Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Rahul Gandhi

‘সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করে বিজেপি-আরএসএস!’ রাহুলের টুইট ঘিরে বাগযুদ্ধ

কংগ্রেসের অভিযোগ, বিজেপি নেতাদের ঘৃণা-মন্তব্য এড়িেয় যান ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা তুলে পাল্টা খোঁচা বিজেপির।

রাহুল গাঁধী (ডান দিকে) ও রবিশঙ্কর প্রসাদের তরজা। —ফাইল চিত্র

রাহুল গাঁধী (ডান দিকে) ও রবিশঙ্কর প্রসাদের তরজা। —ফাইল চিত্র

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ অগস্ট ২০২০ ১৯:৪১
Share: Save:

সোশ্যাল মিডিয়ায় কার বেশি নিয়ন্ত্রণ— বিজেপি, নাকি কংগ্রেস? একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে এই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন ঘিরে করোনা আবহে ফের জমে উঠল কংগ্রেস-বিজেপি তরজা। কংগ্রেসের অভিযোগ, বিজেপি নেতারা ক্রমাগত ঘৃণা-মন্তব্য করলেও জনপ্রিয়তা কমার ভয়ে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তা এড়িয়ে যান। বিজেপির পাল্টা আক্রমণ, কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছিল, তার পর আর কংগ্রেসের এই অভিযোগ তোলা সাজে না।

মার্কিন সংবাদপত্র দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের ‘ফেসবুক হেট-স্পিচ রুলস কোলাইড উইথ ইন্ডিয়ান পলিটিক্স’ নামে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতে শাসক দলের ঘৃণা-মন্তব্যকে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ উপেক্ষা করে যান। উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে তেলঙ্গানার বিধায়ক তথা বিজেপি নেতা টি রাজা সিংহর বক্তব্য। প্রতিবেদনের দাবি, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের গুলি করে মারা উচিত বলে মন্তব্য করেছিলেন এবং মুসলিমদের বিশ্বাসঘাতক বলেছিলেন। তাঁর একাধিক এই রকম উস্কানিমূলক পোস্ট নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন ফেসবুকের নিচু তলার কর্মীরা। সুপারিশ করেছিলেন, ওই অ্যাকাউন্ট ব্লক করার। কিন্তু উপর মহল থেকে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এখনও বহাল তবিয়তে ফেসবুকে রয়েছে টি রাজা সিংহর অ্যাকাউন্ট। ফেসবুকের এক পদস্থ আধিকারিক এমনও মন্তব্য করেছিলেন যে, বিজেপি নেতাদের ব্লক করে দিলে ভারতে ব্যবসা মার খাবে— বলা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।

এই প্রতিবেদনের ছবি-সহ প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী এ দিন টুইটারে আক্রমণ তোপ দেগেছেন শাসক দলকে। তিনি লিখেছেন, ‘‘ভারতে ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপ নিয়ন্ত্রণ করে বিজেপি এবং আরএসএস। এর মাধ্যমে তার ভুয়ো খবর ছড়ায়, ঘৃণা ছড়ায় এবং ভোটের কাজে লাগায়। শেষ পর্যন্ত ফেসবুক নিয়ে প্রকৃত সত্য তুলে ধরল মার্কিন সংবাদ মাধ্যম।’’ প্রায় একই রকম অভিযোগ তুলে কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুরের টুইট, ‘‘এই রিপোর্টের পর সংসদের তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি নিশ্চয়ই ফেসবুক কর্তৃপক্ষের জবাব জানতে চাইবে। ভারতে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য সম্পর্কেও জানতে চাওয়া হবে।’’

আরও পড়ুন: ডিসপ্লে স্ক্রিন থেকে ভাইরাস প্রতিরোধ যন্ত্র, বাদল অধিবেশনে ভোল বদলাচ্ছে সংসদ

পাল্টা জবাব আসতেও দেরি হয়নি। কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ আবার রাহুলের টুইট ট্যাগ করে পাল্টা বলেন, ‘‘হেরে যাওয়া লোকজন যাঁদের নিজের দলের কর্মীদের উপরেও কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই, তাঁরা কাঁদুনি গাইছেন যে সারা বিশ্ব নিয়ন্ত্রণ করে বিজেপি-আরএসএস। নির্বাচনের আগে ফেসবুকের তথ্য ভোটের কাজে ব্যবহার করার অভিযোগে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কাণ্ডে আপনারা হাতেনাতে ধরা পড়েছিলেন। আর এখন আমাদের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলছেন?’’ গাঁধী পরিবারকে কটাক্ষ করে রবিশঙ্কর অন্য টুইটে বলেছেন, ‘‘তথ্যের অধিকার এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা গণতান্ত্রিক হয়েছে। এটা আপনার পরিবারের মতো শিক্ষনবীশরা নিয়ন্ত্রণ করে না। সেই কারণেই এত কষ্ট পান।’’

আরও পড়ুন: প্রয়াত ভারতের প্রাক্তন ওপেনার, উত্তরপ্রদেশের মন্ত্রী চেতন চৌহান

দিল্লিতে জাতি হিংসার সময় উস্কানিমূলক মন্তব্য করে শিরোনামে এসেছিলেন বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র। তিনিও একই সুরে আক্রমণ করেছেন। টুইটারে লিখেছেন, ‘‘গুরুতর কোনও অপরাধ ধামাচাপা দিতে কংগ্রেস ফেসবুককে ব্ল্যাকমেল করছে বলে মনে হচ্ছে। কংগ্রেস যে মানুষের মতামত এবং বাক স্বাধীনতা প্রভাবিত করে, কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কেলেঙ্কারি তার মধ্যে হিমশৈলের চূড়ামাত্র।

২০১৮ সালে ভারতে লোকসভা নির্বাচনের আগের বছর কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কেলেঙ্কারি সামনে এসেছিল। সেই সময় অভিযোগ উঠেছিল, ২০১৭ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফেসবুকের তথ্য ব্যবহার হয়েছিল ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জেতানোর জন্য। এই কেলেঙ্কারিতে ভারতের নির্বাচনের সঙ্গেও যোগসূত্র থাকতে পারে। সেই বিজেপি কংগ্রেস উভয় পক্ষকে দোষারোপ করে আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণ চালিয়েছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE