Advertisement
E-Paper

নোট বাতিলের আঁচে শহরে ভুগছেন রমন

প্রসঙ্গ পাড়তেই রায়পুরের গুরু নানক চকের জামা-কাপড়ের দোকানের মালিক নীলেশ আগরওয়ালের মুখে এক রাশ বিরক্তি। “ভোট দিয়ে কি দু’বছর আগেকার লোকসানের টাকা ঘরে আসবে? তার উপরে এই জিএসটি! খদ্দেরের বায়না সামলাব না হিসেব কষব?”

প্রেমাংশু চৌধুরী 

শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:২১

দু’দিনের মাথায় তো ভোট!

প্রসঙ্গ পাড়তেই রায়পুরের গুরু নানক চকের জামা-কাপড়ের দোকানের মালিক নীলেশ আগরওয়ালের মুখে এক রাশ বিরক্তি। “ভোট দিয়ে কি দু’বছর আগেকার লোকসানের টাকা ঘরে আসবে? তার উপরে এই জিএসটি! খদ্দেরের বায়না সামলাব না হিসেব কষব?”

দু’বছর আগে সুরাতে হাল-ফ্যাশনের টি-শার্ট আর ফ্যান্সি শাড়ির বরাত দিয়েছিলেন নীলেশ। প্রায় দু’লক্ষ টাকা আগাম দেওয়া ছিল। আচমকাই নোট বাতিলের ঘোষণা। সুরাতের কারখানা ঝাঁপ ফেলায় বরাত বাতিল করেন নীলেশ। কিন্তু এখনও পুরো টাকা ফেরত পাননি। নোট বাতিলের উপরে রাগও যায়নি। যার মূল্য ছত্তীসগঢ়ের ভোটে চোকাতে হতে পারে রমন সিংহকে। বিশেষ করে শহরাঞ্চলে।

রমন সিংহ গ্রামের মানুষের ক্ষোভ অনেকটাই সামলে নিয়েছেন। ধান, ডালের মতো ফসলের দাম বাড়ানোর সংকল্প করেছেন। গরিবদের ৩৫ কেজি করে চাল দিয়েছেন, মাত্র ১ টাকা কেজি দরে। ভোটের ছ’মাস আগে মুফতে মোবাইল দিয়েছেন। সঙ্গে বিশেষ একটি সংস্থার মোবাইল সংযোগ। বিনামূল্যে। যত খুশি ফোন করা যাবে, রোজ এক জিবি করে ডাটা, যত খুশি ইন্টারনেট ঘাঁটো, কোনও পয়সা লাগবে না।

তার সঙ্গে সরকারি খরচে বাড়িতে বাড়িতে শৌচাগার হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় গরিবের মাথায় ছাদ জুটছে। আর ফ্রি-তে রান্নার গ্যাসের সংযোগ, সিলিন্ডারও মিলছে। হলই বা কেন্দ্রীয় প্রকল্প। ছত্তীসগঢ়ের গ্রামের মানুষ মনে করেন, এ সব রমন সিংহের উপহার। তিনিই তো বাড়িতে বাড়িতে এ সব পৌঁছে দিচ্ছেন।

কিন্তু এ সবে শহরের ক্ষোভ মেটে না। রায়পুর, বিলাসপুর, অম্বিকাপুরের মতো ছোট-বড় শহরের বড় প্রশ্ন, চাকরি কই? মোদী যে বলেছিলেন, বছরে ২ কোটি চাকরি হবে!

প্রায় তিন কোটি মানুষের ছত্তীসগঢ়ে নথিভুক্ত বেকারের সংখ্যা ২৫ লক্ষ। বেকারদের কাছে টানতে কংগ্রেস ও অজিত জোগীর জনতা কংগ্রেস, দুই দলই ইস্তাহারে বেকার ভাতা ঘোষণা করেছে। বিজেপিকেও সেই পথে হাঁটতে হয়েছে। কিন্তু নোট বাতিলের জুতসই জবাব বিজেপি নেতাদের কাছেও নেই। রাহুল গাঁধী জানেন, নোট বাতিলের ক্ষত এখনও শুকোয়নি। তাই ছত্তীসগঢ়ে কংগ্রেসের প্রতিটি প্রচারসভায় নোট বাতিল নিয়ে মোদীকে নিশানা করেছেন।

ছত্তীসগঢ়ের জেলায় জেলায় সঙ্ঘ পরিবারের শাখা সংগঠন ছড়িয়ে। প্রত্যন্ত গ্রামেও আরএসএস পরিচালিত সরস্বতী শিশু মন্দির। তা সে কংগ্রেসের দুর্গই হোক বা অজিত জোগীর এলাকা। জোগীর এলাকা পেন্ড্রার সরস্বতী শিশু মন্দিরের প্রধান শিক্ষক রামনারায়ণ কৈবর্তর অবশ্য দাবি, “রাজ্যের উচ্চ মাধ্যমিক বোর্ডের সিলেবাসের বাইরে আমরা শুধু নীতি শিক্ষা ও বৈদিক অঙ্ক শেখাই।”

কংগ্রেসের ব্যাখ্যা, আরএসএসের সংগঠন থাকলেও ছত্তীসগঢ়ে বিজেপির পক্ষে মেরুকরণ করা মুশকিল। কারণ রাজ্যে ওবিসি, তফসিলি জাতি-জনজাতির মানুষই বেশি। আর মাত্র ৩ শতাংশ মুসলমান ও অন্য সংখ্যালঘু।

বিজেপি রাজ্য জুড়ে গরু অভয়ারণ্য তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। রাজ্যে ‘দুধ বিপ্লব’ আনতে। কিন্তু নোট বাতিল-জিএসটিতে ক্ষুব্ধ মানুষের গরু অভয়ারণ্যের কথায় মন গলবে কি?

Assembly Elections 2018 Chattisgarh Assembly Election 2018 Chhatisgarh Demonetisation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy