বিপর্যয়: ভেঙে পড়েছে ফুটব্রিজের কংক্রিটের পাটাতন। মুম্বইয়ের ছত্রপতি শিবাজী টার্মিনাসের সামনে। ছবি: পিটিআই।
আরও একটি ফুটব্রিজ বিপর্যয় বাণিজ্যনগরীতে।
বছর দুয়েক আগে মুম্বইয়ের এলফিনস্টন রোড স্টেশনের ফুটব্রিজে পদপিষ্ট হয়ে মারা গিয়েছিলেন ২৩ জন। ২০১৮-র জুলাইয়ে প্রবল বৃষ্টিতে অন্ধেরী স্টেশনে ৪০ বছরের পুরনো একটি ব্রিজ ভেঙে পড়লে ৫ জন আহত হন। রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল সেই সেতুর নকশায় গলদ রয়েছে বলে জানানোর পরে শহরের ৪৪৫টি ফুটব্রিজের কাঠামোর হাল খতিয়ে দেখে একটি রিপোর্ট দিয়েছিল বৃহন্মুম্বই পুরসভা। সূত্রের দাবি, সেই রিপোর্টে ‘ফিট’ শংসাপত্রই পেয়েছিল মুম্বইয়ের ছত্রপতি শিবাজী টার্মিনাস স্টেশন (সিএসটি) এবং উল্টো দিকের বি টি লেনের সংযোগকারী ফুটব্রিজটি। অথচ গত কয়েক দিনের মতো আজ সকালেও সেটিতে মেরামতির কাজ চলেছে। কিন্তু লোক চলাচল বন্ধ রাখা হয়নি। সন্ধেয় সেই ব্রিজই ভেঙে পড়ল রাস্তায়।
আজ পুরসভার সেই অডিট টিম ও ভারপ্রাপ্ত অফিসারদের বিরুদ্ধে ভুল রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগ তুলে খুনের ধারায় মামলা করার দাবি জানিয়েছেন মুম্বই দক্ষিণ লোকসভা আসনের কংগ্রেস প্রার্থী মিলিন্দ দেওরা। রাজ্যের মন্ত্রী বিনোদ তাওড়ে বলেছেন, মেরামতির কাজ চলা সত্ত্বেও কেন সেতুটি বন্ধ চালু ছিল, তার তদন্ত হবে। পুলিশ ও পুরসভাকে তিনি প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীশ। মৃতদের পরিবার-পিছু ৫ লক্ষ টাকা এবং আহতদের জন্য ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। টুইটারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী লিখেছেন, তিনি ব্যথিত। মৃত ও আহতদের পরিবারকে টুইটারে সমবেদনা জানিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী।
ব্রিজ দুর্ঘটনায় মৃতদের মধ্যে তিন জনের পরিচয় জানা গিয়েছে। তাঁরা হলেন, অপূর্বা প্রভু (৩৫), রঞ্জনা তাম্বে (৪০) এবং জাহিদ সিরাজ খান (৩২)। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, ১৯৮৪ সালে তৈরি ফুটব্রিজটি দিয়ে কয়েক লক্ষ মানুষ পারাপার করেন রোজ। সন্ধেয় সেই ব্রিজের উপরে ছিল অফিস-ফেরত আমজনতার ভিড়। চাঙড় ভেঙে ব্রিজ থেকে সোজা রাস্তায় পড়ে যান তাঁরা। এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘‘ভাগ্যিস দুর্ঘটনার সময়ে ব্রিজের থেকে একটু দূরের ট্রাফিক সিগনালটা লাল ছিল। চাঙড় ভেঙে কয়েকটা গাড়ির ক্ষতি হয়েছে ঠিকই। কিন্তু সিগনাল খোলা থাকলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারত।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
রেলের বক্তব্য, ভেঙে পড়া সেতুটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পুরসভার। তা সত্ত্বেও অ্যাম্বুল্যান্স-সহ রেলের চিকিৎসক ও প্যারামেডিক টিমকে সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। দমকলের সঙ্গে পৌঁছয় জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও। রেল দায় এড়ালেও রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের ইস্তফা দাবিতে টুইট করেছেন কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা। ইতিমধ্যে টিভি চ্যানেলে বিতর্কে জড়িয়েছেন মুম্বই বিজেপির বিশিষ্ট সেলের মুখপাত্র সঞ্জু বর্মা। তিনি বলেন, ‘‘সরকারের গাফিলতি রয়েছে, এই অভিযোগ মানছি না। একটা বড় দায় সেই পথচারীদেরও, যাঁরা টাকা দেননি...।’’ তিনি বাক্যটি শেষ করতে না-পারলেও এ নিয়ে রাত পর্যন্ত তীব্র সমালোচনা হয়েছে ইন্টারনেটে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy