে ১৯৫০ সালের ভূমিকম্পের উদ্ধারকাজে তাঁর বিরাট ভূমিকা ছিল। পরে তিনি অবিভক্ত নেফা-র তিরাপ ডিভিশনের সহকারী পলিটিক্যাল অফিসার হন।

আরও পড়ুন: প্রথম দিন কোভিড প্রতিষেধক নিয়ে বিতর্কে আরও এক জনপ্রতিনিধি

জানুয়ারির তীব্র ঠান্ডায়, অচেনা পাহাড়-জঙ্গল পার করে উঠতে থাকেন ববরা। পথে বিভিন্ন পাহাড়ি জনপদে গ্রামপ্রধানদের সঙ্গে দেখা করার পরে ৬ ফেব্রুয়ারি তাঁরা তাওয়াং পৌঁছান। তখন তাওয়াং নেহাতই ক্ষুদ্র জনপদ। ববই প্রথম তাওয়াং থেকে বুম লা সীমান্ত পর্যন্ত ভারতের প্রশাসনিক অধিকার কায়েম করেন। ১৪ ফেব্রুয়ারি তাওয়াংয়ে প্রথম বার ওড়ানো হয় স্বাধীন ভারতের পতাকা। ভারত সরকার তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মান দেয়।

পরবর্তী কালে আইএফএএস অফিসার হয়ে বব নাগাল্যান্ডের মককচং জেলার প্রথম জেলাশাসক হন। ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজে তিনিই ছিলেন প্রথম ভারতীয় ছাত্র। ১৯৬২ সালে চিনের সঙ্গে যুদ্ধের সময়ে তাঁকে নেফার সিকিয়োরিটি কমিশনার করে কেন্দ্রীয় সরকার। সশস্ত্র সীমা বল তৈরির পিছনেও তাঁর অবদান ছিল। নাগাল্যান্ডের মুখ্যসচিব থাকার সময় তিনিই নাগা রেজিমেন্ট ও নাগাল্যান্ড আর্মড পুলিশ গঠন করেন। তিনি ছিলেন বর্মায় ভারতের রাষ্ট্রদূত। সেই প্রথম কোনও জনজাতির প্রতিনিধি এই সম্মান পান। নাগাল্যান্ডে সশস্ত্র বিদ্রোহ দমনে ১৯৭৫ সালে যে ১৬ দফা শিলং চুক্তি হয় সেই কমিটিতেও বব ছিলেন।

আরও পড়ুন: জঙ্গি-আত্মসমর্পণ নিয়ে তৈরি হচ্ছে নয়া নীতি: সেনা

মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডু নিজে তাওয়াংয়ের ভূমিপুত্র। তিনি বলেন, “মেজর বব সম্পর্কে এখনকার প্রজন্ম জানে না। কিন্তু তাওয়াংয়ে তাঁর স্মৃতিসৌধ স্থাপনের পরে স্থানীয় মানুষ ও বাইরের পর্যটকেরা তাঁকে নতুন করে চিনবেন।” ১৪ ফেব্রুয়ারি, তাওয়াংয়ে তেরঙ্গা ওড়ানোর ৭০ বছর উপলক্ষে মেজর ববের স্মৃতিসৌধের শিলান্যাস করা হবে।

Tawang Arunachal Pradesh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy