Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

চালু এসএমএস, তবে আশার আলো দেখছে না কাশ্মীর

নতুন বছরে বিশেষ আশার আলো দেখছেন না কাশ্মীরবাসী।

ছবি: পিটিআই।

ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীনগর শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২০ ০২:১৪
Share: Save:

নতুন বছরের গোড়ায় কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু-কাশ্মীরে পোস্টপেড মোবাইলে এসএমএস পরিষেবা চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। সেইসঙ্গে সরকারি হাসপাতালগুলিতে চালু হবে ইন্টারনেট। কিন্তু নতুন বছরে বিশেষ আশার আলো দেখছেন না কাশ্মীরবাসী।

১০ ডিসেম্বর পড়ুয়া, বৃত্তির জন্য আবেদনকারী, ব্যবসায়ীদের সুবিধের জন্য এসএমএস পরিষেবা আংশিক ভাবে চালু হয়েছিল। আজ জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, আগামিকাল থেকে তা পুরোপুরি চালু হবে। সেইসঙ্গে সরকারি হাসপাতালে চালু হবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট। তবে সরকারি সূত্রে খবর, ওই পরিষেবার উপরে কড়া নজরদারি চালাবে গোয়েন্দা সংস্থাগুলি।

তবে এতে বিশেষ আশার আলো দেখছেন না কাশ্মীরবাসী। আজ সন্ধ্যায় শ্রীনগরের একটি বড় জামাকাপড়ের দোকানের মালিক বললেন, ‘‘নতুন কিছুই অর্ডার দিইনি। এর পরে কী অবস্থা হবে কে জানে?’’ সেখানেই দাঁড়িয়েছিলেন কলেজের শিক্ষিকা তসলিমা। বললেন, ‘‘কাল থেকে সরকারি হাসপাতালে ব্রডব্যান্ড চালু হচ্ছে। কিন্তু এ পর্যন্ত ইন্টারনেট না থাকায় হাসপাতালে কত জনের মৃত্যু হয়েছে সেই হিসেবটা সরকার করেছে কি? সরকার কাশ্মীরে হত্যালীলায় মেতেছে।’’ প্রায় একই সুর মাস কমিউনিকেশনের পড়ুয়া আকিব সালামের। বললেন, ‘‘অনেক দিন ধরে কোনও একটা সংবাদমাধ্যমে ইন্টার্নশিপের সুযোগ খুঁজছি। ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় কোথাও যোগাযোগ করারই বিশেষ সুযোগ পাইনি। নতুন বছরেও বিশেষ সুযোগ জুটবে বলে মনে হচ্ছে না।’’

আরও পড়ুন: জনগণনার সঙ্গে ফারাক নেই এনপিআরের: রেড্ডি

সন্ত্রাস মোকাবিলার ক্ষেত্রে কাশ্মীরের পরিস্থিতি অনেক ভাল বলে আজ দাবি করেছে সেনা ও পুলিশ। কিন্তু এ দিনই জম্মু-কাশ্মীরের মানবাধিকার সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চের তরফে এক রিপোর্ট প্রকাশ করে জানানো হয়েছে, জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপের পরে হিংসার প্রকৃতি বিশেষ বদলায়নি। তাদের অভিযোগ, কাশ্মীরি শিশুরা এখনও রাষ্ট্রের অবিচারের শিকার। চলতি বছরে হিংসার শিকার হয়েছে ৮ জন কাশ্মীরি শিশু। বিশেষ মর্যাদা লোপের পরে বিরোধিতার কণ্ঠরোধ করার জন্য ব্যাপক ধরপাকড় চালায় প্রশাসন। তখন বেশ কিছু নাবালককে আটক করা হয়েছে। তাদের উপরে অত্যাচারের অভিযোগও উঠেছে। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, বেশ কয়েক বছর পরে ২০১৯ সালে উপত্যকায় ভিন্‌ রাজ্যের ১৪ জন শ্রমিককে খুন করা হয়েছে। সীমান্তে ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ-সহ নানা হিংসার ঘটনায় ৮০ জন সাধারণ বাসিন্দা নিহত হয়েছেন। হিংসায় নিহত হয়েছেন ১২৯ জন জওয়ান। বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছে ১৫৯ জন জঙ্গি।

শীত কাটলে উপত্যকার পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে তা নিয়েও উদ্বিগ্ন কাশ্মীরবাসী। সম্প্রতি বন্দিদশা থেকে মুক্ত এক প্রবীণ রাজনীতিকের কথায়, ‘‘মনে হচ্ছে উপত্যকায় এ বারের গ্রীষ্ম রক্তাক্ত হতে পারে। নিশ্চিত ভাবে কিছু বলা কঠিন। কিন্তু নানা সূত্রে গ্রীষ্মে রক্তপাতের ইঙ্গিত পাচ্ছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE