রাহুল গাঁধী এবং তেজস্বী যাদব। ফাইল চিত্র।
দেশ জুড়ে বিজেপি বিরোধী জোটকে নেতৃত্ব দিতে সেরা বিকল্প কংগ্রেসই। সারা দেশে সাংগঠনিক উপস্থিতির পাশাপাশি বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ ছোড়ার মতো অভিজ্ঞতা কংগ্রেসেরই আছে। রবিবার সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য করলেন বিহারের প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রীয় জনতা দল নেতা তেজস্বী যাদব। যদিও এই নেতৃত্ব দিতে হলে কংগ্রেসকে দরাজ হওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন আঞ্চলিক দলকে সঙ্গে নিয়ে চলতে হবে, এই বার্তাও দিয়েছেন লালুপ্রসাদ যাদবের রাজনৈতিক উত্তরসূরি।
গত কয়েক দিন ধরেই সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব এবং বহুজন সমাজ পার্টির মায়াবতীর সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠক করেছেন তেজস্বী। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, উত্তরপ্রদেশে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে সপা-বসপা জোট হলেও সেই জোটের বাইরেই রাখা হয়েছে কংগ্রেসকে। রাজনৈতিক মহলের একটা অংশের বক্তব্য ছিল, বিহারেও সেই মডেলে হাঁটতে পারে আরজেডি। কংগ্রেসকে সেই বার্তা দিতেই ঘনঘন মায়া-অখিলেশের সঙ্গে বৈঠক, জল্পনা ছিল এমনই। রবিবার তেজস্বী অবশ্য সাফ জানিয়ে দিলেন, মায়া-অখিলেশের সঙ্গে এই সাক্ষাৎ নেহাতই সৌজন্যমূলক। একই সঙ্গে বললেন, সারা দেশে বিজেপি বিরোধী জোটকে নেতৃত্ব দিতে কংগ্রেসই তাঁর কাছে সেরা বিকল্প।
তেজস্বী যাদবের বক্তব্য, ‘‘ নির্বাচনের আগে জোট তৈরিতে কংগ্রেস নেতৃত্ব দিলে আমি আপত্তির কিছু দেখছি না। কিন্তু ওদেরকেও বিভিন্ন রাজ্যের বাস্তবতা বুঝতে হবে।’’ তেজস্বীর দাবি, এই মুহূর্তে বিজেপি বাদ দিলে আসন সংখ্যার নিরিখে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল কংগ্রেসই। পাশাপাশি সারা দেশ জুড়ে সংগঠন থাকাও কংগ্রেসকে বিজেপি বিরোধী লড়াইতে নেতৃত্ব দেওয়ার জায়গায় রাখছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ব্রিগেডের জের! বিহারি বাবুকে বহিষ্কারের পথে এগোচ্ছে বিজেপি?
পাশাপাশি যে সব রাজ্যে কংগ্রেসের জনভিত্তি নেই, সেখানে বিজেপি বিরোধী ভোট কাটাকুটি রুখতে আঞ্চলিক দলগুলিকেই কংগ্রেসের জায়গা ছেড়ে উচিত বলে জানিয়েছেন তেজস্বী। তাহলে বিহারে জোট সমীকরণ কী দাঁড়াতে পারে, এই প্রশ্নের সরাসরি উত্তর না দিলেও তেজস্বী জানিয়েছেন, ‘‘ কত জন বিধায়ক, সেটা বড় কথা নয়। ক্ষমতায় কে আছে, সেটাও বড় কথা নয়। আসল কথা হল, এই মুহূর্তে বিহারের সব থেকে বড় রাজনৈতিক দল আরজেডি। আরজেডিকে ভয় পাওয়ার কারণেই এখন বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে নীতীশ কুমার। তাই বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ের নেতৃত্ব থাকবে আরজেডি-র হাতেই। ’’ প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে ২৪৩ আসনের বিহার বিধানসভায় নীতীশ কুমারের জনতা দল (ইউনাইটেড)-এর ৬৯টি আসন, বিজেপির দখলে আছে ৫৩টি আসন। অন্যদিকে কংগ্রেসের দখলে আছে ২৭টি আসন এবং আরজেডি-র হাতে আছে ৭৯টি আসন।
সমাজবাদী পার্টি এবং বহুজন সমাজ পার্টিকে বিহারে আসন দেওয়া হবে কিনা, সেই প্রশ্নের উত্তরে তেজস্বী জানিয়েছেন, ‘‘ কেউ জোটের অংশ বোঝাতে হলে আসন দেওয়াটাই বড় কথা নয়। সব সময় আসনরফার মধ্যে দিয়েই জোট নির্ধারিত হয় না। অনেক সময় নিঃশর্ত সমর্থনও ভোটারদের কাছে সঠিক বার্তা পৌঁছে দেয়।’’
আরও পড়ুন: ‘হাও ইজ দ্য জোশ?’, মোদী প্রশ্ন ছুড়তেই পাল্টা এল ‘হাই স্যর’!
শনিবারই কলকাতায় বিজেপি বিরোধী মহাজোটের লক্ষ্যে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ ইউনাইটেড ইন্ডিয়া’ সমাবেশে অংশ নিয়েছিল সারা দেশের অধিকাংশ বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলই। কংগ্রেস প্রতিনিধি মল্লিকার্জুন খড়গের সঙ্গে এই সমাবেশে আরজেডির প্রতিনিধি হিসেবে হাজির ছিলেন তেজস্বী যাদবও। দুর্নীতির দায়ে এখন জেলবন্দি লালুপ্রসাদ। সেই কারণে আরজেডির দায়িত্ব এখন তাঁর ২৯ বছরের ছেলে তেজস্বীর হাতেই।
(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরা বাংলা খবর পেতে পড়ুন আমাদের দেশ বিভাগ।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy