Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

এক দিনে সুস্থ ৬২ হাজারেরও বেশি আক্রান্ত, কিছুটা নিয়ন্ত্রণে সংক্রমণ হার

দেশে মোট করোনা আক্রান্ত হলেন ২৯,০৫,৮২৩ জন। বিশ্বে প্রথম স্থানে থাকা আমেরিকাতে মোট আক্রান্ত ৫৫ লক্ষ ও দ্বিতীয়তে থাকা ব্রাজিলে ৩৫ লক্ষ।

দেশের মোট আক্রান্ত ২৯ লক্ষ পেরিয়েছে। গ্রাফিক-শৌভিক দেবনাথ।

দেশের মোট আক্রান্ত ২৯ লক্ষ পেরিয়েছে। গ্রাফিক-শৌভিক দেবনাথ।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০২০ ১০:১৪
Share: Save:

দৈনিক নতুন সংক্রমণের নির্দিষ্ট গণ্ডিতে আবদ্ধ থাকা আশা জাগাচ্ছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার থেকে তা ফের কিছুটা বেড়েছে। যার জেরে দেশের মোট আক্রান্ত ২৯ লক্ষ পেরিয়েছে। দেশে করোনার জেরে মৃত্যুও ৫৪ হাজারের গণ্ডি ছাড়িয়ে গিয়েছে। তবুও এর মধ্যেই স্বস্তি দিচ্ছে সুস্থ হওয়ার পরিসংখ্যান। সংক্রমণ হার গতকালের থেকে বাড়লেও নয় শতাংশের নীচেই রয়েছে। গতকালের থেকে আজ দেশে এক লক্ষ কম করোনা পরীক্ষা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৬৮ হাজার ৮৯৮ জন নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। ওই সময়ের মধ্যে, আমেরিকা ও ব্রাজিলে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৪৪ হাজার ৩৯৬ ও ৪৫ হাজার ৩২৩ জন। অর্থাৎ এক দিনে আক্রান্ত বৃদ্ধির নিরিখে আমেরিকা ও ব্রাজিলের থেকে ভারতের এগিয়ে থাকার পরিসংখ্যান আজও অব্যাহত। এই বৃদ্ধির জেরে দেশে মোট করোনা আক্রান্ত হলেন ২৯ লক্ষ ৫ হাজার ৮২৩ জন। সেখানে বিশ্বে প্রথম স্থানে থাকা আমেরিকাতে মোট আক্রান্ত ৫৫ লক্ষ ৭৩ হাজার ও দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে ৩৫ লক্ষ।

প্রতি দিন যে সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা হচ্ছে, তার মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হচ্ছে ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার। গত এক সপ্তাহ ধরে এই হার রয়েছে নয় শতাংশের কম। যা বেশ স্বস্তিদায়ক। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সংক্রমণ হার ৮.৫৫ শতাংশ। অগস্টের শুরু থেকেই দেশে করোনা পরীক্ষাও অনেক বেশি সংখ্যায় হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষা হয়েছে ৮ লক্ষ ৫ হাজার ৯৮৫ জনের। যা গতকালের তুলনায় প্রায় এক লক্ষ কম।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

আক্রান্তের সংখ্যা যেমন রোজ বাড়ছে, তেমনই প্রচুর মানুষ সুস্থ হয়ে উঠছেন। দেশে কোভিড রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার পরিসংখ্যান শুরু থেকেই আশাব্যাঞ্জক। এখনও পর্যন্ত মোট ২১ লক্ষ ৫৮ হাজার ৯৪৬ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন। অর্থাৎ দেশে মোট আক্রান্তের প্রায় ৭৪ শতাংশই সুস্থ হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৬২ হাজার ২৮২ জন।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

স্পেন, ফ্রান্স, ইটালি, ব্রিটেনের মতো দেশকে পিছনে ফেলে, মৃত্যর নিরিখে বিশ্বের চতুর্থ স্থানে রয়েছে ভারত। যদিও দেশে মৃত্যুর হার ওই সব দেশগুলির তুলনায় ভারতে অনেকটাই কম। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে ৯৮৩ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট ৫৪ হাজার ৮৪৯ জনের প্রাণ কাড়ল করোনাভাইরাস। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মারা গিয়েছেন ২১ হাজার ৩৫৯ জন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে মোট মৃত আজ ৬ হাজার ২৩৯ জন। দেশের রাজধানীতে সেই সংখ্যাটা ৪ হাজার ২৫৭ জন। কর্নাটকেও মৃতের সংখ্যা দিল্লির থেকেও বেশি। অন্ধ্রপ্রদেশ (৩,০০১), গুজরাত (২,৮৫৩), উত্তরপ্রদেশ (২,৭৩৩), পশ্চিমবঙ্গ (২,৬৩৪) মৃত্যু তালিকায় উপরের দিকে রয়েছে। মধ্যপ্রদেশেও মোট মৃত্যু এক হাজার ছাড়িয়ে বেড়ে চলেছে। এর পর তালিকায় রয়েছে পঞ্জাব, রাজস্থান, তেলঙ্গানা, হরিয়ানা, জম্মু ও কাশ্মীর, বিহারে, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, উত্তরাখণ্ড, ছত্তীসগঢ়, গোয়া-র মতো রাজ্যগুলি।

কোভিডে আক্রান্ত ও মৃত্যু দু’টি তালিকাতেই শুরু থেকেই শীর্ষে মহারাষ্ট্র। সেখানে মোট আক্রান্ত ৬ লক্ষ ৪৩ হাজার। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে মোট আক্রান্ত সাড়ে তিন লক্ষ ছাড়িয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশেও মোট আক্রান্ত তিন লক্ষ পার করে রোজ উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। চতুর্থ স্থানে থাকা কর্নাটকে সংখ্যাটা প্রায় আ়ড়াই লক্ষ। এর পর রয়েছে উত্তরপ্রদেশ (১,৭২,৩৩৪) ও দিল্লি (১,৫৭,৩৫৪)। যদিও জুলাই থেকেই বেশ লাগাম পড়েছে রাজধানীর সংক্রমণ বৃদ্ধিতে। পশ্চিমবঙ্গ (১,২৯,১১৯) ও বিহারে (১,১৪,৯৪১) মোট আক্রান্ত এক লক্ষ পার করে বাড়ছে।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

তবে জুলাইয়ের তুলনায় অগস্টে, তেলঙ্গানাতে দৈনিক সংক্রমণ বৃদ্ধি কিছুটা কম হয়েছে। সেখানে মোট আক্রান্ত ৯৯ হাজার ৩৯১ জন। অসম, গুজরাতে মোট আক্রান্ত ৮০ হাজারের বেশি। ওড়িশা, রাজস্থানে সেটা ৭০ হাজার ছুঁইছুঁই। হরিয়ানা, কেরল, মধ্যপ্রদেশে মোট আক্রান্ত ৫০ হাজার ছুঁয়েছে। পঞ্জাব ও জম্ম ও কাশ্মীর ৩০ হাজারের ঘরে। ঝাড়খণ্ড, ছত্তীসগঢ়, উত্তরাখণ্ড, গোয়াতে মোট আক্রান্ত ৩০ হাজারের কম। ত্রিপুরা, মণিপুর, হিমাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড, অরুণাচল প্রদেশের মতো রাজ্যে মোট আক্রান্ত ১০ হাজারের কম।

পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক গড়ে তিন হাজার নতুন সংক্রমণ হচ্ছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ১৯৭ জনের দেহে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন ১ লক্ষ ২৯ হাজার ১১৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫৩ জনের। করোনার কবলে এ রাজ্যে এখনও অবধি প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজার ৬৩৪ জন।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Covid-19 Coronavirus in India
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE