Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
India-China

‘গোপন’ আলোচনা চলছে, চিন প্রসঙ্গে ভবিষ্যদ্বাণী নয়, বললেন জয়শঙ্কর

আলোচনায় বোঝাপড়া বা ঐকমত্যে পৌঁছলেই যে চিনের উস্কানিমূলক বিবৃতি বা আগ্রাসন থেমে যাবে, বেজিংয়ের উপর তেমন আস্থা ভারতের নেই।

চিন নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করতে রাজি নন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। —ফাইল চিত্র

চিন নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করতে রাজি নন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। —ফাইল চিত্র

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২০ ১০:২৮
Share: Save:

আলোচনা ও আগ্রাসন দু’টোই কার্যত এক সঙ্গে চালায় চিন। সামরিক ও কূটনৈতিক আলোচনার মধ্যেই যেমন পূর্ব লাদাখে নজিরবিহীন ভাবে গুলি চালিয়েছে চিনা বাহিনী। ফলে বেজিংকে নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা কঠিন। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও সেই দিকে ইঙ্গিত করে বললেন, ‘‘আলোচনা চলছে। কিন্তু চিনকে নিয়ে আগাম কোনও মন্তব্য করা যাবে না।’’ আলোচনার বিষয়বস্তু ‘গোপনীয়’বলেও মন্তব্য করেছেন বিদেশমন্ত্রী।

১৪ জুন গালওয়ান উপত্যকায় সেনা সংঘর্ষের পর সামরিক ও কূটনৈতিক স্তরে আলোচনার পর পূর্ব লাদাখে স্থিতাবস্থা ফেরাতে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) থেকে সেনা সরাতে একমত হয়েছিল নয়াদিল্লি-বেজিং। সামরিক ও কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা চলছিল। কিন্তু আলোচনার প্রক্রিয়ার মধ্যেই ৩০ অগস্ট থেকে ৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় কয়েক বার গুলি চালিয়েছে চিনা বাহিনী। মস্কোয় ভারত-চিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী স্তরের বৈঠকেও সমঝোতার বার্তা ছিল। তারপরেও লাদাখ নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছে চিন। ভারতও তার জবাব দিয়েছে।

এই পরিস্থতিতে বুধবার সপ্তম দফা সামরিক স্তরে বৈঠক হয়েছে। পরের দিন ব্লুমবার্গ ইন্ডিয়া ইকনমিক ফোরামে বুধবারের বৈঠক নিয়ে মন্তব্যই করতে চাইলেন না জয়শঙ্কর। বিদেশমন্ত্রী শুধু বলেন, ‘‘আলোচনা চলছে। ওয়ার্ক ইন প্রগ্রেস। আমার প্রথম নীতি হল, যেটা এখনও চলছে, তা নিয়ে আগাম মন্তব্য না করা।’’ তার পরেও এ নিয়ে জোরাজুরি করায় তিনি বলেন, ‘‘নয়াদিল্লি ও বেজিংয়ের মধ্যে এমন কিছু আলোচনা চলছে, যা গোপনীয়। দেখা যাক, এটা কী ভাবে কাজ করে।’’

আরও পড়ুন: এক বছরে ৩৬ লক্ষ টাকার সম্পত্তি বেড়েছে মোদীর, কমেছে শাহের

সীমান্তে আগ্রাসনের পাশাপাশি মাঝে মধ্যেই লাদাখ নিয়ে গরম গরম বিবৃতি দিতেও অভ্যস্ত বেজিং। গত বছরের অগস্টে জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখকে আলাদা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করে সেই অনুযায়ী সংবিধান সংশোধন করেছে নয়াদিল্লি। সেই পদক্ষেপে গোড়া থেকেই আপত্তি তুলেছে শি চিনফিং সরকার। কয়েক দিন আগে তারা আবার হুঙ্কার ছেড়েছে, ‘‘লাদাখকে বেআইনি ভাবে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করেছে ভারত।’’ পাল্টা নয়াদিল্লিও জানিয়ে দিয়েছে, ‘‘লাদাখ ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল আছে এবং থাকবে। ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে চিনের মতপ্রকাশের কোনও অধিকার নেই।’’

আরও পড়ুন: কোভিড আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রাজ্যের নিরাপত্তা অধিকর্তা, উদ্বেগ

সূতরাং আলোচনায় বোঝাপড়া বা ঐকমত্যে পৌঁছলেই যে চিনের উস্কানিমূলক বিবৃতি বা আগ্রাসন থেমে যাবে, বেজিংয়ের উপর তেমন আস্থা ভারতের নেই। এমনকি, দ্বিপাক্ষিক স্তরে আলোচনা প্রক্রিয়ার মধ্যেও যে পরিস্থিতি ফের বিগড়োতে পারে, নয়াদিল্লি তা বিলক্ষণ জানে। গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষের পর জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্ট অজিত ডোভালের সঙ্গে চিনা বিদেশমন্ত্রীর বৈঠকে সেনা সরানোর সিদ্ধান্ত হলেও এখনও ৪ মে-র আগের স্থিতাবস্থা ফেরেনি। বারবার চিনের তরফে এমন প্রতিশ্রুতিভঙ্গ এবং পারষ্পরিক অবিশ্বাসের বাতাবরণের কারণেই জয়শঙ্কর আগাম কোনও মন্তব্য করতে চাননি বলে মত কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

India China Ladakh LAC S Jaishankar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE