ছবি: পিটিআই।
তিন বছর আগে সনিয়া ও রাহুল গাঁধী সমর্থন দিতে রাজি ছিলেন। কিন্তু দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিকে আর রাজ্যসভায় পাঠাতে রাজি হয়নি সিপিএম। এ বার ইয়েচুরিকেই প্রার্থী হিসেবে ফিরিয়ে আনা হবে কি না, তার উপরেই নির্ভর করছে রাজ্যসভা ভোটে বামও কংগ্রেস জোটের সমীকরণ।
দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সংসদে মুখ হিসেবে ইয়েচুরিকেই চাইছে বঙ্গ সিপিএম। বিশেষত, সংসদের দুই কক্ষেই বাংলা থেকে কোনও বাম প্রতিনিধি নেই, স্বাধীনতার পরে প্রথম বার এই পরিস্থিতিতে ইয়েচুরির মতো নেতার প্রয়োজন আরও বেশি বলে মনে করছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। কংগ্রেস হাইকম্যান্ডও ইয়েচুরির জন্য সবুজ সঙ্কেত দিয়ে রেখেছে। কিন্তু তাঁর বদলে অন্য কাউকে সিপিএম প্রার্থী করলে কংগ্রেসের তরফে নিঃশর্ত সমর্থন নিশ্চিত নয়। প্রদেশ কংগ্রেসের মধ্যে থেকেও একাধিক প্রত্যাশী আসরে আছেন। এই জটিলতার কথা জানিয়েই ইয়েচুরির নামে দলের পলিটব্যুরোর সায় আদায় করতে তৎপর হচ্ছে আলিমুদ্দিন।
প্রাথমিক ভাবে সিপিএমের পলিটব্যুরোর একাংশের মতে, সাধারণ সম্পাদককে সংসদীয় দায়িত্বে রাখা দলের রেওয়াজ নয়। তাই বাংলা থেকেই অন্য কোনও নেতার নাম বেছে নেওয়া হোক। বঙ্গ সিপিএম নেতৃত্বের বড় অংশ আবার পাল্টা উদাহরণ দিচ্ছেন, ১৯৫৩ সালে জ্যোতি বসু বাংলায় অবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টির রাজ্য সম্পাদক হয়েছিলেন বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা থাকতে থাকতেই। বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র ২০১৫ সালে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের দায়িত্ব পান, ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটেও তাঁকে প্রার্থী করা হয়েছিল। তা হলে ইয়েচুরিকে রাজ্যসভায় ফের পাঠানো যাবে না কেন? দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের কথায়, ‘‘বিধানসভায় এখন যা অবস্থা, কংগ্রেসের সমর্থন ছাড়া বাম প্রার্থী জিততে পারবেন না। তা হলে সাংগঠনিক রীতির কথা বলে এমন কাউকে প্রার্থী করে লাভ কী, যাঁকে জিতিয়ে আনা যাবে না!’’
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের সফর থেকে কী পেলাম আমরা? আমেরিকাই বা কী পেল?
রাজ্যসভার পঞ্চম আসনে বামের সঙ্গে জোট না হলে তৃণমূল তাদের অতিরিক্ত (চার আসন জয়ের পরে) ভোট কাজে লাগিয়ে কংগ্রেসের কাউকে জিতিয়ে নিতে পারে, এমন অঙ্কের কথাও মাথায় রাখতে হচ্ছে সূর্যকান্ত মিশ্র, সোমেন মিত্রদের। ইয়েচুরির প্রার্থী-পদ নিয়ে টানাপড়েন আছে বুঝে প্রয়াত প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির ঘনিষ্ঠ এক ব্যবসায়ী ইতিমধ্যে সিপিএম নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন। এই গোটা পরিস্থিতির রিপোর্টই পলিটব্যুরোর কাছে পাঠাচ্ছে আলিমুদ্দিন। প্রসঙ্গত, আগামী ২৬ মার্চের রাজ্যসভা ভোটের জন্য মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ১৩ মার্চ।
এরই মধ্যে পুরভোটে জোটের প্রক্রিয়া অবশ্য জারি রয়েছে পুরোদস্তুর। কলকাতা জেলা সিপিএমের সম্পাদক কল্লোল মজুমদার, তরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়দের সঙ্গে মঙ্গলবারই এক প্রস্ত বৈঠক হয়েছে উত্তর, মধ্য, বড়বাজার, দক্ষিণ কলকাতা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা কংগ্রেসের তরফে অমিত ঘোষ, প্রশান্ত দত্ত, মহেশ শর্মা, মায়া ঘোষ, মানব মিত্রদের। কলকাতা পুরসভায় কম-বেশি ৫০টা ওয়ার্ড কংগ্রেস লড়তে পারে। তবে কোন ওয়ার্ডে কাদের প্রার্থী থাকবে, এই নিয়ে দাবি ও পাল্টা দাবি আছে। ঠিক হয়েছে, কলকাতা জেলা বামফ্রন্টে বৃহস্পতিবার আলোচনার পরে আবার কংগ্রেসের সঙ্গে বৈঠক হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy