ছবি: এপি।
চতুর্থ দফা লকডাউনে রেড জ়োনেও আর্থিক কর্মকাণ্ড বাড়াতে রাজ্যগুলির প্রস্তাব অনুযায়ী কিছু ছাড় দেওয়ার কথা ভাবছে কেন্দ্র। তবে নিষেধাজ্ঞা বজায় থাকবে কন্টেনমেন্ট জ়োনে। দিল্লির সঙ্গে দেশের ১৫টি স্থানের রেল যোগাযোগ শুরুর পরে এ বার সীমিত সংখ্যায় হলেও বিমান পরিষেবা চালু করার কথা ভাবছে কেন্দ্র।
আগামিকাল তৃতীয় দফা লকডাউনের শেষ দিন। সোমবার থেকে শুরু হবে চতুর্থ দফা লকডাউন। সূত্রের মতে, অধিকাংশ রাজ্যই নিজেদের সুপারিশে লকডাউন ৩১ মে পর্যন্ত চালু রাখার পক্ষে সওয়াল করেছে। কিন্তু একই সঙ্গে যাতে আর্থিক কর্মকাণ্ড ধীরে ধীরে শুরু করা সম্ভব হয়, সে বিষয়টিও বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখতে বলা হয়েছে কেন্দ্রকে। দিল্লির পক্ষ থেকে জোড়-বিজোড় নীতি মেনে বাজার খোলার দাবি করা হয়েছে, তেমনই দফতরে পৌঁছনোর জন্য বাস-অটো, ই-রিকশার মতো গণ পরিবহণও দূরত্ববিধি মেনে চালানোর জন্য সওয়াল করা হয়েছে।
বাসের মতো গণপরিবহণ চালু করার পক্ষপাতী পশ্চিমবঙ্গও। পশ্চিমবঙ্গ ও ছত্তীসগঢ় সরকারের পক্ষ থেকে রেড-অরেঞ্জ ও গ্রিন জ়োনকে চিহ্নিত করার ক্ষমতা রাজ্য প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি করা হয়েছে। একই সঙ্গে রাজ্যের বকেয়া অর্থ মিটিয়ে দেওয়ার জন্য কেন্দ্রের কাছে দাবি পেশ করেছে পশ্চিমবঙ্গ। পঞ্জাব, তেলঙ্গানার মতো সরকার চাষবাসের বিষয়টি মাথায় রেখে গণপরিবহণে ছাড় চেয়েছে। কিন্তু বিহার, ওড়িশা কিংবা মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্য এই মুহূর্তে আন্তঃরাজ্য গণপরিবহণ চালু করার বিপক্ষে। শহর ও গ্রামীণ এলাকায় শিল্পতালুকগুলি চালু করার দাবি তুলছে কেরল। গুজরাত, পশ্চিমবঙ্গ-সহ একাধিক রাজ্য আর্থিক গতিবিধি পুরো দমে চালু করার পক্ষে রায় দিয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশীয় উড়ান পরিষেবা চালু কি ২০ বা ২১শে?
গুজরাতের উপমুখ্যমন্ত্রী নিতিন পটেলের কথায়, লকডাউনের সঙ্গে আর্থিক গতিবিধিও গুরুত্বপূর্ণ। এখন আর করোনার ভয়ে বাড়িতে বসে থাকা সম্ভব নয়। নিয়ম শিথিলের ইঙ্গিত দিয়েছেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পাও। তাঁর কথায়, ‘‘চতুর্থ দফায় পাঁচতারা হোটেল খুলবে না, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই নিয়ম শিথিল করা হবে বলে আশা রাখছি।’’ তবে আর এক বিজেপিশাসিত রাজ্য অসম গোটা মে মাসই কড়া ভাবে লকডাইন পালনের পক্ষে সওয়াল করেছে।
আরও পড়ুন: নগদবিহীন সংস্কারে খুশি নয় শিল্পমহল
কেন্দ্রও বুঝতে পারছে, অর্থনৈতিক গতিবিধিতে প্রাণ সঞ্চার করতে হলে গণপরিবহণে ছাড় দিতেই হবে। সে ক্ষেত্রে রেড জ়োনগুলিতে কী ভাবে সামাজিক দূরত্ব মেনে গণপরিবহণ চালানো যায়, তার চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরিতেই ব্যস্ত রয়েছে কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই চালু হয়েছে বিশেষ ট্রেন পরিষেবা। ট্রেনের মতোই সীমিত সংখ্যায় গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলির মধ্যে বিমান পরিষেবা শুরু করা যায় কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সূত্রের খবর, সব ঠিক থাকলে আগামী সপ্তাহ থেকে চালু হতে পারে বিমান পরিষেবা। সেই মোতাবেক প্রস্তুতি শুরু হয়েছে বিমানবন্দরগুলিতেও।
তৃতীয় দফা লকডাউনের একেবারে শেষ পর্বে দফায় দফায় সড়ক দুর্ঘটনায় শ্রমিকদের মৃত্যুর পর যাতায়াতে নজরদারি রাখার জন্য দেশব্যাপী একটি অনলাইন ব্যবস্থা চালু করল কেন্দ্র। আজ রাতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভল্লা সমস্ত রাজ্যগুলিকে চিঠি লিখে জানান, দেশব্যাপী পরিযায়ী শ্রমিকদের সুষ্ঠু যাতায়াত ও পর্যবেক্ষণের জন্য ‘ন্যাশনাল মাইগ্র্যান্ট ইনফরমেশন সিস্টেম’ নামে একটি অনলাইন পোর্টাল চালু করেছে কেন্দ্র। কোন রাজ্য থেকে কত শ্রমিক কোন রাজ্যের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন, সে বিষয়ে তথ্য দেওয়ার জন্য রাজ্যগুলিকে অনুরোধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এর ফলে আগামী দিনে গোটা দেশে পরিযায়ী শ্রমিকদের তথ্যভাণ্ডার গড়ে সম্ভব হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy