Advertisement
০৫ মে ২০২৪
National News

তিন দশক ধরে বিএসএফ অফিসার, এনআরসি জানাল, ‘বিদেশি’

বিএসএফ অফিসার মুজিবর লড়াই ছাড়তে নারাজ। নিজেদের গ্রেফতারি এড়াতে উঠেপড়ে লেগেছেন। মুছে দিতে চান ‘বিদেশি’ তকমাও। এ নিয়ে ইতিমধ্যেই দ্বারস্থ হয়েছেন গৌহাটি হাইকোর্টের।

নিজের ‘বিদেশি’ তকমা মুছে দিতে চান বিএসএফ অফিসার মুজিবর রহমান। ছবি: সংগৃহীত।

নিজের ‘বিদেশি’ তকমা মুছে দিতে চান বিএসএফ অফিসার মুজিবর রহমান। ছবি: সংগৃহীত।

সংবাদ সংস্থা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৯ ১৮:০৭
Share: Save:

তিন দশক ধরে দেশের হয়ে সীমান্ত পাহারার কাজ করছেন। এ দেশের মাটিতেই জমিজমা-বসবাস। তবে সেই বিএসএফ অফিসারই এ বার এনআরসি-র তালিকায় ‘বিদেশি’। চিহ্নিত হয়েছেন ‘সন্দেহজনক ভোটার’ হিসাবে। ওই অফিসারের মতো একই তকমা পেয়েছেন তাঁর স্ত্রী। দু’জনের মাথাতেই ঝুলছে গ্রেফতারির খাঁড়া।

অসমের গোলাঘাটের বাসিন্দা মুজিবর রহমানের কাহিনিতে কোনও চমক নেই। মাস দুয়েক আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে প্রাক্তন এক সেনাকর্মীর সঙ্গে। তবে বিএসএফ অফিসার মুজিবর লড়াই ছাড়তে নারাজ। নিজেদের গ্রেফতারি এড়াতে উঠেপড়ে লেগেছেন। মুছে দিতে চান ‘বিদেশি’ তকমাও। এ নিয়ে ইতিমধ্যেই দ্বারস্থ হয়েছেন গৌহাটি হাইকোর্টের।

গত জুলাইয়ের শেষে ছুটি কাটিয়ে নিজের বাড়ি ফিরতেই খবরটা পেয়েছিলেন মুজিবুর। ফের এনআরসি অফিসে যেতে হবে। পরিবারের সকলের নথিপত্র আরও এক বার খতিয়ে দেখা হবে। সে সব মিটে যাওয়ার পর গত ৫ অগস্ট জানতে পারেন, তিনি ও তাঁর স্ত্রী এ দেশের নাগরিক নন।

আরও পড়ুন: উপত্যকায় পা রাখতে পারলেন না রাহুলরা, শ্রীনগর থেকেই ফিরতে হল দিল্লিতে

আরও পড়ুন: ‘পাঁচতারায় চাকরি পেতে নগ্ন ছবি পাঠান’, ৬০০ মহিলাকে টোপ দিয়ে ধৃত

ছেলে-বৌমা ‘বিদেশি’ শুনে মুজিবুরের ৮৮ বছরের বৃদ্ধ বাবা বাপধন আলি বলেন, ‘‘তিন দশক ধরে দেশের সেবা করছে আমার ছেলে। বিএসএফের অ্যাসিস্টান্ট সাব-ইনস্পেক্টর। সীমান্ত পাহারা দেয়। সে বিদেশি হয় কী করে? ১৯৫০ থেকে এ দেশে জমি কেনার নথিপত্র রয়েছে। আমরা ভারতীয় হলে বিদেশি হলাম কী ভাবে?’’

তবে বাপধন আলির মুখের কথায় হেলদোল নেই এনআরসি কর্তৃপক্ষের। সমস্ত নথিপত্র খতিয়ে দেখার পর তাঁদের রায়, মুজিবুর ও তাঁর স্ত্রী এ দেশের বাসিন্দা নন। এবং নির্বাচন কমিশনের খাতায় তাঁরা ‘সন্দেহজনক ভোটার’। গোটা বিষয়টি তাঁরা জানিয়েছেন যোরহাটের ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে। সেই ট্রাইব্যুনাল মুজিবুর রহমান ও তাঁর স্ত্রীকে ‘বিদেশি’ হিসাবে চিহ্নিত করে। এর পর মুজিবুর ও তাঁর স্ত্রীকে গ্রেফতার করতে হবে বলে অসম পুলিশকে নির্দেশ দেয় ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল। যা নিয়ে আদালতে গিয়েছেন ১৪৪ ব্যাটেলিয়নের সঙ্গে পঞ্জাবে কর্মরত মুজিবুর। ফলে আপাতত আদালতের রায়ের অপেক্ষায় পুলিশও। গোলাঘাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুরজিৎ সিংহ পানেসর বলেন, ‘‘মুজিবুরের বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন। ফলে আমরা সেই রায়ের জন্য অপেক্ষা করব।’’

অপেক্ষায় রয়েছেন মুজিবুরের বৃদ্ধ বাবাও। এনআরসির তালিকায় নিজের আর পাঁচ ছেলেমেয়ে জায়গা পেলেও মুজিবুর কেন যে তাতে ঠাঁই পেলেন না, সে উত্তরই খুঁজছেন বৃদ্ধ!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

NRC Assam Gauhati BSF
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE