—ফাইল চিত্র।
রাজ্যসভায় দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন জানিয়ে দিলেন, কোভিডের সঙ্গে লড়াই শেষ হতে এখনও ঢের দেরি। আর রাতে ‘ওয়ার্ল্ডোমিটার্স’-এর আন্তর্জাতিক সমীক্ষায় ভারতে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ লক্ষ পেরিয়ে গেল। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ দিন জানিয়েছেন, করোনা প্রতিরোধে এবং কোভিড আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে আয়ুর্বেদিক ওষুধের পরীক্ষামূলক প্রয়োগের কথাও ভাবা হচ্ছে।
পরপর কয়েক দিন দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৯৫ হাজার পেরোলেও আজ সেই সংখ্যাটা কিছুটা কমে হয়েছে ৮৩,৮০৯। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর ডিরেক্টর জেনারেল বলরাম ভার্গবের মতে, লকডাউনের জন্যই ভারতে সংক্রমণের লেখচিত্র বা মৃত্যুহার লাগামছাড়া হয়নি। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের রুটিন সাংবাদিক বৈঠকে ভার্গব আজ বলেন, ‘‘ইউরোপীয় দেশগুলি ও আমেরিকার দিকে তাকালে দেখা যাবে, সেখানে একটা সময়ে সংক্রমণ চরমে পৌঁছেছিল। ওই শীর্ষে ওঠার সময়টায় প্রচুর মৃত্যু ঘটেছিল, তা সে স্পেন, ব্রিটেন, সুইডেন বা জার্মানি— যে দেশই হোক না কেন। সৌভাগ্যবশত, এর থেকে আমরা শিক্ষা নিয়েছি। লেখচিত্র ঊর্ধ্বগামী হলেও তাকে বৈজ্ঞানিক উপায়ে নামিয়ে দেওয়া গিয়েছে। মার্চ, এপ্রিল এবং মে মাসের অত্যন্ত কার্যকরী লকডাউনের ফলেই এটা সম্ভব হয়েছে। ফলে সংক্রমণ সেই অর্থে বিরাট কোনও শীর্ষে পৌঁছয়নি।’’
কোভিড থেকে সেরে ওঠার পরেও ফের সংক্রমিত হওয়ার ঘটনা ইদানীং প্রকাশ্যে আসছে। ভার্গবের মতে, দ্বিতীয় বার সংক্রমণের বিষয়টি ‘খুব খুব বিরল’। তা ঘটতে পারে, যেমনটা দেখা গিয়েছে হংকংয়ে। তবে এ নিয়ে বেশি চিন্তার কিছু নেই। সম্প্রতি আইসিএমআরের সেরো সার্ভে-তে শতাংশের হিসেবে দেখা গিয়েছিল, মে মাসেই এ দেশের ৬৪ লক্ষ মানুষ করোনায় সংক্রমিত হয়েছিলেন। আজ ভার্গবের বক্তব্য, ওই সেরো সার্ভে অনেক পুরনো। নতুন সমীক্ষা চলছে। তার ফলাফল পেলে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি অনেকটাই স্পষ্ট হবে।
আরও পড়ুন: স্ত্রী করোনা পজিটিভ হয়ে আইডিতে, কোয়রান্টিনে সূর্যকান্ত মিশ্র
আরও পড়ুন: ৫০ লক্ষে ভারত, তবু লকডাউনের গুণগান
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণের বক্তব্য, ভারতে কোভিড থেকে সেরে উঠেছেন ৩৮.৫ লক্ষ মানুষ। জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য বলছে, সারা বিশ্বের মধ্যে ভারতেই সুস্থের সংখ্যা সর্বাধিক। এ দেশে সুস্থতার হার এখন ৭৮.২৮ শতাংশ। মোট সংক্রমিতের সংখ্যার মাত্র ২০ শতাংশ এখন অ্যাক্টিভ রোগী। তাঁদের ৬০ শতাংশ রয়েছেন পাঁচটি রাজ্যে— মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ ও তামিলনাড়ু। ১৪টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এখন অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা পাঁচ হাজারের কম। ভূষণ জানান, ভারতে প্রতি দশ লক্ষে সংক্রমিতের সংখ্যা ৩৫৭৩, বিশ্বে যে হার ৩৭০৪। ভারতে প্রতি দশ লক্ষে মৃত্যুহার ৫৮, বিশ্বে যা এখন ১১৮। দেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারেরর ঘাটতি নেই বলেও আশ্বস্ত করেছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন আজরাজ্যসভায় জানান, মাঝারি উপসর্গের এবং মৃদু উপসর্গ কিন্তু অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকা রোগীদের হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া রেমডেসিভিয়ার, টোসিলিজ়ুম্যাবও অ্যান্টিবডি সমৃদ্ধ প্লাজ়মা দেওয়া হচ্ছে গুরুতর অবস্থায় থাকা রোগীদের।করোনা প্রতিরোধের ক্ষেত্রে অশ্বগন্ধা ও মাঝারি আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে গুড়ুচি, পিপলি, যষ্টিমধু ও বিভিন্ন ভেষজ গাছগাছড়া মিলিয়ে তৈরি ওষুধের(আয়ুষ-৬৪) পরীক্ষামূলক প্রয়োগের কথা ভাবা হচ্ছে, জানান তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy