রাজনাথ সিংহ। —ফাইল চিত্র।
শিলচরের দলীয় সাংসদদের নিগ্রহ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ শানাতে গিয়ে উল্টে লোকসভায় বিড়ম্বনায় পড়লেন তৃণমূল নেতৃত্ব। আজ ওই ঘটনা নিয়ে মুখ খুলে শিলচর বিমানবন্দরে হওয়া যাবতীয় ধাক্কাধাক্কি-অভব্যতার জন্য কার্যত তৃণমূলকেই দায়ী করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকও জানিয়েছে, বিমানবন্দরের বাইরে গেলে রাজ্যের শাসক শিবিরের বিক্ষোভের মুখে পড়ার সম্ভাবনা থাকায় তৃণমূল নেতাদের বাইরে যেতে নিষেধ করেছিল অসম প্রশাসন। যাতে সাংসদদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয়।
ঘনিষ্ঠ মহলে তৃণমূল নেতারা স্বীকার করেন যে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের মধ্যে রাজনাথ সিংহের সঙ্গে সম্ভবত সবচেয়ে ভাল সম্পর্ক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আজ লোকসভাতেও তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, রাজনাথ সিংহের প্রতি তাঁর গভীর শ্রদ্ধা রয়েছে। সেই রাজনাথ যে আজ তৃণমূলকে এ ভাবে অস্বস্তিতে ফেলে দেবেন, তা হয়তো ভাবতে পারেনি দল। আজ রাজনাথ বলেন, ‘‘শিলচরে গত কাল ১৪৪ ধারা জারি ছিল। তা সত্ত্বেও ওই সাংসদেরা বাইরে যেতে চান। তাই আটকানো হয়েছিল।’’
এনআরসি প্রকাশের পরে সেখানকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গত কাল মমতার নির্দেশে শিলচর যান তৃণমূলের সংসদীয় প্রতিনিধি দল। কিন্তু পুলিশের বাধায় শিলচর বিমানবন্দর থেকে বেরোতেই পারেননি সাংসদেরা। যা নিয়ে গত কালই সাংসদদের অধিকার ভঙ্গের অভিযোগ সংসদের উভয় কক্ষে জমা দেয় তৃণমূল। অধিবেশন মুলতুবির প্রস্তাবও আনে দল। তা না মানলেও আজ লোকসভার জ়িরো আওয়ারে এ নিয়ে তৃণমূলের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলার সুযোগ দেন স্পিকার সুমিত্রা মহাজন। কল্যাণ বলেন, ‘‘এক জন নাগরিকের দেশের সর্বত্র যাওয়ার অধিকার রয়েছে। দেশের কোনও উপদ্রুত প্রান্তে যাওয়াটা একজন সাংসদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। কিন্তু তা সত্ত্বেও সাংসদের বিমানবন্দরে আটকানো হয়। শারীরিক নিগ্রহ করা হয় মহিলা সাংসদদের।’’
জবাবে গোটা ঘটনার জন্য উল্টে তৃণমূল প্রতিনিধি দলের দিকেই আঙুল তোলেন রাজনাথ। মন্ত্রক সূত্র বলছে, তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখানোর পরিকল্পনা নিয়েছিল অসমের শাসক দল। তাই অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ও আইনশৃঙ্খলার কথা মাথায় রেখে পুলিশ সাংসদের বেরোতে বারণ করে। কল্যাণবাবু অসম প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভব্যতার যে অভিযোগ করেন, তার জবাবে রাজনাথ বলেন, ‘‘প্রোটোকল মেনেই সাংসদের সঙ্গে ব্যবহার করেছে অসম প্রশাসন। রাতে স্থানীয় এনআইটি অতিথিশালায় থাকার ব্যবস্থাও করা হয়েছিল। কিন্তু সাংসদদের লিখিত অনুরোধে তাঁদের বিমানবন্দরের অতিথিশালায় থাকার ব্যবস্থা করা হয়। নিয়ম ভাঙা হয়নি।’’ একই সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘‘পুলিশকর্মীদের কাজে বাধা দেওয়া, ধাক্কাধাক্কি করা ও বিমানবন্দরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করায় ওই প্রতিনিধি দলকে গ্রেফতার করে জামিন দেওয়া হয়। ধস্তাধস্তিতে দু’জন পুলিশই উল্টে আহত হয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy