Advertisement
E-Paper

খুনই হয়েছেন ভাটিয়ারা, দাবি আত্মীয়দের

বুরারির ভাটিয়া পরিবারের আত্মীয়েরা কেউ বিশ্বাস করেননি, ওই পরিবারের আত্মীয়েরা কোনও তান্ত্রিকের খপ্পরে পড়ে আত্মহত্যা করেছেন।

প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৮ ০৪:৫১
শোক: কান্নায় ভেঙে পড়েছেন সুজাতা নাগপাল (ডান দিকে)। ছবি: পিটিআই।

শোক: কান্নায় ভেঙে পড়েছেন সুজাতা নাগপাল (ডান দিকে)। ছবি: পিটিআই।

বুরারির ঘটনায় প্রাথমিক তদন্ত গুপ্ত সাধনার প্রভাবে আত্মহত্যার ইঙ্গিত দিলেও, কিছু প্রশ্নের উত্তর মিলছে না।

আর সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই জানেগড়ি বাবা নামে এক তান্ত্রিকের খোঁজে অভিযান শুরু করল দিল্লি পুলিশ। ভাটিয়া পরিবারের লোকেদের মোবাইলের কললিস্ট ঘেঁটে এই জানেগড়ি বাবার সন্ধান পেয়েছে দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ।

বুরারির ভাটিয়া পরিবারের আত্মীয়েরা কেউই বিশ্বাস করতে রাজি নন, ওই পরিবারের আত্মীয়েরা কোনও তান্ত্রিকের খপ্পরে পড়ে আত্মহত্যা করেছেন। সন্তনগরের বাড়ির গৃহকর্ত্রী নারায়ণী দেবীর তিন ছেলে, দুই মেয়ে। নারায়ণী দেবী, তাঁর দুই ছেলে ভবনেশ, ললিত, মেয়ে প্রতিভা-সহ পরিবারের ১১ জনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। ফলে ভাইবোনদের মধ্যে বেঁচে রয়েছেন একমাত্র ছোট বোন সুজাতা ও বড় দাদা দীনেশ।

সোমবার বাড়ির সামনে রাস্তায় বসে রাগে থরথর করে কাঁপছিলেন সুজাতা নাগপাল। ‘‘আমার মা, দুই ভাই, বোন, তাদের ছেলেমেয়েদের কেউ খুন করেছে। আর পুলিশ তন্ত্রমন্ত্রের গল্প বানাচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, বাড়িতে সাধারণ গৃহস্থ পরিবারের মতোই পুজোআচ্চা হত। হনুমান চালিশা পাঠ হত। কিন্তু তাঁর ভাইয়েরা কেউ তন্ত্রমন্ত্র বা গুপ্তসাধনায় জড়িত ছিলেন না। তা হলে তিনি তা টের পেতেন। একই মত সুজাতার দাদা, রাজস্থানের কোটার বাসিন্দা দীনেশেরও। আজ ভাটিয়া পরিবারের বাড়ির কাছে হাজির হন করণী সেনার কয়েক জন নেতা। তাঁদের দাবি, চিতোরের বাসিন্দা ভাটিয়ারা আত্মহত্যা করতেই পারেন না। তাঁদের খুনই করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: আছে তান্ত্রিক-যোগ, ধারণা বিশেষজ্ঞের

‘মোক্ষের’ খোঁজেই কি ফাঁস গলায়!​

কয়েকটি বিষয়ে ধন্দ কাটেনি পুলিশেরও। প্রথম প্রশ্ন, গোটা পরিবার অতিপ্রাকৃতে বিশ্বাস করে মৃত্যুর পথে হাঁটার কথা ভাবলে আত্মীয়রা কেউ তা টের পেতেন। দ্বিতীয় প্রশ্ন, রবিবার সকালে দেখা যায় ভাটিয়াদের বাড়ির প্রধান ফটক খোলা ছিল। শনিবার রাতে সপরিবার আত্মহত্যার পরিকল্পনা করলে তাঁরা দরজা খুলে রাখবেন কেন? তৃতীয় প্রশ্ন, তা হলে কি বাইরে থেকে কেউ এসে দরজা খুলে বেরিয়ে গিয়েছিল? সে কি বাড়ির লোকেদের পরিচিত? না হলে বাড়িতে কুকুর থাকা সত্ত্বেও ডাকল না কেন?

চতুর্থ প্রশ্ন আরও গুরুত্বপূর্ণ। তা হল, নারায়ণী দেবীর বয়স ৭৭ বছর। তাঁর ছেলে, পুত্রবধূদের বয়স ৪০ থেকে ৫০-এর কোঠায়। তাঁরা গুপ্ত সাধনায় বিশ্বাস করলেও করতে পারেন। কিন্তু নাতি-নাতনিদের বয়স, ১৫, ২৩, ২৫ বা ৩৩ বছর। এরা কী করে তন্ত্রে বা গুপ্তসাধনায় বিশ্বাস করে ফেলল? পঞ্চম প্রশ্ন, সকলে মিলে মৃত্যুর পরিকল্পনা করলে তাঁরা বাড়ির মেয়ে প্রিয়ঙ্কার বিয়ের বন্দোবস্ত করছিলেন কেন? কেনই বা ১৪ দিন আগেও ঘটা করে আশীর্বাদের আয়োজন হয়েছিল?

এখানেই কোনও তান্ত্রিকের ভূমিকা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তদন্তকারীদের মতে, কোনও তান্ত্রিক ভাটিয়াদের এই পথে যেতে চাপ দিয়ে থাকতে পারে। তার নির্দেশ মতোই ডায়েরিতে আত্মহত্যার প্রক্রিয়া লিখে রাখা ছিল। সেই হাতের লেখা কার, তারও তদন্ত হচ্ছে। কোনও তান্ত্রিক আত্মহত্যায় মদত দিয়ে থাকলে তার পিছনে সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্য ছিল কি না, তা-ও দেখা হবে। সম্পত্তি সংক্রান্ত বিবাদ বা ব্যক্তিগত শত্রুতার ইতিহাসও খোঁজা হচ্ছে।

Delhi Burari Crime Tantra Tantrik Burari Deaths
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy