গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
পর পর কয়েকটি ভিডিয়ো। তাতে আত্মহত্যার কথা বলছেন এক ব্যক্তি। সেই ভিডিয়ো পোস্ট করতেই পুলিশকে সতর্ক করে ফেসবুক। শেষমেশ দিল্লি, মুম্বই পুলিশ এবং ফেসবুকের তৎপরতায় প্রাণ বাঁচল ওই ব্যক্তির।
ফেসবুক সূত্রে জানানো হয়, রবিবার এক ব্যক্তির ওয়ালে পর পর কয়েকটি ভিডিয়ো পোস্ট হয়। সেই ভিডিয়োতে ওই ব্যক্তিকে চরম আর্থিক সঙ্কটের কথা বলতে শোনা যায়। এ পর্যন্ত ঠিক ছিল। কিন্তু পরে আরও একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন ওই ব্যক্তি। সেখানে তাঁকে বলতে শোনা যায়— "নিজের জীবন শেষ করে দিতে চলেছি।" এক মুহূর্ত দেরি না করে ওই ব্যক্তির ফোন নম্বর এবং অবস্থান চিহ্নিত করে দিল্লি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে ফেসবুক।
দিল্লি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার অন্বেষ রায় জানান, ফেসবুক থেকে বার্তা পাওয়ার পরই ওই ব্যক্তির খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়। ফোনের অবস্থান থেকে জানা যায়, ওই ব্যক্তি পূর্ব দিল্লির। সেখানে পুলিশের একটি দল পৌঁছে দেখেন ফোনটি এক জন মহিলার। এবং তিনি একদম ঠিক রয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, মহিলাকে জিজ্ঞাসা করে তারা জানতে পারে, যে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে ভিডিয়ো পোস্ট করা হয়েছে সেটা তাঁর স্বামীর। ওই মহিলা আরও জানান, দাম্পত্য কলহের জেরে গত দু’সপ্তাহ ধরে তাঁর স্বামী মুম্বইয়ে চলে গিয়েছেন। সেখানে তিনি একটি হোটেলে রান্নার কাজ করেন। তবে স্বামীর ফোন নম্বর এবং ঠিকানা কিছুই তিনি জানেন না বলে পুলিশকে জানান মহিলা।
মহিলার কাছ থেকে এইটুকু তথ্য পেয়েই মুম্বই পুলিশের ডিসি রেশমি করন্ডিকরের সঙ্গে যোগাযোগ করে দিল্লি পুলিশ। তত ক্ষণে বেশ কয়েক ঘণ্টা কেটে গিয়েছিল। রেশমি করন্ডিকর সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে বলেন, “দিল্লি পুলিশের কাছ থেকে ফোন পেয়েই ওই ব্যক্তির খোঁজে নেমে পড়ি আমরা। ওই ব্যক্তিকে খুঁজে বার করাই ছিল আমাদের কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ।”
আরও পড়ুন: সংক্রমণের হার ১৩ শতাংশ, দেশে মোট আক্রান্ত ২২ লক্ষ ছাড়াল
এর পরই মুম্বই পুলিশ ওই ব্যক্তির মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ছেলের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ ভিডিয়ো কলে যোগাযোগ করতে বলা হয়, যাতে ওই ব্যক্তির অবস্থানটা চিহ্নিত করা যায়। পুলিশ জানিয়েছে, হোয়াটসঅ্যাপ কল করতেই এক বার রিং হয়ে কেটে যাচ্ছিল ফোনটা। একটু পরেই ওই ব্যক্তি তাঁর মাকে ফোন করেন অন্য একটি নম্বর থেকে। সেই নম্বরের টাওয়ার লোকেশন চিহ্নিত করে শেষমেশ ওই ব্যক্তির হদিশ মেলে। তাঁকে বুঝিয়ে আত্মহত্যা থেকে নিরস্ত করা হয়।
কেন তিনি আত্মহত্যা করতে যাচ্ছিলেন? এ প্রসঙ্গে ওই ব্যক্তি পুলিশকে জানিয়েছেন, লকডাউনের জেরে কাজ চলে গিয়েছে। বাড়িতে স্ত্রী এবং ছোট একটা বাচ্চা রয়েছে। স্ত্রীর সঙ্গে ঝামেলা চলছে। এত কিছুর চাপ সহ্য করতে না পেরেই চরম পরিণতির পথে পা বাড়িয়েছিলেন। ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় পুলিশ ওই ব্যক্তিকে বুঝিয়ে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy